ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মসুলে আইএস জঙ্গীদের বর্বর কৌশল

গাড়িবোমায় ব্যবহৃত হচ্ছে শিশু ও প্রতিবন্ধী

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গাড়িবোমায় ব্যবহৃত হচ্ছে শিশু ও প্রতিবন্ধী

ইসলামিক স্টেটের জঙ্গীরা শিশু ও প্রতিবন্ধীদের আত্মঘাতী হামলা চালাতে জবরদস্তি মূলকভাবে ব্যবহার করছে। জঙ্গীরা বিস্ফোরকভর্তি ট্রাকে তাদের উঠিয়ে দিয়ে মসুলে অবস্থানরত ইরাকি বাহিনীর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের এক জেনারেল এ কথা জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, আইএস তাদের পরাজয় জেনেই যুদ্ধক্ষেত্রে এই বর্বর কৌশল বেছে নিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। আইএস জঙ্গীরা আত্মঘাতী হামলা চালাতে যে বিস্ফোরকভর্তি ট্রাক ব্যবহার করেছে, তা সেনা সদস্যদের কাছে ভেহিকেল ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ভিবিআইইডি) নামে পরিচিত, এককথায় ভি-বিডস। মসুল ও ইরাকের অন্যান্য স্থানে এ ধরনের কয়েকটি হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বাগদাদে মার্কিন বিমানবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ম্যাট ইসলার এএফপি ও অন্যান্য প্রতিবেদককে বলেন, আইএস জঙ্গীরা আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালানোর জন্য নতুন এই জবরদস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কারণ, তারা এখন গাড়ি বোমা হামলা চালানোর জন্য ইচ্ছুক চালক পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি মানুষজনকে গাড়িতে বেঁধে ভিবিআইইডি চালাতে বাধ্য করতে। আমরা দেখেছি, শিশুদের ভিবিআইইডিতে চালক হিসেবে ব্যবহার করতে এবং যেসব লোক হাঁটতে পারে না তাদেরও। আমি জানি না, তারা এ কাজের জন্য ইচ্ছুক কি না।’ জোট সৈন্যরা প্রায়ই দেখেছে, অভিযান থেকে ভিবিআইইডির পিছুটান। চালকরা গতি ও দিক পরিবর্তন করে এবং কাঠামোর আড়ালে লুকাতে চেষ্টা করে। ইসলার বলেন, ‘আমরা ভিবিআইইডিকে আক্রমণ করতে এসে আক্রমণ না করে লুকাতে দেখেছি। আমরা দেখি আইএসের কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ শাখা চেষ্টা করছে তাদের ভিবিআইইডি চালকদের খুঁজে বের করতে। তিনি বলেন, জোট সৈন্যরা প্রথমে চালকদের ট্রাকের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখে যখন ইরাকি বাহিনী পূর্ব মসুলমুক্ত করার জন্য টাইগ্রিস অভিমুখে যাচ্ছিল। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলমুক্ত করতে গত অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু হয়। পূর্ব মসুলমুক্ত করার পর ইরাকি বাহিনী রবিবার পশ্চিম মুসল থেকে আইএস জঙ্গীদের তীব্র প্রতিরোধ উপেক্ষা করে সেখানে হামলা শুরু করেছে। ২০১৪ সালে জঙ্গীরা দখল নেয়ার পর এই প্রথমবারের মতো ইরাকি বাহিনী বৃহস্পতিবার মসুলের দক্ষিণ প্রান্তে আইএসের কাছ থেকে তাদের শক্ত ঘাঁটি মসুল বিমানবন্দর পুনরায় দখল করে নিয়েছে। দক্ষিণ মসুলে বিমান, হেলিকপ্টার গানশিপ ও ড্রোনের আক্রমণের সহায়তায় ইরাকি বাহিনী বিমানবন্দরের কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে। তবে তারা প্রথম দিকে কিছুটা প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। তারা সেখানে সন্দেহভাজন জঙ্গীদের আস্তানাগুলোয় হামলা চালায়। জঙ্গীদের নিহত হওয়া ও এলাকা হারানোর প্রেক্ষাপটে আইএস প্রতিঘাতের জন্য নতুন নতুন কৌশলের উদ্ভাবন ঘটাচ্ছে। তারা ছোট ছোট ড্রোনের মধ্যে বোমা রেখে তা সৈন্য ও সাধারণ মানুষের ওপর ব্যবহার করছে।
×