ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশিক্ষণ দুই লাখ নারীর

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

প্রশিক্ষণ দুই লাখ নারীর

আনোয়ার রোজেন ॥ প্রশিক্ষণের আওতায় আসছেন পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র ও অনগ্রসর নারী। এর অংশ হিসেবে সারা দেশে চালু হচ্ছে ২১টি আয় বাড়ানোর প্রশিক্ষণ ব্যবসা। দেশের ৪২৬ উপজেলার ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৪০ নারীকে এসব ব্যবসায় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এ প্রশিক্ষণ প্রকল্প চলবে আগামী তিন বছর। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। মহিলাবিষয়ক অধিদফতর শীঘ্রই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শুরু করবে। সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো, নারীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত ও নারীকে আত্মনির্ভরশীল করতে প্রকল্পটির উদ্যোগ নিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রশিক্ষণের আওতায় আসা নারীর উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের সুবিধা দেয়া হবে ও অনগ্রসর নারীকে তাদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন করা হবে। মহিলাবিষয়ক অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৮ বিভাগীয় শহরের ১ হাজার ৪৪০ নারীকে গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ৬৪ জেলা শহরের ১১ হাজার ৫২০ নারীকে বৈদ্যুতিক যন্ত্র যথা টিভি, রেফ্রিজারেটর, এসি, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওভেন এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে মোট ২ লাখ ৪ হাজার ৪৮০ নারীকে আয়বর্ধক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। উপজেলা পর্যায়ে যেসব বিষয়ে নারীরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেনÑ কেঁচোসার তৈরি, বিউটিফিকেশন, ক্রিস্টাল শোপিস তৈরি, শতরঞ্জি তৈরি, পরিবেশসম্মত প্যাকেট তৈরি, মোমবাতি তৈরি, ফ্যাশন ডিজাইন, ট্যুরিস্ট গাইড হওয়ার প্রশিক্ষণ, মাশরুম ও মৌমাছি চাষ, উলের পোশাক তৈরি, সেলসম্যানশিপ, মোবাইল সার্ভিসিং ও মেরামত এবং ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজমেন্ট। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারী। মহিলাবিষয়ক অধিদফতর ৬৪ জেলা অফিস থেকে তৃণমূল পর্যায়ের অগ্রসর শিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এসব নারীর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে জেলা পর্যায়ে। তবে বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে নারীদের জন্য কোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। ফলে উপজেলা পর্যায়ে বিরাটসংখ্যক গরিব নারী বিভিন্ন প্রকার দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারলে নারীর ক্ষমতায়ন আরও বেশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটির গুরুত্ব সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ২ লাখের বেশি দরিদ্র ও অনগ্রসর নারী বিভিন্ন আয়বর্ধক ট্রেডে প্রশিক্ষণ পাবেন। এতে কর্মসংস্থান ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এটি নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক হবে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৫ হাজার ২০ নারীকে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে প্রকল্পটি গত বছরের আগস্টে একনেক সভায় উত্থাপন করা হয়। তবে প্রকল্পের আওতায় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও গাড়ি চালনাসহ আধুনিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয় একনেক সভায়। ফলে প্রকল্পটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। ওই সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০৬ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প প্রস্তাবনা পুনর্গঠন করে একনেক নির্দেশিত বিষয়গুলো প্রকল্প প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নতুন পুনর্গঠিত ব্যয় ২৫০ কোটি টাকা ধরে প্রকল্পটি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
×