ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গোলটেবিল বৈঠকে ড. দেবপ্রিয়

পোশাক খাত সংস্কারে সামাজিক সংলাপ প্রয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পোশাক খাত সংস্কারে সামাজিক সংলাপ প্রয়োজন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পোশাক খাত সংস্কারে সামাজিক সংলাপ প্রয়োজন বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দেশের পোশাক কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্সের (উন্নত কর্মপরিবেশ) আওতায় আনতে গিয়ে কারখানা বন্ধ হচ্ছে, শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে এবং উদ্যোক্তা হারিয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। উদ্যোক্তা হারিয়ে গেলে তা তৈরি করা কঠিন। তাই এসব বিষয় আলোচনায় একটি সামাজিক সংলাপ প্রয়োজন। রবিবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে ২০১৩ সাল পরবর্তী তৈরি পোশাক খাতের চ্যালেঞ্জ এবং অর্জন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মাহমুদ হোসেন সান ফ্রানসিসকো। সামাজিক সংলাপের দাবি জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় বলেন, অর্থবহ সংলাপ শুধু শ্রমিক, মালিক এবং সরকার দিয়েই হবে না। পোশাকের ক্রেতাদেরও এখানে অংশীদার হতে হবে। তাদের দেখতে হবে এখানে কোন কাঠামোগত সমস্যা হচ্ছে কি না। প্রক্রিয়ার ভেতর কোন সমস্যা হচ্ছে কি না। উন্নত কর্মপরিবেশের আওতায় আসলে পোশাক খাত অনেক দূর এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি হলে পোশাক খাত একটি গুণমান প্রক্রিয়ার ভেতরে আসবে। এর ফলে শ্রমিক যারা আছে, তাদের মজুরি এবং মজুরি-বহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রেই তারা কোন না কোন সুবিধা পাবে। এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসবে বলে অনেকে মনে করে। এসব গুণগতমান বাস্তবায়ন করলে মালিকদের লাভ হবে। এখানে মুনাফাও বাড়বে। তবে কারখানাগুলোকে উন্নত কর্মপরিবেশের আওতায় আনতে যে অর্থের প্রয়োজন তা কোথা থেকে আসবে এবং এর জন্য বিশেষজ্ঞ কোথা থেকে আসবে তা ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পোশাক খাত ৪টি বড় বাধা অতিক্রম করে আজ এখানে এসেছে জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ১৯৯৫-৯৬ সালে কোটামুক্ত বস্ত্র খাতে প্রবেশ, শিশুশ্রম, ২০০৮-০৯-এর অর্থনৈতিক মন্দা, ২০১৩ সালের রানা প্লাজা। এই ৪টি বাধা অতিক্রম করে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, পোশাক খাত সর্বদাই অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে। এভাবে পুরনো ঝুঁকি চলে যাবে। নতুন ঝুঁকি আসবে। সেই ঝুঁকির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের পোশাক খাত বিকাশ লাভ করবে। এর সঙ্গে সঙ্গে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের পোশাক খাত কিন্তু টিকে থাকার মতো যোগ্যতা দেখিয়েছে। এটাতো বৈশ্বিক বিবর্তনশীল পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রতি মুহূর্তে সে কাঠামোগত, নীতিগত এবং সংস্কারের ভেতর দিয়ে গেছে। এটা আমাদের শক্তির জায়গা। গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, বিআইডিএসের গবেষক ড. নাজনিন আহমেদ, মোহাম্মাদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক, স্থপতি ইকবাল হাবিব, শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার প্রমুখ।
×