ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চুম্বকশক্তি থেকে বিদ্যুত উৎপাদন

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

চুম্বকশক্তি থেকে বিদ্যুত উৎপাদন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ॥ চুম্বকীয় শক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুত উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শরীফুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবক। এজন্য বিশেষ কায়দায় তৈরি একটি যন্ত্র তিনি বানিয়েছেন। যন্ত্রের ভেতর পারদ ও চুম্বক দিয়েই তৈরি হচ্ছে বিদ্যুত। দীর্ঘদিন গবেষণার পর তিনি এ বিষয়ে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করছেন। উৎপাদিত বিদ্যুতের নাম তিনি দিয়েছেন ‘ফ্রি এনার্জি ম্যাগনেটিক পাওয়ার’। শরীফুলের ভাষ্য অনুযায়ী, তার যন্ত্রের ভেতরে শুধু পারদ ও চ্ম্বুক বিশেষ কায়দায় ব্যবহার করা হয়েছে। সেই চুম্বক থেকে প্রতিদিন ৯০০ ওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হয়। যা দিয়ে ১টি ফ্রিজ, ১টি টিভি, ২টি ফ্যান ও ৩টি বাতি জ্বালানো যায়। যন্ত্রটি তৈরিতে খরচ পড়বে ১৫ হাজার টাকার মতো। শরীফুলের দাবি, একবার যন্ত্রটি চালু করা হলে ৩০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুত পাওয়া যাবে। শরীফুলের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানাধীন বাসিরা গ্রামে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের রাজৈন্দ্রপুরে তার উদ্ভাবিত বৈদ্যুতিক যন্ত্রটি কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদকে দেখাতে নিয়ে আসেন। এ সময় শত শত লোকের সামনে উদ্ভাবিত বিদ্যুত থেকে টেলিভিশন ও কয়েকটি বাতি জ্বালিয়ে দেখান শরীফুল। এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ বলেন, শরীফুলের তৈরি যন্ত্রটি দিয়ে বিদ্যুত উৎপন্ন হচ্ছে। আমরা টিভি ও বাতি জ্বালিয়ে তার প্রমাণ পেয়েছি। এটা বাণিজ্যিকভাবে করা গেলে এই সেক্টরে বিশাল সাফল্য পাওয়া যাবে। শরীফুল ইসলাম জানান, অভাব-অনটনের কারণে তিনি ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এর পর জীবিকার তাগিদে ২০০৩ সালে চলে যান দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে একটি ইলেক্ট্রনিক পণ্য তৈরির কারখানায় কাজ পান। অবসর সময়ে ওই কারখানায় বসেই শুরু করেন গবেষণা। ৪ বছর পর দেশে চলে এলেও গবেষণা কর্ম থেমে থাকেনি। এর পর ২০০৭ সালে আবারও তিনি কাজের সন্ধানে মালেশিয়া চলে যান। সেখানেও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একই কাজ করতেন। এর পর ২০১৫ সালে দেশে এসে পুরোমাত্রায় গবেষণা চালিয়ে চুম্বক ও পারদ থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করতে সক্ষম হন তিনি। প্রথমদিকে তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি ১৬০ ওয়াট বিদ্যুত উৎপন্ন করতে সক্ষম ছিল। বর্তমানে যন্ত্রটির উৎকর্ষ সাধন করে ৯০০ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুত উৎপন্ন করা যাচ্ছে। শরীফুল বলেন, বিদ্যুত উৎপন্ন করার যন্ত্রটি তৈরি করতে ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। একবার যন্ত্রটি চালু হলে ৩০ বছর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত পাওয়া যাবে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে যন্ত্রটি বাজারজাত করার ইচ্ছে আছে।
×