ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভুল অপারশনে প্রসুতির মৃত্যু ॥ বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভুল অপারশনে প্রসুতির মৃত্যু ॥ বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ ভুল অপারেশনে প্রসুতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার কেশবপুরে নিহতের স্বজনসহ এলাকার শত শত নারী পুরুষ ক্লিনিক বন্ধ ও ক্লিনিক মালিক কতিথ ডাক্তার আব্দুল মান্নানের বিচারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে ক্লিনিকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছে। অভিযোগে জানা গেছে, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের আলতাপোল গ্রামের রাশিদুল ইসলাম লিটন তার স্ত্রী লাকি আক্তারকে (২৪) সিজার করার জন্য গত বুধবার কেশবপুরের প্যারাডাইস ক্লিনিকে ভর্তি করায়। ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বাবু খুলনা থেকে বিশেষজ্ঞ বড় সার্জন এনে সিজার করাবে বলে ১৫ হাজার টাকা চুক্তি করে লাকি আক্তারকে ভর্তি করে। অথচ বুধবার বিকেলে ক্লিনিকের মালিক ভুয়া ডাক্তার আব্দুল মান্নান, ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বাবু ও ক্লিনিকের শ্রমিক মুনছুর আলী মিলে সিজার করে লাকি আক্তারের পুত্র সন্তান বের করে। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার হেদায়েতুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে ক্লিনিকের নার্স তানজিলা ইয়াসমিন জানায়। নিহতের স্বামী জানান, হেলপার মুনছুর অপারেশন করে এবং কতিথ ডাক্তার মান্নান ও ডাক্তার হেদায়েতুল ইসলাম দাড়িয়ে ছিলো। ভুল অপারেশনের সময় তারা তার স্ত্রীর জরায়ু ও পিত্তথলীর নাড়ী কেটে ফেলে। সিজারের পর থেকে প্রচুর রক্ত ক্ষরন হতে থাকে। এক পর্যায়ে রোগির পেট ফুলে উঠে এবং তীব্র যন্ত্রনা শুরু হয়। গভীর রাতে হেলপার মুনছুর এসে রোগির নাকে নল ঢুকায়। ভোররাতে রোগির অবস্থা অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে আবারও অপারেশন করে গজ এবং জমাটবাধা রক্ত বের করে ডাক্তাররা বোর্ড করে জানান, রোগির অবস্থা খুবই খারাপ। এরপর লাইফ সাপটে ঢাকা এ্যাপলো হাসপাতা নিয়ে গেলে তারা রোগির অবস্থা খুব খারাপ মন্তব্য করে ফেরত দেয়। সেখান থেকে আবারও খুলনা গাজী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাকি আক্তার সোমবার সন্ধ্যায় মারা যায়। ঘটনার পর থেকে ক্লিনিকের মালিক, ম্যানেজার পালিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ রায়হান কবির জানান, মান সম্মত না হওয়া এক বছর আগে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে প্যারাডাইস ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে সিভিল সার্জন আবার অনুমতি প্রদান করে। নিহত লাকি আক্তারের ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজন ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
×