স্টাফ রিপোর্টার ॥ এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণে দুই মাসের মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করছে জ্বালানি বিভাগ। প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন, বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। রবিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আসিসিবি) আয়োজিত চতুর্থ ‘এশিয়ান এলপিজি সামিট সম্মেলন-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক এলপিজি এ্যাসোসিয়েশন, অল ইভেন্ট গ্রুপ-সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই সামিট আজ সোমবার শেষ হচ্ছে। এতে দেশী-বিদেশী ৬৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে; যারা মূলত এলপিজি বাজারজাত, সিলিন্ডার ও অন্যান্য খুচরা যন্ত্রাংশের উৎপাদক হিসেবে কাজ করে আসছে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে ব্যবহার করা গ্যাসের ২০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমরা যদি এলপিজি ব্যবহার করি তাহলে ২০ শতাংশ সাশ্রয় হবে। সঙ্গত কারণে বর্তমান সরকার বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে এলপিজিকে প্রাধান্য দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
দেশের অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি দিন দিন বড় হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই কলকারখানা এবং বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র ছাড়া অন্য সব খাতে আমরা প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে এলপিজির ব্যবহার বৃদ্ধি করবো। আমাদের গ্যাসের মজুদ কমে আসায় সরকার বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে জনসাধারণকে উৎসাহিত করছে।
তিনি বলেন, বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আবাসিক খাতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার না করলে শিল্পে ব্যবহার বাড়ানো যাবে। ফলে কর্মসংস্থানসহ বহুমুখী সুবিধা অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, গ্রিন ও ক্লিন এনার্জি হিসেবে এলপিজি সমাদৃত। ৭০ ভাগ আবাসিক জ্বালানির চাহিদা এই এলপিজি থেকে পূরণ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। অটোগ্যাস হিসেবে এবং বাজার জরিপ করতে সংশ্লিষ্টদের তিনি অনুরোধ জনান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এলপিজি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সালমান এফ রহমান বলেন, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরকার বাসাবাড়ি ও পরিবহন খাতে পাইপের গ্যাস ব্যবহারকারীদের নিরুৎসাহিত করছে। কারণ, দেশে খুব অল্প প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ আছে। বাংলাদেশ যাতে জ্বালানি সংকটে না পড়ে সে জন্য বিকল্প জ্বালানির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘ওয়ার্ল্ড এলপিজি এ্যাসোসিয়েশন’-এর পরিচালক ডেভিট টেইলার বৈশ্বিকভাবে এলপিজির ব্যবহার, উৎপাদন, পরিবহন ও বাজার মূল্যায়ন তার মূল প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এলপিজির জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নাজিমুদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং কনভারসন ওয়ার্কস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রিয়াদ আলী ও ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজীম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: