ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা স্থগিত থাকার সমালোচনা বাণিজ্যমন্ত্রীর

অবশেষে এ্যাপারেল সামিটে তৈরি পোশাকের শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

অবশেষে এ্যাপারেল সামিটে তৈরি পোশাকের শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তৈরি পোশাকের শীর্ষ পাঁচ ক্রেতা প্রতিষ্ঠান অবশেষে ‘ঢাকা এ্যাপারেল সামিট-২০১৭’ তে যোগ দিয়েছে। ফিরে এসেছে এইচ এ্যান্ড এম, ইন্ডিটেক্স (জারা), সি এ্যান্ড এ, নেক্সট ও চিবো ব্র্যান্ড। শনিবার সামিটের তিনটি সেশনে শীর্ষ এই পাঁচ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এর আগে বিজিএমইএর উদ্যোগে আয়োজিত শুক্রবার রাতে নৈশভোজ যোগ দেয় প্রতিনিধিদলটি। সরকারের ভিশন-২০২১ কে সামনে রেখে দেশের তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে করা হচ্ছে ঢাকা এ্যাপারেল সামিট ২০১৭। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস খাতের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সংগঠনের এ উদ্যোগ। বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে প্রথমবার সফলভাবে সামিটের আয়োজনের পর দ্বিতীয়বারও এই আয়োজন করা হয়েছে। ‘টুগেদার ফর এ বেটার টুমোরো’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের ঢাকা এ্যাপারেল সামিট আয়োজন করা হয়েছে। ৩টি সেশনে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা এ্যাপারেল সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামিটের উদ্বোধন করেন। গত ২০১২ সালের ২৪ নবেম্বর তাজরীন ফ্যাশনসে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকা- ও ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার রানা প্লাজা ভবন ধসের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল। সেই ভাবমূর্তি কাটিয়ে উঠে গার্মেন্টস খাতকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থিতিশীল খাত হিসেবে তুলে ধরতে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকা এ্যাপারেল সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এ্যাপারেল সামিটকে সামনে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে কারওয়ান বাজারের প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। বিশ্বের ৪৫টি দেশ থেকে ১০০ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা নিয়েছে ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে। ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে অংশ নিতে অনলাইনে প্রায় ৫ হাজার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। এদিকে এ্যাপারেল সামিটের সেশনগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়-কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা এবং ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম নিয়ে একতরফা বিদেশী কূটনীতিক এবং ক্রেতা তাদের চাপের কারণে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এদেশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, কেন এসব প্রসঙ্গে কেবল বাংলাদেশকে নিয়েই সমালোচনা। প্রতিযোগী চীন, ভিয়েতনাম কিংবা ভারত, পাকিস্তানকে নিয়ে এসব আলোচনা কেন হচ্ছে না। বিদেশী কূটনীতিক এবং ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে এ প্রশ্ন রাখেন তিনি। ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে উন্নত বাংলাদেশ হতে বাণিজ্যনীতি এবং পরিবেশ বিষয়ক অধিবেশনে তোফায়েল আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যে দেশে সরকারী এবং বেসরকারী খাতে ট্রেড ইউনিয়নে হার মাত্র ৭ এবং ৩৫ শতাংশ তারাও এ দেশের ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে সরব। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে একই ইস্যুতে কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। তিনি বলেন, গত ডিসেম্বরে আশুলিয়ার শ্রম অসন্তোষ, শ্রমিক নেতাদের গ্রেফতার ও ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমে বাধা দেয়ার বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন। তবে শেষ পর্যন্ত আশুলিয়া ইস্যুতে সরকার, মালিক ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যকার আলোচনাকে স্বাগত জানান তিনি। এ অধিবেশন সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। প্যানেল আলোচক বিশ^ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মার্টিন রামা বলেন, আগামী বছরের মধ্যে তৈরি পোশাকে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত। তার এই বক্তব্যের ভিত্তি সম্পর্কে সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাল্কিল্ট্র কান্ট্রি মডেল, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণায় আলোচনা এবং ভারতের পরিকল্পনা ভিত্তিতে এ মত তার। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহম্মদ নাছির বলেন, ব্যবসা এবং বিনিয়োগে অন্তত ১০ বছর মেয়াদি একটি নীতি চান। তিনি বলেন, এর ভিত্তিতে উদ্যোক্তার বিনিয়োগে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা এবং ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারেন। নীতির ধারাবাহিকতার অভাবে উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
×