ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা নবম ও দশম শ্রেণি

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা নবম ও দশম শ্রেণি

দ্বিতীয় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ২। বিদ্যালয়ে সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলার প্রতিযোগিতা হয়। এতে যারা যারা ভালো করেছে তাদের নিয়ে একটি চৌকস ব্যাডমিন্টন দল গঠন করা হয়। এই দল পরবর্তীতে আন্তঃস্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন কবের। ক) শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে ডি.কে. ম্যাথিউস এর সংজ্ঞাটি লিখ। খ) এ্যাথলেটিক হার্ট বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর। গ) সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলাটি শারীরিক শিক্ষায় কোন ধরনের কর্মসূচি ব্যাখ্যা কর। ঘ) উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা ও আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতার ইভেন্ট ও কর্মসূচিএক তুমি কি বক্তব্যের সাথে একমত? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও। উত্তর ঃ ক) শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে ডি. কে.ম্যাথিউস বলেন, ‘শারীরিক কার্যকলাপের দ্বারা অর্জিত শিক্ষাই শারীরিক শিক্ষা।’ উত্তর ঃ খ) খেলাধুলা ও ব্যায়ামের ফলে হৃৎপিন্ড বড়, নিরোগ ও শক্তিশালী হয় এরূপ হার্টকে বলা হয় অ্যাথলোটিক হার্ট। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলার করার মধ্য দিয়ে অ্যাথলোটিক হার্ট গঠন করতে হয়। অ্যাথলোটিক হার্টের ফলে হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, অধিক কার্যকরী হয় এবং শারীরিক সক্ষমতা বজায় থাকে। বিশ্বে অ্যাথলোটিক হার্ট মানুষের হাতেগোনা কয়েকজন। এদের মধ্যে ফুটবল স¤্রাট পেলে অন্যতম একজন। উত্তর ঃ গ) সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলাটি শারীরিক শিক্ষার অন্তঃক্রীড়াসূচীর অন্তর্গত। অন্তঃক্রীড়াসূচীর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস। ইহা একটি ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ হলো প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয়। যেমন, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, এক শ্রেণির সাথে অন্য শ্রেণির, যদি হাইজ থাকে তবে এক হাউজের সাথে অন্য হাউজের বা বিদ্যালয়ের এক ক্লাবের সাথে অন্য ক্লাবের প্রতিযোগিতা অন্তঃক্রীড়াসূচী বা ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টসএর অন্তর্গত। অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে যে খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা হয় তাকে অন্তঃক্রীড়াসূচী বা ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস বলে। অন্তঃক্রীড়াসূচীর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে থেকে সেরা খেলোয়াড় বাছাই করা সম্ভব হয়। উত্তর ঃ ঘ) উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা,আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতার ইভেন্ট ও কর্মসূচি এক আমি এই বক্তব্যের সাথে একমত নই। আমার বক্ত্যবের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলো। উদ্দীপকের সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা হলো অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি।এই ক্রীড়াসূচি বিদ্যালয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয় তা হলো অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি এবং প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের বাহিরে বা অন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয় তা হলো আন্তঃক্রীড়াকর্মসূচি। আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতা হলো আন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি। উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা হলো বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন ক্রীড়াকর্মসূচি বা অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি আর আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতা হলো আন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি। ইভেন্ট হলো ক্রীড়াসূচীর দফা বা ক্রীড়াসূচীর ধাপ আর কর্মসূচি হলো ক্রীড়াসূচীর সমস্ত ইভেন্ট সমুহের সার্বিক কার্যক্রম। ইভেন্ট হলো কর্মসূচির একটি অংশ। ইভেন্টসমূহ সফল হলেই কর্মসূচির সফল সমাপ্তি হয়। কর্মসূচিকে সফল করতে হলে ইভেন্টের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হয়। কর্মসূচি হলো বৃহত্তম আর ইভেন্ট হলো ক্ষুদ্রতম। ৩। ক) অনুচক্রিকার কাজ কী? খ) শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে ব্যায়ামের প্রভাব ব্যাখ্যা কর। গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত ’গ’কোন খেলার শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে বেশি দরকার ব্যাখ্যা কর। ঘ) উদ্দীপকে উল্লেখিত ’ক ও খ ’ খেলায় খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা বৈসাদৃশ্যের ধরণ বিশ্লেষণ কর । ক) উত্তর ঃ অনুচক্রিকার কাজ হলো দেহের কোথাও ক্ষত হলে সেখানে ৩মিনিটের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে বা রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করা। খ) উত্তর ঃ শারীরিক সক্ষমতা হলো শারীরিক কাজ-কর্ম করার সামর্থ্য, শারীরিক সক্ষমতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। ব্যায়াম না করলে কখনো শারীরিক সক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয়, যা শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সক্ষমতা অর্জনের জন্য সব বয়সের লোকদের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। শারীরিক সক্ষমতার প্রধান শর্ত হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমান ব্যায়াম করা। ব্যায়াম ছাড়া শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা অর্জন করা যায় না। গ) উত্তর ঃ উদ্দীপকের উল্লেখিত খেলাটির নাম হলো দূরপাল্লার দৌড়। এই খেলার জন্য শারীরিক সক্ষমতা বেশি দরকার।এই খেলার জন্য বেশি প্রয়োজন হয় দম ও পায়ের শক্তি। তলপেট,হাত ও বাহুর শক্তির প্রয়োজন হয় মধ্যম মানের। ক্ষিপ্রতা কম হলেও চলে। শারীরিক সক্ষমতা থাকলে দূরপাল্লার দৌড় চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া যায়।এই খেলার জন্য দম ও পায়ের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম বেশি করে করতে হবে। সংশ্লিষ্ট খেলার সাথে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করা হলে ঐ খেলায় ভালো ফল আশা করা যায়। যেমন, দূরপাল্লার দৌড়ের জন্য আস্তে আস্তে দৌড়, তবে বেশি সময় ধরে দৌড়াতে হবে, উঁচু-নিচু জায়গায় দৌড়,বালুর উপর দৌড়ানো ইত্যাদি নিয়মিতভাবে অনুশীলন করতে হবে। ফলে শারীরিক দূরপাল্লার দৌড়ের প্রয়োজনীয় শারীরিক সক্ষমতা ীর্জিত হবে। ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকে খেলা দুটি যথাক্রমে ফুটবল ও হ্যান্ডবল। এই খেলা দু’টির খেলোয়াড়দের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলেও বৈসাদৃশ্য কিছু রয়েছে এবং বৈসাদৃশ্যের ধরণ বিশ্লেষণ করা হলো। ফুটবল খেলায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় শক্তি( পা, হাত ও বাহু), দম ও ক্ষিপ্রতা। আর হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের বেশি প্রয়োজন হয় পা,হাত ও বাহুর শক্তি ও ক্ষিপ্রতা। বয়সের দিক থেকেও এই দুই খেলোয়াড়দের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। ফুটবল খেলোয়াড়রা ৩৫বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারে এবং হ্যান্ডবল খেলোয়াড়রা সব বয়সেই খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। বয়সের কোন বিধি নিষেধ নেই। ফুটবল ও হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের মধ্যে কৌশলগত কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে। যা নির্ভর করে শারীরিক সক্ষমতার উপর।এই দুই খেলোয়াড়দের মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা দুই ধরণের। যেমন ফুটবল খেলোয়াড়দের দমের বেশি প্রয়োজন আবার হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের দম প্রয়োজন মধ্যম মানের। এই দুই খেলোয়াড়দের সক্ষমতার মূল বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত দম ও বয়সের পার্থক্যের ক্ষেত্রে। শারীরিক সক্ষমতার বৈসাদৃশ্য থাকলেও যার শারীরিক সক্ষমতার বেশি খেলাধুলায় তার কাছ থেকে ভালো ফল আশা করা যায়।
×