ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোহলির দায় স্বীকার, উচ্ছ্বসিত স্মিথ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কোহলির দায় স্বীকার, উচ্ছ্বসিত স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পুনে টেস্টে কোহলিদের হারের পর ভারতের ওপর দিয়ে কার্যত ভূমিকম্প বয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেটে এমনটা হতেই পারে, তাই বলে আড়াই দিনে ৩৩৩ রানে হার? তাও আবার বিশ্বের এক নম্বর দলটির, যারা টানা ১৯ টেস্ট ও ৬ সিরিজে অপরাজেয়। গত এক যুগ ধরে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার যেখানে জয়হীন, সেখানে এমনটা কি করে ঘটল? সেটিই এখন আলোচনার বিষয়। নতুন ভেন্যুর (টেস্ট) পিচ নিয়ে কথা হচ্ছে, কথা হচ্ছে ঘূর্ণিবিষে স্বাগতিকদের নাকাল করা স্টিভ ও’কেফের প্রশিক্ষক সাবেক ভারতীয় শ্রীধরণ শ্রীরামকে নিয়েও। তবে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি, বলেছেন তারা মোটেই ভাল খেলতে পারেননি। অন্যদিকে প্রায় ১৩ বছরে ভারতের মাটিতে জয় পেয়ে উচ্ছ্বাসিত অসি সেনাপতি স্টিভেন স্মিথ। তবে সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ‘সত্যি বলতে এর কোন ব্যাখ্যা নেই। গত দুই বছরের মধ্যে এটিই আমাদের সবচেয়ে বাজে ব্যাটিং। অথচ এটা আমাদর গর্বের জায়গা ছিল। তবে মাথায় রাখতে হবে টানা ১৯ টেস্টে অপরাজিত থাকার পর এমন একটা ঘটনা ঘটল। এটা আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেরই অংশ।’ লজ্জার হারের পর বলেন স্বাগতিক অধিনায়ক কোহলি। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতাই ভারতকে ডুবিয়েছে। দুই ইনিংসে কোহলির দল অলআউট মাত্র ১০৫ ও ১০৭ রানে। যা হয়ত প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ানদের কাছেও অবিশ্বাস্য বলে মনে হবে। মাত্র পঞ্চম টেস্ট খেলতে নামা স্পিনার স্টিভ ও’কেফেকে মোকাবেলায় ব্যর্থ বিশ্বসেরা সব ব্যাটসম্যান। দুই ইনিংসে ম্যাচসেরা বাঁহাতির বোলিং বিশ্লেষণ ১৩.১-২-৩৫-৬ ও ১৫-৪-৩৫-৬। ভারতের মাটিতে কোন ভিনদেশী স্পিনারের এটিই সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে তার বলেই পরিষ্কার বোল্ড সুপার কোহলি, ‘ও’কেফের বলটা ঠিক বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম ঘুরবে, তাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎই স্ট্যাম্পে ঢুকে গেল।’ তবে পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াতে আত্মবিম্বাসী ভারত অধিনায়ক, ‘নিজেদের স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলে পরের টেস্টেই আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’ কোহলি যখন দায় স্বীকারে ব্যস্ত অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথ তখন উচ্ছ্বাসিত, ‘কতদিন আমরা এদেশে টেস্ট ম্যাচ জিতিনি? ৪৫০২ দিন। কেউ আর আজ থেকে বলতে পারবে না, সিরিজ ০-৪ হবে। আমরা আন্ডারডগ হিসেবে শুরু করেছিলাম। সিরিজ শুরুর আগে কেউ আমাদের পাত্তাই দেয়নি।’ এরপরই পাশে বসা জয়ের নায়ক ও’কেফের দিকে ইশারা করে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি যদি বলি সোক (ও’কেফের ডাক নাম) অসাধারণ, তা হলেও ওকে ছোট করা হবে। এক কথায় এ্যাম্যাজিং, ও আমাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বিশ্বাস করতে শেখাচ্ছে।’ কোহলিসহ ভারতের ডাকাবুকো সব ব্যাটসম্যান যে উইকেটে নাকানি-চুবানি খেয়েছে, সেখানেই দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৯ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে অস্ট্রেরিয়াকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গেছেন স্মিথ। অতিথি অধিনায়ক বলেন, ‘আমি বলব না দুর্দান্ত খেলেছি। বরং ক্যাচ ছেড়ে ওরা বেশ কয়েকটা সুযোগ দিয়েছে। ভারতের উইকেটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি অনেক বেশি দামি। তবু দল জিতেছে বলেই এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসগুলোর একটি হয়ে থাকবে।’ সিরিজ শুরুর আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দুবাইয়ে দীর্ঘ ক্যাম্প করেছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে সাবেক ভারতীয় স্পিনার শ্রীধরণ শ্রীরাম ও ইংল্যান্ডের মন্টি পানেসার নাথান লেয়ন ও’কেফেকে স্পিনে দীক্ষা দিয়েছেন। যা দলের স্পিনার, এমনকি ব্যাটসম্যানদের জন্যও ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মনে করেন অসি অধিনায়ক। উচ্ছ্বাসিত হলেও আবেগের স্রোতে ভাসতে নারাজ স্মিথ, ‘পুনেতে যাই হোক না কেন, ভারত পরের তিনটা টেস্টে পাল্টা জবাব দেয়ার চেষ্টা করবেই। এ নিয়ে আমাদের এতটুকু সন্দেহ নেই। ওরা এক নম্বর দল। সেটা মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজাতে হবে। লম্বা চার টেস্টের সিরিজ। একটা জিতে সব হয়ে গেছে বলে ধরে নেয়ার কোন কারণ নেই। আমি বলব আসল পরীক্ষা এখনও সামনে। এটা ধরে রাখতে আমাদের আরও ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে।’ ৪ মার্চ ব্যাঙ্গালুরুতে শুরু চার ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। বাকি দুই ম্যাচ রাঁচি ও ধর্মশালায়।
×