ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মা সেতু পুনর্বাসন ৪ স্কুলে বুধবার ক্লাস শুরু

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পদ্মা সেতু পুনর্বাসন ৪  স্কুলে বুধবার  ক্লাস শুরু

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ পদ্মা সেতুর পুনর্বাসন স্কুল চালু হচ্ছে। চারটি স্কুলেই একযোগে ক্লাস শুরু হচ্ছে আগামী বুধবার। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একজন প্রধান শিক্ষকসহ ২১ শিক্ষকের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। আরও তিন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। ‘পদ্মা সেতু পুনর্বাসন প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্র, যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাকরেরকান্দি পুনর্বাসন কেন্দ্র ও শরীয়তপুরের নাওডোবা পুনর্বাসন কেন্দ্রে এই চার স্কুল। এই স্কুলে পুনর্বাসন কেন্দ্রে বসবাসরত পরিবারের শিশু ছাড়াও আশপাশ এলাকার শিশুদের পড়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে ছাত্র ভর্তি শুরু হয়ে গেছে। ‘রিক’ নামের একটি এনজিও’র মাধ্যমে এই শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। এ সব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (পুনর্বাসন) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন শুক্রবার বিকেলে জনকণ্ঠকে বলেন, এই চার স্কুল চালু ছাড়াও পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঁচটি হাসপাতাল চালু হচ্ছে শীঘ্রই। পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্যই এগুলো চালু করা হচ্ছে। তিনি জানান, এনজিও ‘রিক’ এই পাঁচটি হাসপাতালের স্বাস্থ্য উপকরণ-সরঞ্জামাদি এবং চিকিৎসক নিয়োগের কাজ করছে। এই পাঁচটি হাসপাতাল চালু হচ্ছে- মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ও যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে, মাদারীপুরের শিবচরের বাখরেরকান্দি পুনর্বাসন কেন্দ্র, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা পুনর্বাসন ও পশ্চিম নাওডোবা পুনর্বাসন কেন্দ্রে। পূর্ব ও পশ্চিম নাওডোবা পুনর্বাসন কেন্দ্র মিলে একটি স্কুল করা হলেও হাসপাতাল করা হয়েছে দু’টি। এই পাঁচ পুনর্বাসন কেন্দ্রের ২৭শ’ প্লটের মধ্যে ইতোমধ্যে ২ হাজার ২৬২টি প্লট বরাদ্দ হয়ে গেছে। বাকি প্লটগুলোর বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরিকল্পিত এবং আধুনিক নানা সুবিধা সংবলিত পুনবার্সন কেন্দ্রেগুলোতে এখন প্রাণের স্পন্দন। পরিবারগুলোর বসবাসের পর নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। পদ্মা সেতু তৈরি ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় এমন আরও কিছু করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় প্রাণী জাদুরঘরটি আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এই জাদুঘরটির অবস্থান মাওয়ার পার্শ্ববর্তী দোগাছির এক নম্বর সার্ভিস এরিয়ায়। হোসেন জানান, পদ্মা ও আশপাশের প্রায় ১ হজার প্রজাতির প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এখানকার জীববৈচিত্র্য ঠিক রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রকল্প এলাকায় ২ লক্ষাধিক বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। বসন্তে পুরো এলাকার প্রকৃতিতে সেজেছে ভিন্ন রূপে। শীত বিদায় নেয়ার পর ঋতরাজ বসন্তে রং ছড়াচ্ছে এখানে। পদ্মার মাঝে চরগুলোতে নানা পরিবর্তন এসেছে। এরই মাঝে চলছে সেতুর নির্মাণযজ্ঞ। পদ্মায় এ পর্যন্ত ৪৬টি পাইল বসেছে। জাজিরা প্রান্তে ৩৭ থেকে ৩৮ নম্বর পিলারে কংক্রিটিংয়ের কাজ চলছে এখনও। ৪০ এবং ৪১ নম্বর পিলারে ৩টি করে পাইল বসছিল। এখন আরও ৩টি করে পাইল বসানোর কাজ চলছে। সেতুর সর্বশেষ ট্রানজ্যাকসন পিলার অর্থাৎ ৪২ নম্বর পিলারে ২, ৬ ও ৮ নম্বর পাইল স্থাপনের পর লোড টেস্ট বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে। এই তিনটি পাইল লোড টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্কোরও বেশ ভাল। তাই এখন আরও দু’টি অর্থাৎ ১৬ এবং ১৪ নম্বর পাইল স্থাপনের কাজ শুক্রবার শুরু হয়েছে। ৪২ নম্বর পিলারে ১৬টি পাইল বসবে। এদিকে জাজিরা প্রান্তে ভায়াডাক্টের (সংযোগ সেতু) ৫৫টি পাইল স্থাপন হয়ে গেছে। এই সংযোগ সেতুতে ১৯৩টি পাইল বসবে। মাওয়া প্রান্তের ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর পিলারে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। তবে এখনও পাইল ড্রাইভ শুরু করা যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জাজিরা প্রান্তের নদীর পিলারগুলোর ৬টি করে পাইল স্থাপনের পর হ্যামার মাওয়া প্রান্তে আনা হতে পারে। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির পক্ষে আনা ১২ বিশেষজ্ঞ এখনও প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছে। মূল সেতুর কাজে গতি আনতে কাজ করছেন তাঁরা । এই ১২ জনের মধ্যে দু’জন যুক্তরাষ্ট্রের এবং বাকিরা চীনা। এদিকে চীনে সেতুর সুপার স্ট্রাকচার তৈরির কাজও চলছে হরদম। সেতু কর্তৃপক্ষের তিনজন ওয়েল্ডিং বিশেষজ্ঞ সেখানে এই কাজ তদারকি করছেন। এরা হচ্ছেন- একজন কুরিয়ান বিশেষজ্ঞ চিম জংকি এবং দু’বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞ এনামুল হক ও রমজান আলী ম-ল। এছাড়া মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিধি দল সেখানে যাচ্ছে কাজের গুণগতমান নিরীক্ষায়। সুপার স্ট্রাকচারের ছটি স্প্যান ইতোমধ্যেই মাওয়ার কুমারভোগ ওয়ার্কসপে পৌঁছে। চীনে আরও ১৮টি স্প্যান তৈরি প্রায় সম্পন্ন। এগুলো খ- খ- আকারে পর্যায়ক্রমে সমুদ্র পথে
×