ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুশফিকদের জন্য সুসংবাদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মুশফিকদের জন্য সুসংবাদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অভিজ্ঞতায় এমনিতেই এগিয়ে থাকছে বাংলাদেশ। সেই এগিয়ে থাকা আরও সুমধুর হলো। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য সুসংবাদই মিলল। টেস্ট সিরিজে থাকছেন না শ্রীলঙ্কার নিয়মিত অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ইনজুরির জন্য বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ম্যাথুস। কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকারতেœ দিলশানের অবসরের পর শ্রীলঙ্কা দল অভিজ্ঞতাশূন্য হয়ে পড়েছে। এ মুহূর্তে যে কয়েকজন অভিজ্ঞ টেস্ট ক্রিকেটার আছেন, তাদের মধ্যে ম্যাথুস অন্যতম। কিন্তু হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির ছোবলে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারছেন না ম্যাথুস। জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ থেকেই এ সমস্যায় ভুগছেন ম্যাথুস। ম্যাথুসের পরিবর্তে এখন রঙ্গনা হেরাথ বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নেতৃত্ব দিতে পারেন। যিনি গতবছর নবেম্বরে ম্যাথুসের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও। এমনও হতে পারে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজে ইনজুরির জন্য না থাকা নিয়মিত সহঅধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালও অধিনায়ক থাকতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার উপল থারাঙ্গাকেও নেতৃত্বে দেখা যেতে পারে। যিনিই এখন নেতৃত্বে আসেন, ম্যাথুসের মতো চৌকস কেউই নন। আর এখানে বাংলাদেশ সুবিধা পেতে পারে। নিয়মিত অধিনায়ক না থাকলে যে কোন দলই সমস্যায় পড়তে পারে। শ্রীলঙ্কাও সেই সমস্যায় ভুগতে যাচ্ছে তা নিশ্চিত। এ সুবিধা এখন বাংলাদেশ নিতে পারলেই হয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ মার্চ গলে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ১৫ মার্চ কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে। এ টেস্ট সিরিজের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে (২৫, ২৮ মার্চ ও ১ এপ্রিল) ও দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে (৪ ও ৬ এপ্রিল) ফিরতে পারেন ম্যাথুস। কিন্তু আসল যে সিরিজ, সেই টেস্ট সিরিজে তিনি থাকছেন না। তারুণ্যে ঠাসা শ্রীলঙ্কা দল। তাতে দলটি বেগও পাচ্ছে ভীষণ। অস্ট্রেলিয়ার দুর্বল দলের বিপক্ষে সম্প্রতি টি২০ সিরিজে জিতেছে ঠিক। কিন্তু এরআগে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে। তবে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। গতবছর জিম্বাবুইয়েতে তিনজাতি সিরিজে তিন ম্যাচে জিতেছে শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও জিতেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজ মাটিতে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে, পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে। আবার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে জিতেছে। গতবছর মে থেকে জুলাই পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে হেরেছে। বোঝা যাচ্ছে, যদি একটু শক্ত ভিত গড়া যায়, আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলা যায়; তাহলে তারুণ্যনির্ভর শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতেও হারানো সম্ভব। ম্যাথুস না থাকায় বাংলাদেশের জন্য সেই কাজটি করাতো আরও সহজ হয়ে গেল। শ্রীলঙ্কা দলে এ মুহূর্তে ম্যাথুস, থারাঙ্গা, চান্দিমাল, হেরাথ, সুরঙ্গ লাকমালই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সেই তুলনায় তামিম, মাহমুদুল্লাহ, সাকিব, মুশফিক, রুবেলরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ফর্মেও আছেন ক্রিকেটাররা। তাছাড়া যারা তরুণ, তাদের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ তো বিশ্ব মাতাচ্ছেন। মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরাও নৈপুণ্য দেখাতে প্রস্তুত। এ ক্রিকেটারদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাই একজন যোগ্য অধিনায়ক। সেটিই হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে শ্রীলঙ্কা দলে যে তরুণরা আছেন, তারা মুস্তাফিজ, মিরাজ, সাকিবকে নিয়ন্ত্রণ করতেই হিমশিম খাবেন। তাতে করে বাংলাদেশ ভাল অবস্থানেই চলে গেল। ম্যাথুস থাকলেও বাংলাদেশই টেস্ট সিরিজে এগিয়ে থাকত। তা বাংলাদেশ দলের ফিটনেস ট্রেইনার মারিও ভিল্লাভারায়েনই শুক্রবার বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের এখন যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমাদের এগিয়ে রাখছে। অনেক আকর্ষণীয় একটি সিরিজ হতে যাচ্ছে। ক্রিকেটাররা সবাই মুখিয়ে আছে খেলার জন্য। আমাকে যদি ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেন, অসাধারণ একটি সিরিজ হতে যাচ্ছে। আমরা যদি আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারি তাহলে ভাল সুযোগ রয়েছে।’ সেই ভাল সুযোগ আরও বেড়ে গেল। ইনজুরি পুরোপুরি সেরে না ওঠায় টেস্ট সিরিজে থাকছেন না ম্যাথুস। এটি মুশফিকদের জন্য সুসংবাদ হয়েই ধরা দিল।
×