ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারে দীর্ঘসূত্রতায় কারাবন্দী আরও ৩ জনের জামিন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিচারে দীর্ঘসূত্রতায় কারাবন্দী আরও ৩ জনের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পৃথক মামলায় দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক থাকা তিন বন্দীকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। এক আসামিকে থানা হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল থানার সার্কেল এএসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার হাফিজুর রহমান বিজয়ের পরিবারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১২ বছরের এক শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় আইনগত কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ দেয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পৃথক মামলায় দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক থাকা তিন বন্দীকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া তিনজন হলেন মোঃ দানা মিয়া, আসাদুল ওরফে আছা ও সাজু মিয়া। পাশাপাশি তিন মাসের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই তিনজন জামিনে থাকবেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তাদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস। এএসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ ॥ এক আসামিকে থানা হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল থানার সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার হাফিজুর রহমান বিজয়ের পরিবারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে হাজির হয়ে সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম ও ওই থানার ওসি আজম খান ফারুকী ব্যাখ্যা দাখিল করেন। এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওসির পক্ষে এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, এএসপির পক্ষে এ্যাডভোকেট শ. ম রেজাউল করিম শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু। আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, এ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন। এছাড়া নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে ১৯ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আর সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম ও ওই থানার ওসি আজম খান ফারুকীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে ॥ রাজশাহীর পটিয়া উপজেলার বারোইপাড়া গ্রামের ১২ বছরের শিশু নাজমুল হককে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) ও পটিয়া থানার ওসিকে সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ নির্দেশ দেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবেধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। সরকারের সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নাজমুল বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করত। গাড়ির অনবোর্ড সিডির তার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে। এরপর তার মাথার চুল কামিয়ে, মুখে পোড়া মবিল মাখিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। কিন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। এ নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি একটি ইংরেজী জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ অবস্থায় এ প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন সুপ্রীমকোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান ও ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মীর হেলালউদ্দিন ও ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেয়। আদালত আগামী ৭ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।
×