ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বারির সেমিনারে বিজ্ঞানীরা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গমে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়েছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গমে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গমের ব্লাস্ট রোগের ওপর এক সেমিনার সোমবার গাজীপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান সমিতি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে গমে ব্লাস্ট রোগ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক এ সেমিনারে বারির মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ড. আবুল কালাম আযাদ বলেন, গত বছর থেকে গমের ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ বছরও এ রোগটির আক্রমণ দেখা গেছে। গমের ব্লাস্ট রোগের কারণ ম্যাগনাপোর্থি ওরিযাই প্যাথোটাইপ ট্রি-টিকাম প্যাথোজেনের ইতিহাস খুব বেশি পুরাতন নয়। ১৯৮৫ সালে সর্বপ্রথম ব্রাজিলে দেখা যায় এবং পরবর্তীতে তা দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের ছত্রাক আমাদের দেশে কিভাবে এসেছে তার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা নেই। বাস্তবতা হলো, এশিয়ার মধ্যে আমাদের দেশেই প্রথম গত বছর গমের এ রোগটি দেখা দেয়। এ রোগের প্যাথোজেন চুপ করে বসে থাকে না, সে সুযোগ খোঁজে ফসলকে আক্রমণ করার জন্য। আমরা উদ্ভিদ রোগতত্ত্ববিদগণও বসে থাকতে পারি না। আমাদের নতুন নতুন রোগ দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা ও সম্প্রসারণ করার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি ও ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারির দিনাজপুরের গম গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরিতোষ কুমার মালাকার। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল মনসুর। সেমিনারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে বিজ্ঞানীরা জানান, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলায় এ রোগের আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়, যা মোট গম আবাদি জমির প্রায় তিন শতাংশ। আক্রান্ত গমক্ষেতের ফলন শতকরা ২৫-৩০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। এ রোগ দমনের জন্য প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে ৬ (ছয়) গ্রাম নাটিভো ৭৫ ডব্লিউজি অথবা নভিটা ৭৫ ডব্লিউজি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করলে গমের পাতা ঝলসানো রোগ, বীজের কালো দাগ রোগ এবং মরিচা রোগ ইত্যাদিও দমন হবে।
×