ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেসি-রোনাল্ডোর মাইলফলক, স্বস্তির জয় বার্সা-রিয়ালের

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মেসি-রোনাল্ডোর মাইলফলক, স্বস্তির জয় বার্সা-রিয়ালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়ের দুই সেরা তারকা লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো রবিবার রাতটি ভালই কাটিয়েছেন। দু’জনই নিজ নিজ দলের গুরুত্বপূর্ণ জয়ে অবদান রেখেছেন। দু’জনই নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। মেসি বার্সার হয়ে ৪০০তম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন। আর রোনাল্ডো গড়েছেন পেনাল্টি থেকে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড। প্রথমে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছিল বার্সিলোনা। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে শিরোপা রেসে ভালভাবেই আছে কাতালানরা। পরের ম্যাচে ভিয়ারিয়ালের মাঠে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দারুণ এই জয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য হারানো শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। ২৩ ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহ সর্বোচ্চ ৫৫ পয়েন্ট। এক ম্যাচ বেশি খেলা বার্সার ভা-ারে জমা ৫৪ পয়েন্ট। ৫২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে সেভিয়া। লা লিগায় বার্সিলোনার প্রতিপক্ষ বলতে কেবল রিয়াল মাদ্রিদ ও এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দু’দলের মধ্যে এ্যাটলেটিকোকেই বেশি পছন্দ মেসির। এই দলটির বিপক্ষে ২২ সাক্ষাতে গুনে গুনে ২২ গোল করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল ও সেভিয়ার বিপক্ষে ২১ গোল করেছেন। ২০০৩ সালে পোর্তোর বিপক্ষে অভিষেক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বার্সার জার্সি গায়ে ৫৬৬ ম্যাচ খেলেছেন মেসি। রবিবার এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারানোর ম্যাচে ক্লাবের জার্সি গায়ে ৪০০তম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছেন মেসি। এর মধ্যে লা লিগায় ৩৬৯ ম্যাচ খেলে মেসি জিতেছেন ২৭৭ ম্যাচে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ১১২ ম্যাচ খেলে জিতেছেন ৬৬ ম্যাচে। ৬১ কোপা ডেল রের ম্যাচ খেলে ৪২টিতে জিতেছেন। ৪০০ জয়ের পাশাপাশি মেসি ১০২টি ড্রয়ের বিপরীতে হারের তেতো স্বাদ পেয়েছেন ৬৪ ম্যাচে। এ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে মেসি ছাড়াও বার্সার অপর গোলদাতা রাফিনহা। স্বাগতিকদের একমাত্র গোলদাতা দিয়াগো গডিন। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে ম্যাচের প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কোন দল। বিরতির পর ৬৪ মিনিটে সুয়ারেজের বাড়ানো বলে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে নেন রাফিনহা। ৭০ মিনিটে হেড থেকে গোল করে এ্যাটলেটিকোকে সমতায় ফেরান গডিন। খেলা যখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সে সময় গোল করে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন মেসি। ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় লক্ষ্যভেদ করেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। চাপের মুখে থাকা বার্সিলোনা কোচ লুইস এনরিকে দলের কষ্টার্জিত জয়ে পুরো কৃতিত্বই দিয়েছেন মেসিকে। এ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে এটি মেসির ২৭ নম্বর ক্যারিয়ার গোল। এর মধ্যে লা লিগায় ২২টি। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ বলেন, এই ধরনের পিচে বল পাস করাটা দারুণ কঠিন। কিন্তু আমি মনে করি দুটি গোলই আমাদের পক্ষে গেছে। আরেক ম্যাচে বড় বাঁচা বেঁচে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ছয় মিনিটের ঝড়ে টালমাটাল হয়ে পড়ে রিয়াল শিবির। তবে রোনাল্ডো, গ্যারেথ বেল ও আলভারো মোরাটার গোলে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে জিদান বাহিনী। ম্যাচের প্রথমার্ধটা ছিল গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটেই রিয়ালের জালে দুই গোল দিয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে স্বাগতিক ভিয়ারিয়াল। তবে ৬৪ মিনিটে বেল, ৭৪ মিনিটে রোনাল্ডো ও ৮৩ মিনিটে মোরাটার গোলে অসাধারণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি অতিথিরা। ফলে গোলশূন্যভাবে বিরতিতে যায় দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেতে পারত রিয়াল। কিন্তু রোনাল্ডো ও বেনজামার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান ভিলারিয়াল গোলরক্ষক। ৫০ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। দারুণ এক হাফ ভলিতে রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করেন মুনোস। এর ছয় মিনিট পর আবার গোল পায় ভিলারিয়াল। ব্রুনোর পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন বাকাম্বু। ৬১ মিনিটে রোনাল্ডোর শট গোল পোস্টে লেগে ফিরে এলে রিয়ালের হতাশা বাড়ে। তবে ৬৪ মিনিটে বেল গোল করার পর রিয়ালের ছন্দময় ফুটবলে কাবু হয় ভিয়ারিয়াল। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, পিছিয়ে থেকেও কিভাবে ম্যাচে ফিরে আসতে হয় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। যা কিছু হয়েছে তার থেকে তিন পয়েন্ট পাওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পেনাল্টিতে গোল করে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন রোনাল্ডো। লা লিগায় স্পট কিক ৫৭টি গোলের রেকর্ড এখন পর্তুগীজ তারকার। গত ১৫ জানুয়ারি সেভিয়ার বিপক্ষে মাদ্রিদের ২-১ গোলের হারের ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে কিংবদন্তি খেলোয়াড় হুগো সানচেজের ৫৬টি গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু পরশু রাতে পেনাল্টি থেকে গোল করে সানচেজকে ছাড়িয়ে যান সি আর সেভেন। মেসি এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন। পেনাল্টি থেকে তার গোলসংখ্যা ৪৩।
×