ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মুহিত রচিত মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র’ গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মুহিত রচিত মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র’ গ্রন্থের  প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রচিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চারটি গ্রন্থ নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র’ শিরোনামে বই প্রকাশ করেছে মাওলা ব্রাদার্স। বইটির মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে রবিবার সকালে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যৌথভাবে মাওলা ব্রাদার্স ও বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÑ বইটির লেখক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাংবাদিক আবেদ খান, রাজনীতিবিদ ড. নূহ উল আলম লেনিন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল ও বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. এ কে আবদুর মোমেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান খান। মাওলা ব্রার্দাসের স্বত্বাধিকারী আহমেদ মাহমুদুল হকের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রকাশনা অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ আমাকে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছতেই মুহিত রিসিভ করেন। এর পর থেকেই তার সঙ্গে পুরোটা সময় কাটিয়েছি। তখন আমরা যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, এমনকি বঙ্গবন্ধু কোথায় সেটাও জানতাম না। সে সময় আমরা মূলত দুটি বিষয়ের ওপর কাজ করেছি। এক, বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়; দুই, বিভিন্ন দাতা সংস্থা যাতে পাকিস্তানকে সহায়তা বন্ধ করে। এ বিষয়ে মুহিত এই বইটিতে বিস্তারিতভাবে লিখেছেন। লেখকের অনুভূতি প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বইটিতে ১৯৭৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমার বিভিন্ন সময়ের লেখা রয়েছে। এতে আমার লেখা ৩৭টি প্রবন্ধ রয়েছে, যা দুটি পূর্ণাঙ্গ বইসহ চারটি বইয়ে ছিল। সেগুলোকেই এক জায়গায় এনেছেন প্রকাশক। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ। জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, তিনি ১৯৪৭ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। সে সঙ্গে ইংরেজীর ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও তার অধিকাংশ রচনা অর্থনীতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক। তার লেখা এ বইটি শুধু পড়ে গেলে হবে না, সময় নিয়ে বুঝে পড়তে হবে। যারা গবেষণা করতে চান, তাদের জন্য বইটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ। তরুণদের অনুরোধ করছি, তারা যেন বইটি পড়ে। আবেদ খান বলেন, এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ। গ্রন্থটির বিভিন্ন জায়গায় পড়তে গিয়ে আমার চোখ আটকে গেছে। বইটি পড়লে মুক্তিযুদ্ধের অনেকখানি পাঠ করা হয়ে যাবে। তবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের যে ব্যাপকতা তার অনেক কিছুই এখন অনাবিস্কৃত, এ জন্য মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও লিখতে হবে। নূহ উল আলম লেনিন বলেন, বইটিতে তথ্যের পাশাপাশি, লেখকের ভাবনাও রয়েছে। আঁশি বছর পেরিয়েও তার লেখার শক্তি এখনও প্রবল। শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, উনার নানান পরিচয় জানতাম, আজকে মনে হচ্ছে, তিনি একজন ইতিহাসবিদ এবং সাহিত্যিক। এত সুন্দর তিনি লিখেছেন, কোন জায়গায় ধারাবাহিকতার ব্যতয় ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসীদের লড়াইয়ের কথা আমরা কম জানতাম, এখানে সেটা উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, ইংরেজীর ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও আবুল মাল আবদুল মুহিত সারাজীবন অর্থনীতির বিষয়ে কাজ করেছেন। এরই ফাঁকে তিনি কাজ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায়। এ রচনাসমগ্রে উঠে এসেছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসীদের সংগ্রামের কথা। সে সঙ্গে আগামী দিনের বাংলাদেশের রূপরেখাও এতে উঠে এসেছে। আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র’ বইটিতে তাঁর চারটি বই সংকলিত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছেÑ ‘স্মৃতি অম্লান ১৯৭১’, ‘বাংলাদেশ : জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব’, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়’। ৫৭৪ পৃষ্ঠার এ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটির মূল্য দেড় হাজার টাকা।
×