ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পুষ্প শোভিত ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পুষ্প শোভিত ক্যাম্পাস

উত্তরাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। পাখ-পাখালির কলতানে মুখরিত এই ক্যাম্পাসকে কেউ বলে চিরসবুজের ক্যাম্পাস। বিভিন্ন জাতির ফুল ও ফলের গাছসহ এখানে রয়েছে হরেকরকম গাছ-গাছালি, তারা তাদের সবুজ পত্রপল্লব দিয়ে সারা বছর সাজিয়ে রাখে মায়াবী এই বিদ্যাপীঠকে। ক্যাম্পাসকে শান্ত সুনিবিড় রাখতে যেন নিজ থেকেই গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছে ক্যাম্পাসের চির সবুজের বৃক্ষগুলো। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কাঠফাটা গ্রীষ্মের রং-বেরঙের বাহারি ফুলের সমাহার। ফুলগুলো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণে। এই ক্যাম্পাসের ছোট ছোট পিচঢালা রাস্তার দুপাশে দেবদার শোভা পায়, সঙ্গে রংয়ের পাতা বাহারি গাছের সারি। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে কৃষ্ণচূড়া গাছ, ফুল লাল হয়ে আছে প্রধান ফটক এলাকা। রাস্তায় লেপটে থাকা লাল ফুলগুলো দেখলে মনে হবে শিক্ষার্থীদের লাল গালিচার অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে পথ চেয়ে বসে আছে। সারা ক্যাম্পাসে চোখে পড়বে ১০০ প্রজাতির ও বেশি ফুল, এর মধ্যে ডালিয়া, গাঁদা, চায়না গাঁদা, জারুল, সূর্যমুখী, রাধাচূড়া, নাগ লিঙ্গ, নানা প্রজাতির গোলাপ, কাঠগোলাপ, মধুমালতি, কামিনী, জবা, বেলি, সোনালু, স্বর্ণচাঁপা ফুলের মাতামাতি। ঠিক প্রধান ফটকের মতোই ২য় গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই ডান দিকে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও প্রশাসন ভবন, টিএসসিসি, দুটি ছাত্র হল, দুটি ছাত্র হল কৃষি অনুষদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, ডি চত্ব¡র যা ক্যাম্পাসের জনপ্রিয় আড্ডার স্থান, ওদিকটায় তাকালেই দেখা মিলবে বাহারি ফুলের সমাহার। ক্যাম্পাস চলাকালীন সবচেয়ে আড্ডার জায়গা এটি। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আলিউল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের রক্সি বলেন, ক্লাস শেষে যখনই অবসর পায় তখনই ডি কিংবা ওয়াজেদ চত্বরে ছুটে আসি। এখানকার ঠা-া পরিবেশ ও হরেক রকম ফুলের সমাহার আমাদের মুগ্ধ করে। এ সময় ক্যাম্পাসের গোছানো এই স্থানগুলো খুব ভাল লাগে। কৃষি অনুষদের মাস্টার্স পর্বের শিক্ষার্থী মাহমুদা সুলতানা বলেন, ২০১২ যখন ক্যাম্পাসে আসি তখনই, সোনালি ফুলের সমাহার দেখেই এই ক্যাম্পাসের প্রেমে পড়ে যাই, তারা এ ও জানান ফুলে ফুলে সাজানো স্থানগুলো ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ। এরপর আসি তাজউদ্দীন আহমদ হলের কথা যার সামনে দুপাশে মনমাতানো সুন্দর ফুলের বাগান। যেখানে রয়েছে প্রায় ১০ প্রজাতির গোলাপ, গাঁদা, সূর্যমুখী, কাগজ ফুল, রজনীগন্ধাসহ অনেক ফুল। ড. এম এ ওয়াজেদ বিল্ডিং এরিয়া গোলচত্বর এখানে রয়েছে প্রায় ৩০ প্রকারের অর্নামেন্টাল গাছ, চত্বরজুড়ে গাঁদা ফুলের সারি রয়েছে, ডালিয়া, চায়না গাঁদা, গোলাপ ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের অবসরে ছুটে আসে এসব ফুলের সুবাসের টানে। চলে টানা আড্ডা, দুষ্টমি আর খুনসুটি। কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা হানি ও সুস্মিতা জানালেন ফুলের প্রতি তাদের ভাললাগার কথা। আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ক্যাম্পাসে আমার প্রিয় জায়গাগুলোর অন্যতম গোলচত্বর চত্বর। বাহারি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণের টানে আমি এখানে ছুটে আসি। সুস্মিতা বলছিলেন, ফুলের কাছে বসে থাকতে থাকতে মন মানসিকতা এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। ফুলের সঙ্গে এই ক্যাম্পাসটিও আমার অনেক প্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি ভবন, রেস্ট হাউস, শিক্ষক কোয়ার্টার, প্রশাসন ভবনের অভ্যন্তরীণ অংশ, জিমনেসিয়াম, ওয়াজেদ বিল্ডিংয়ের সামনে, মেডিক্যাল সেন্টারসহ ক্যাম্পাসের প্রায় বিশের অধিক জায়গায় ফুল থাকে প্রায় সব সময়। ক্যাম্পাসের সর্বত্র ফুলের কদর থাকলেও আবাসিক হলগুলোতেও কিন্তু ফুলের কদর একদমই কমে যায়নি। জিয়া হল, তাজউদ্দীন আহমদ হল, শেখ রাসেল হল, ফজিলাতুননেসা মুজিব হল, আইভি রহমান হল, সুফিয়া কামাল হল, সব জায়গায় ফুলে পরিপূর্ণ। এত ফুল চির সবুজ এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা আসে এই সৌন্দর্য উপভোগ করে। এখানে এসে এই সুন্দর ফুলের বাগানের সুন্দর ফুলগুলোকে ফ্রেমে ঁেবধে রাখতে ভুল করে না কেউ। সবমিলিয়ে ক্যাম্পাস যে নতুন এক রূপ ধারণ করেছে। তারিকুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান
×