ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ ॥ ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ ॥ ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল ডেকেছে দুটি বাম রাজনৈতিক দল। শনিবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানায়। একই দিন সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে তারা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৫-১৬ বছরে গ্যাস বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ১৬ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। সরকার ভ্যাট নিয়েছে ৫৫ শতাংশ, লভ্যাংশ নিয়েছে দুই শতাংশ, আগাম কর্পোরেট ট্যাক্স তিন শতাংশ, সম্পদমূল্য মার্জিন ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ, গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বাবদ ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৮১ দশমিক ১০ শতাংশ সরকার নিয়ে নিয়েছে যার অর্থমূল্য দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় বাদ দিলে কোম্পানির লাভ ৫ শতাংশ বা ৮৩১ কোটি টাকা। গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে জমা আছে ১৯ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। লাভ হওয়া সত্ত্বেও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাসাবাড়িতে যাঁরা গ্যাস ব্যবহার করেন, তাঁরা দুই চুলার জন্য গ্যাস ব্যবহার করতে পারেন ৯২ ঘনমিটার, কিন্তু বাস্তবে গড়ে ব্যবহার করেন ৪৫ ঘনমিটার। অর্থাৎ ৪৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার না করলেও, তার দাম কিন্তু ঠিকই দিয়ে থাকেন। দুই চুলার জন্য বিল দিতে হয় ৬৫০ টাকা, যার ৫৫ শতাংশ ভ্যাট অর্থাৎ গ্যাসের দাম ২৯৩ টাকা আর ভ্যাট বাবদ সরকার নেয় ৩৫৭ টাকা। এর পরও গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক দাবি করা হয়েছে। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার গ্যাস খাত থেকে ভ্যাট, লভ্যাংশ ও আগাম কর্পোরেট ট্যাক্স হিসেবে যে ৬০ ভাগ অর্থ নিয়ে নেয় তা কমিয়ে দিলে বর্তমান দামের চেয়ে কম দামে জনগণকে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। তিনি বলেন কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি-লুটপাট, অবৈধ সংযোগের ফলে এই অতিরিক্ত মুনাফা কোম্পানির তহবিলে জমা হচ্ছে না। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম অর্থমন্ত্রী ও বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণকে দুর্ভোগে ঠেলে দিয়ে সমতা ও সামঞ্জস্য আনার পরিবর্তে এলপিজির দাম কমিয়ে তা করলে জনগণের কল্যাণ হতো। জনগণের নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়ানোর সময় সমতা বিধানের ভাওতাবাজি বক্তব্য না দিয়ে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য কমিয়ে সমতা বিধানের উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন। বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি বাড়ানোর জন্য পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বাংলাদেশের জ্বালানি খাত বহুজাতিক কোম্পানীর হাতে আগেই তুলে দেয়া হয়েছে। এখন দেশী-বিদেশী সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ও মুনাফা নিশ্চিত করতে দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, রফিকুজ্জামান লায়েক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহসান হাবিব লাবলু, কাফি রতন। বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, জাহেদুল হক মিলু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রাজ্জাক, খালেকুজ্জামান লিপন, শম্পা বসু উপস্থিত ছিলেন।
×