ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দপুরে তৈরি তৈজসপত্র যাচ্ছে ভুটানে

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সৈয়দপুরে তৈরি তৈজসপত্র যাচ্ছে ভুটানে

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ উন্নতমানের তৈরি কিচেন আইটেম তৈজসপত্র দেশের বাজার দখল করে এবার বিদেশের বাজারে রফতানি হচ্ছে। সৈয়দপুরের রয়েলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের নোয়াহ-কারখানায় তৈরি হচ্ছে এ্যালুমিনিয়াম কিচেন আইটেম, হাঁড়ি, পাতিল, জগ, ননস্টিক ফ্রাইপ্যান, ক্যাসল, কড়াই, তাওয়াসহ রকমারি পণ্য। নোয়াহ গ্রুপের রয়েলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজটি প্রায় সাড়ে তিন একর জমিতে গড়ে ওঠে ১৯৭৮ সালে। প্রথমে কারখানাটিতে শুধু এ্যালুমিনিয়াম পণ্যসামগ্রী তৈরি করে গোটা উত্তরাঞ্চলের বাজার দখলে নেয়। তারপর ২০০৭ সালে শুরু হয় প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, গ্যাস চুলা, ননস্টিকের নানা পণ্য তৈরির কাজ। মানসম্মত পণ্য হওয়ায় দ্রুত তা বাজারে স্থান করে নেয়। ঢাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় রয়েলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের নোয়াহর প্যাভিলিয়নও স্থান পেয়েছে। কারখানায় বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন প্রায় সাড়ে তিনশ’ নারী-পুরুষ শ্রমিক-কর্মচারী। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাদের শ্রমে ও মালিকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কারখানায় তৈরি হচ্ছে বিদেশে রফতানিযোগ্য এসব কিচেন আইটেম। এরই মধ্যে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পাঠানো হয়েছে ভুটানে। সেখানে দিন দিন কিচেন আইটেমের এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সেই সঙ্গে ভুটান হতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নোয়াহ গ্রুপের রয়েলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজটির তৈরি এসব সামগ্রী তাদের দেশে আমদানি করতে চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কারখানার মালিক নীলফামারী চেম্বারের নির্বাহী সদস্য রাজকুমার পোদ্দার জানান, উৎপাদিত এ্যালুমিনিয়াম প্রেসার কুকার, নন-স্টিকের তৈজসপত্র, স্টিলের বাসনপত্র, ইলেকট্রিক রাইস কুকার, গ্যাস চুলা ইত্যাদি আন্তর্জাতিকমানের। এর মধ্যে প্রেসার কুকার, নন-স্টিকের তৈজসপত্র তৈরিতে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে এ্যালুমিনিয়াম সার্কেল, পিটিএফআই কোটিং, ফিটিংস সামগ্রী, পলিশিং মেটেরিয়াল, পলিশিং বাফ, এ্যালু: প্রোফাইল, এসএস সার্কেল, এসএস ফিটিংস ও ইলেকট্রিক রাইস কুকারের পার্টস, এএস সার্কেল আমদানি করতে হয়। কিন্তু এই এসএস সার্কেলের নির্দিষ্ট এইচএস কোড বা সঠিক শ্রেণীর বিন্যাস না থাকার কারণে শুল্ক কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামতো শুল্কায়ন নির্ধারণের কারণে এ ধরনের শিল্প কারখানা বিকশিত হতে পারছে না। ফলে এই কারখানার প্রেসার কুকার উৎপাদন বন্ধ করে বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। পাশাপাশি সৈয়দপুরে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় উৎপাদনে মাঝে-মধ্যে বিঘœ ঘটে কারখানায়। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিংসহ নানা সমস্যার কারণে প্রতিযোগিতার বাজারে প্রতি মুহূর্তেই হোঁচট খেতে হয়। নীলফামারী চেম্বারের সভাপতি মারুফ জামান বলেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় ও অহেতুক ট্যাক্স এবং ভ্যাটের কবলে পড়ে এসব কারখানার মালিকের উৎপাদনে ব্যয় বাড়ছে। শিল্প-কারখানার সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত এসব সমস্যা দূর করা হলে এই অঞ্চলে শিল্প-কারখানা আরও বিকশিত হবে। ফলে এলাকার হাজার হাজার বেকার মানুষের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে বলে তিনি মনে করেন।
×