ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ও’কেফেকে যা বলেছিলেন শ্রীরাম

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ও’কেফেকে যা বলেছিলেন শ্রীরাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরে চার টেস্টের সিরিজে ১-০তে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। পুনেতে বিরাট কোহলির দল আসলে হেরেছে স্টিভ ও‘কেফের কাছে। ১২ উইকেট নিয়ে একাই স্বাগতিকদের ধসিয়ে দিয়েছেন আনকোড়া এই বাঁহাতি স্পিনার। অস্ট্রেলিয়া দলের স্পিন বোলিং পরামর্শক এখন শ্রীধরন শ্রীরাম, যিনি আবার ভারতীয়। অনেকেই বিষয়টিকে ‘ঘরের শত্রু বিভিষণ’ বলে আখ্যায়িত করছেন। শিষ্যকে কী এমন দীক্ষা দিলেন যে ও’কেফে বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনকে এভাবে নাচিয়ে ছাড়লেন? ‘আমি ওকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কেবল জায়গা মতো বল ফেলতে বলেছি। বাকিটা ইতিহাস। বড় কৃতিত্বটা আসলে ও’কেফেরই।’ বলেন শ্রীরাম। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে কিন্তু ও’কেফেকে আস্থার সঙ্গেই খেলছিল কোহলিরা। সে সময়ের ব্যাখ্যা দিয়ে শ্রীরাম বলেন,‘ বল হাতে ও নিজের স্বস্তির জায়গাতেই আটকে ছিল। সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সে যেভাবে বল করে। আমি তাকে বললাম, মাঝখানে বল ফেলতে। ও’কেফে বেশ স্নায়ুর চাপে ভুগছিল বলেই বসল, তার মনে হচ্ছে সে যদি বল করার সময় আমাকে পাশে পেত।’ শ্রীরাম তাকে প্রশ্ন করেন, ‘এই উইকেটে কীভাবে বল করতে হয়, সেটি তোমাকেই ভেবে বের করতে হবে। ও’কেফের উত্তর ছিল, ‘এখানে একটু বেশি এ্যাঙ্গেল ব্যবহার করতে হবে, বল করতে হবে একটু দ্রুততার সঙ্গে।’ আমি বললাম, এটাই তুমি প্রয়োগ করে দেখ।’ মধ্যাহ্ন বিরতির পর ও’কেফে মাঠে গিয়ে কী করেছে, তা তো সবারই জানা।’ দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭ রানে অলআউট ভারতের ৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন একাই। বোলিং বিশ্লেষণ ১৫-৪-৩৫-৬। প্রথম ইনিংসে ১৩.১-২-৩৫-৬। স্বাগিতকরা গুটিয়ে ১০৫ রানে। ভারতের মাটিতে কোন ভিনদেশী স্পিনারের এটিই সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে তার বলেই পরিষ্কার বোল্ড হয়ে যান সুপার কোহলি। শিষ্যের কীর্তিতে এক ম্যাচেই বিশ্ব ক্রিকেটে আগ্রহের কেন্দ্রে উঠে আসেন শ্রীরাম। প্রশ্ন ৪১ বছর বয়সী আসলে কে? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মোটেই পরিচিত নন। ২০০০-২০০৪ পর্যন্ত ভারতের হয়ে মাত্র ৮ ওয়ানডে খেলেছেন, ১৩৩ প্রথমশ্রেণীর ম্যাচে সাকল্যে ৮৫ উইকেট। বোলার হিসেবে আহমরি ছিলেন না। ক্যারিয়ারে বাঁহাতি স্পিন বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংটাই বরং ভাল করতেন। প্রায় ৫৩ গড়ে ৯ হাজার ৫৩৯ রান করেছেন প্রথম শ্রেণিতে। ৩২ সেঞ্চুরিও আছে। ব্যাটসম্যানরা কী চিন্তা করছেন, সেটি বুঝতে পারেন, এটাই তার বড় ক্ষমতা। ‘আমার মতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ছিল শ্রীর (শ্রীরাম)। ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে এসে চেন্নাইয়ে তার সঙ্গে কাজ করেছিলাম। তিনি স্থানীয় লোক, কন্ডিশনটা বোঝেন। তাই তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মধ্যাহ্নবিরতিতে তার সঙ্গে বোলিং করেছি। তিনি জানেন এমন কন্ডিশনে কীভাবে বল করতে হয়, ব্যাটসম্যানরা কী চিন্তা করছে। অন্য কোচিং স্টাফদের চেয়ে তার সাহায্য কাজে লেগেছে বেশি।’ বলেন পুনে জয়ের নায়ক ও’কেফে। ব্যাটে-বলে শ্রীরামের পরামর্শ কাজে লাগাতে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের ভারত সফরের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মূল দলে স্পিন-পরামর্শক হিসেবে ডাকা হয়েছিল তাকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ধবলধোলাই হলেও শ্রীরামের শিক্ষাটা ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দারুণভাবে কাজে লাগালেন অস্ট্রেলীয় স্পিনাররা।
×