ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

ডিএমডি রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে ঢাকায় আনা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১ মার্চ ২০১৭

ডিএমডি রোগে আক্রান্ত দুই ভাইকে ঢাকায় আনা হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মরণব্যাধি ডিএমডি রোগে আক্রান্ত আমতলীর দুই সহোদরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হচ্ছে। ঢাকার ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানোর জন্য মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে লঞ্চে তুলে দিয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠে ‘ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে দু’ভাই শিপন ও সোলায়মান’ প্রতিবেদনটি চোখে পড়ে সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাদুল কাদের এবং স্বাস্থ্য বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল হেলথ সার্ভিসেস ডাঃ আবুল কালাম আজাদের। তারা এ দু’ভাইয়ের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক ড. বশিরুল আলম ও সিভিল সার্জন ডাঃ জসিম উদ্দিন হাওলাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের নির্দেশ মোতাবেক ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বরগুনা সিভিল সার্জন ডাঃ জসিম উদ্দিন ও আমতলী স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ মোঃ আবদুল মতিন ওই দু’ভাইয়ের খোঁজখবর নিতে তাদের গ্রামের বাড়ি কালীবাড়ি যান এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরামর্শ দেন। ১১ ফেব্রুয়ারি ওই দু’ভাইকে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় ‘বিরল রোগে আক্রান্ত দুই ভাই হাসপাতালে’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসে ওই প্রতিবেদন। প্রধান মন্ত্রী দু’সহোদরের উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ আদেশ বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য সচিব মোঃ শিরাজুল ইসলাম ওই সহোদরকে ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বরগুনার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের ফকু তালুকদারের চার পুত্র স্বপন, রিপন, শিপন ও সোলায়মান। স্বপনের বয়স যখন আট বছর তখন তার শরীরের পরিবর্তন দেখা দেয়। তার দু’পায়ের হাঁটু মোটা হয়ে আস্তে আস্তে হাত-পা শুকিয়ে রগ খিঁচুনি দিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে। তিনি তার সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েছেন কিন্তু কোন চিকিৎসাই কাজে আসছে না। ডাক্তাররা এ লক্ষণ দেখে রোগ শনাক্ত করতে পারছেন না। পঙ্গু অবস্থায় ৯ বছর বিছানায় থেকে ২০০৮ সালে স্বপন মারা যায়। এরপর ছোট ভাই রিপন ও শিপনের আট বছর হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে একই লক্ষণ দেখা দেয়। সন্তানদের বাঁচানোর জন্য বহু চিকিৎসক ও ওঝার কাছে ধর্ণা দিয়ে কোন কাজ হয়নি। ৮ বছর ধরে বিছানায় পড়ে থাকে শিপন ও রিপন। গত বছরের নবেম্বর মাসে একই অবস্থায় রিপন মারা যায়। বর্তমানে শিপন বিছানায় পড়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। দু’ছেলের মৃত্যু এবং দু’ছেলের এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় বাবা-মা দিশাহারা। কান্না যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। মঙ্গলবার দুপুরে দু’সহোদরকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুশফিকুর রহমান ও স্বাস্থ্য প্রশাসক মোঃ আবদুল মতিন লঞ্চে তুলে দিয়েছেন।
×