ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ হেফাজতে দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পুলিশ হেফাজতে দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ

সংবাদদাতা, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ॥ সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানায় কর্মরত এক এসআইয়ের হেফাজতে থাকা দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের মারপিটে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার কোদালিয়া বৈন্যা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ঠা-ু মিয়া (৪৫) টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দেওজান সলিল গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে নিহতের শ্বশুর রায়হান আলী অভিযোগ করে, বুধবার সন্ধ্যার পর বৈন্যা মোড়ে দিনমজুর জামাতা ঠা-ু মিয়া অবস্থান করছিল। এমন সময় চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম মোটরসাইকেল যোগে সাদা পোশাকে একা সেখানে পৌঁছে ঠা-ুর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে। সেখানে আশপাশের বেশকিছু লোকজন জমায়েত হয়ে তার কাছে আটকের কারণ জানতে চাইলেও তিনি বলেননি। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ঠা-ুকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরই জানতে পারি, জামাতাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এখানে এসে পেলাম জামাতার লাশ। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। ঠা-ুকে এএসআই রবিউল অন্যায়ভাবে আটকের পর মারপিট করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকা-ের বিচার চাই। ঠা-ুর বিরুদ্ধে কোন থানায় একটি মামলাও নেই বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে এএসআই রবিউল ইসলাম বলেন, থানার ওসির নির্দেশে ঠা-ু মিয়াকে আটক করেছিলাম। মোটরসাইকেলে আনার পথে সে লাফ দিয়ে পালানোর সময় মাথায় গুরুতর জখম হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধারের পর নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঠা-ুকে মৃত ঘোষণা করেন। নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ রাম প্রসাদ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠা-ুকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই ঠা-ু মারা গেছে। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। মাথা থেঁতলে গেছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর সার্কেলের এএসপি শাহাদত হোসেন, নাগরপুর থানার ওসি জহিরুল ইসলাম ও চৌহালী থানার ওসি আকরাম হোসেন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সংবাদ পেয়ে নিহতের স্বজনরাও হাসপাতালে ভিড় করে। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে চৌহালীতে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে নাগরপুর থানার ওসি বলেন, নিহত ব্যক্তি নাগরপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও ঘটনাস্থল চৌহালী উপজেলায় হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে চৌহালী থানা পুলিশের কাছে ঠা-ুর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে জানতে চৌহালী থানার ওসি আকরাম হোসেনের সরকারী নম্বরে একাধিকবার মোবাইল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
×