ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি

সামুদ্রিক মৎস্য আইনের খসড়ায় মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সামুদ্রিক মৎস্য আইনের খসড়ায় মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশে বিভিন্ন অপরাধের জন্য জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে তা আইনে রূপান্তর করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০১৭’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্রকে ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করতে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন ২০১৭’ এর খসড়া, ‘জাতীয় যুব নীতি ২০১৭’ এবং বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বৈত কর আরোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৮৩ সালে ‘দি মেরিন ফিসারিজ অর্ডিনেন্স’ করা হয়েছিল। সামরিক শাসনামলে জারি হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সেটি বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে তিনটি নতুন ধারা যোগ করে শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। তিনি জানান, কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা দিলে, ইচ্ছাকৃতভাবে মৎস্য আহরণের নৌযানের ক্ষতি করলে, লাইসেন্সের শর্ত ভাঙ্গলে এবং অপরাধের প্রমাণ ধ্বংস করলে তিন বছরের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ের বিধান ছিল অধ্যাদেশে। প্রস্তাবিত আইনে এসব অপরাধের জন্য সাজা তিন বছর রাখা হলেও জরিমানার পরিমাণ এক লাখ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। নৌযান চিহ্নিতকরণে ব্যর্থতা, অর্থাৎ কেউ যদি বাংলাদেশের মৎস্য জলসীমায় মাছ ধরার নৌযান পরিচালনা করেন এবং তা নির্ধারিত নিয়মে মার্কিং না করেন, তার জরিমানা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়। এছাড়া নৌযানে থাকা ব্যক্তিদের অপরাধের জন্য ওই নৌযানের অধিনায়ককে দায়ী করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ অপরাধে জরিমানার পরিমাণ পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগের অধ্যাদেশ অনুযায়ী জরিমানার এক দশমাংশ টাকা দিয়ে আপোসের জন্য বৈঠকে বসা যেত। প্রস্তাবিত আইন পাস হলে আপোস বৈঠকের আগে জরিমানার এক পঞ্চমাংশ দিতে হবে। শেখ হাসিনা জাতীয় যুবকেন্দ্র হবে ইনস্টিটিউট ॥ শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্রকে ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করতে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন ২০১৭’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে ১৯৯৮ সাল থেকে। প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে এই কেন্দ্রকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আইনের খসড়া অনুযায়ী, এই ইনস্টিটিউটের একটি নির্বাহী কাউন্সিল থাকবে, যার প্রধান হবেন যুব ও ক্রীড়া সচিব। ১৮ ক্যাটাগরির সদস্য এই নির্বাহী কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে থাকবেন। নির্বাহী কাউন্সিলে মনোনীত সদস্যদের তিন বছরের জন্য মনোনয়ন দেয়া হবে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, নির্বাহী কাউন্সিলকে বছরের কমপক্ষে দুইবার সভা করতে হবে। যুবদের মানব সম্পদে রূপান্তরে প্রশিক্ষণ ও কারিকুলাম প্রণয়ন করা, যুবকর্মের ওপর উচ্চতর গবেষণা ও মূল্যায়ন, ডিপ্লোমা ও ডিগ্রী দেয়া, যুবকদের বিষয় নিয়ে একটি তথ্যভা-ার গড়ে তোলা, প্রশিক্ষণ ও যুব বিষয়ক নীতি প্রণয়ন করবে এই ইনস্টিটিউট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইনস্টিটিউট গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স ও ডিপ্লোমা সনদ দিতে পারবে। সরকারের অনুমোদন নিয়ে ইউজিসির সুপারিশ, পরামর্শ ও নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী এসব ডিগ্রী দিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের কোর্স পরিচালনার জন্য এ প্রতিষ্ঠানে একটি এ্যাকাডেমিক কাউন্সিল থাকবে, যার প্রধান হবেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক। জাতীয় যুবনীতি অনুমোদন ॥ সোমবারের বৈঠকে ‘জাতীয় যুব নীতি ২০১৭’ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। সবশেষ যুবনীতি ২০০৩ সালের প্রণীত হয়েছিল জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, এরপর ১৪ বছর পার হয়ে গেছে, এজন্য আগেরগুলো ঠিক রেখে একটু আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তিনি জানান, নতুন যুবনীতিতেও যুবদের বয়স আগের মতো ১৮ থেকে ৩৫ বছর রাখা হয়েছে। দুই চুক্তির খসড়া অনুমোদন ॥ বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বৈত কর আরোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। শফিউল আলম বলেন, বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল এই চার দেশের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় ভুটানের সঙ্গে অনেক বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। সেখানে বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য দুই দেশ মিলে দ্বৈত করারোপণ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যেও একই বিষয়ে আরেকটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এই চুক্তি করতে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রক্রিয়া চলছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক সভার পরে দুই দেশের সম্মতিতে এই চুক্তিপত্র তৈরি করা হয়েছে। কসোভোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিচ্ছে বাংলাদেশ ॥ রিপাবলিক অব কসোভোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ের সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ কর্তৃক রিপাবলিক অব কসোভোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব বৈঠকে উপস্থাপন করে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ পর্যন্ত ১১৩টি দেশ কসোভোকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ওআইসি’র ৫৭টি দেশের মধ্যে ৩৬টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। মন্ত্রিসভা দেশটিকে স্বীকৃতি প্রদানে সম্মতি দিয়েছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর স্বীকৃতি দিতে এখন প্রক্রিয়া কী- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জানিয়ে দেয়া হবে। সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
×