ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদ মিনারে যুবমৈত্রীর জাতীয় সম্মেলনে বিশ্ব যুব সমাজের সংহতি প্রকাশ

সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গীবাদ দুর্নীতি রুখে দাঁড়াও

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গীবাদ দুর্নীতি রুখে দাঁড়াও

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ হাতে হাত রেখে সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, সুইডেন, জার্মান, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুব নেতৃবৃন্দ। যুব অধিকারে ঐক্যবদ্ধ হও, অসাম্প্রদায়িকতা-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে এগিয়ে নাও, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গীবাদ-দুর্নীতি-বেকারত্ব-শোষণ রুখে দাঁড়াও এই সেøাগানে শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সপ্তম জাতীয় সম্মেলনে বিশ্ব যুব সমাজ সংহতি প্রকাশ করে। সম্মেলন উপলক্ষে যুব সমাজ দেশাত্মবোধক গানসহ নানান কর্মসূচী পালন করে। বেলা ১১টা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। তাদের সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার। এ সময় তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন যাতে লেখা ছিল- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তুলুন, জঙ্গীবাদকে না বলুন, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত কর, পাড়া-মহল্লায় জঙ্গীবাদবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুলুন ইত্যাদি। দুপুর ১২টায় দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। যুব মৈত্রীর সভাপতি মোস্তফা আলমগীর রতনের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, পলিটব্যুরো সদস্য জননেতা নুর আহমদ বকুল। এছাড়াও যুব অধিকার আদায়ে লড়াই-সংগ্রামের দৃঢ়প্রত্যয়ী বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর এ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সুইডেন, জার্মান, তুরস্ক, নেপাল, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের যুব নেতৃবৃন্দ। রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর নেতৃবৃন্দ তাদের যৌবন দিয়ে স্বৈরাচার সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। সমস্ত দেশবাসী ও রাজনৈতিক দলকে এতত্রিত করে যুক্তফ্রন্ট তৈরি করেছিল। যুব মৈত্রী নতুন ধারায় বাংলাদেশে বিকশিত হচ্ছে। সে বিকাশের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যুবকরা এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, যুবক মানেই বিদ্রোহ করার সাহস, যুবক মানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। এ যুবকরা এ দেশের ভাষা আন্দোলনে যেমন লড়েছে, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকে সফল করেছিল। এ যুবকরাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা এনেছিল। এ যুবকদের যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারি তাহলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারব। তিনি আরও বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পথে বাধা অনেক। প্রথম বাধা হচ্ছে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠীর বাধা। এ যুবকদের নিয়ে আজ বাংলাদেশ নতুন স্বপ্ন দেখে। দেশের অগ্রযাত্রার যে বাধা রয়েছে তা যুবকরাই দূর করবে। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে এ যুবকরাই আশা ও ভরসার স্থল। আজ মৌলবাদী শক্তি নানান উপায়ে এ দেশে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস ও এতিহ্য থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে হেফাজত। আজ হেফাজত সুপ্রীমকোর্টের ভাস্কর্য সরানোর হুমকি দিয়েছে। সরকার যদি হেফাজতের হুমকির কাছে আত্মসমর্পণ করে তাহলে এক সময় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যের অস্তিত্বও থাকবে না। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা সারাজীবন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমরা সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি কি চাপাতির ভয়ে হেফাজতের সঙ্গে আপোস করবেন? এনসিটিবি কি হেফাজতের কথায় চলবে? আপোসের পারিণাম ভাল নয়। যত আপোস করবেন তত পিছু সরতে হবে। জঙ্গীবাদ যদি পুনরুত্থান হয় তাহলে যারা আপোস করছেন তারা দায়ী থাকবেন। তাদের জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে। আমরা এ সমঝোতা মেনে নিতে পারি না। বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সুসংহত রাখার জন্য যুব সমাজকে জাগ্রত হতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হবে এ অভিযোগ এনে চুক্তি বাতিল করেছিল। সেদিন সারাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। সেদিন আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে মাথা নত করিনি।
×