ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারের ২৪ কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার আশঙ্কা

থমকে গেছে বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

থমকে গেছে বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণ

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ লঞ্চ মালিক সমিতির আপত্তির মুখে গত এক বছর ধরে জেলার কড়াইতলা নদীর ওপর বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এলজিইডির প্রকৌশলীদের অদক্ষতা ও লঞ্চ মালিক সমিতির সঙ্গে চরম বিরোধের ফলে সরকারের ২৪ কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। পাশাপাশি অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে সেতু নির্মাণের কাজ। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কীর্তনখোলা নদীর পূর্ব তীরের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণে প্রথম পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তিন বছরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার কথাছিলো। সে অনুযায়ী সেতুর পাইলিংসহ দুই পাশের নির্মাণকাজ দুই বছরের আগেই সম্পন্ন করা হয়। নদীর মাঝ বরাবরের সেতুর মূল অংশটির নির্মাণকাজ শুরু করার পূর্বে ঠিকাদার সেখানে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার জন্য একটি নোটিস ঝুলিয়ে দেয়ার পরই লঞ্চ মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। মালিকদের অভিযোগ, সেতুর উচ্চতা কম হওয়ায় নদী দিয়ে বরিশাল-ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জ, লালমোহন, বাউফল, কালাইয়া, কালিশুরী ও নাজিরপুরসহ বিভিন্ন রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। লঞ্চ মালিকরা নির্মাণকাজের জন্য নদীতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ না করে পার্শ¦বর্তী স্থানে একটি চ্যানেল তৈরি করে দেয়ার দাবি করেন। এলজিইডির ঠিকাদার এতে সম্মত না হওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এমএল টাইপের লঞ্চ চলাচলের জন্য ৭ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতার সেতু নির্মাণের জন্য বিআইডব্লিউটিএ সুপারিশ করেছিল। বাস্তবে ৮ মিটার উচ্চতায় সেতুর নির্মাণকাজ করা হয়েছে। কিন্তু ওই নদী দিয়ে এমএল টাইপের চেয়ে বড় ৫-৭টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের কারণে লঞ্চ মালিকরা আপত্তি তোলেন। বিআইডব্লিউটিএ তখন এলজিইডিকে সেতুর উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু সেতুর নির্মাণকাজ অর্ধেকের বেশি শেষ হওয়ায় আর উচ্চতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিশ্বাসেরহাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। আরও জানা গেছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে ঠিকাদার আর নির্মাণকাজ শুরু করেননি। সেতুর নির্মাণকাজ এক বছর বন্ধ থাকার পর এলজিইডি বিভাগ থেকে নতুন করে আরও চার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর পরেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়া তো দূরের কথা, পুনরায় কাজ শুরু হওয়ার দিনক্ষণই নির্ধারণ হয়নি। এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন খান জানান, নতুন করে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার কাজ সম্পন্ন করতে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে।
×