ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় সেমিনারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট

চীন ও ভারতের সঙ্গে এ দেশে প্রতিযোগিতায় নামেনি যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

চীন ও ভারতের সঙ্গে এ দেশে প্রতিযোগিতায় নামেনি যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, বাংলাদেশে চীন অথবা ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়নি। বাংলাদেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভারত, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একই লক্ষ্য। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্ডিপেডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে চীন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতামূলক সহযোগিতার বিকাশ সাধন’ -শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করে ইন্ডিপেডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইন্ডিপেডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাশেদ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এম ওমর রহমান, বিমসটেকের পরিচালক কুনজাং এন তসেরিন প্রমুখ। সেমিনারে মার্শা বার্নিকাট বলেন, আমি একটি শ্রুতিকথা ঘুচাতে চাই। সেটা হলো বাংলাদেশের কোন বিষয়ে চীন অথবা ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কোন প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়নি। আমরা সকলেই বাংলাদেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা চাই। এ বিষয়ে আমাদের সকলেরই লক্ষ্য একই। বাংলাদেশের উন্নয়নে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সময় স্বাগত জানায়। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য থাকে যে, সেটা যেন আইনের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। তবে বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে অপর্যান্ত আঞ্চলিক যোগাযোগ কাঠামোর জন্য এই সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ হতে পারে এই অঞ্চলের অর্থনীতি ও বিনিয়োগের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। কেননা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের কৌশলগত যে অবস্থান রয়েছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে খুবই আগ্রহী। যখন মার্কিন কোন কোম্পানি নতুন কোন বাজারে প্রবেশ করে, তখন তারা বড় আকারের দক্ষতা, পুঁজি এবং প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়। বাংলাদেশে কাজ করা মার্কিন কোম্পানিগুলো স্থানীয় শ্রম শক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতার উপযোগী করার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান ও পরিবেশ বজায় রাখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গত দুই দশক ধরে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ ধরে রাখা, বড় আকারের যুব ও নির্ভরযোগ্য শ্রমশক্তি, সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বিশাল বাজার, সৃজনশীল বেসরকারী খাত এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কৌশলগত স্থানে এর অবস্থান এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়। সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক উৎপাদন আরও বাড়ানো এবং সমন্বিত জ্বালানি গ্রিডের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি সমস্যার অনেকটা সমাধান হতে পারে বলে পরামর্শ দেন বার্নিকাট। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর কেন্দ্রে থাকায় বাংলাদেশে বিমসটেকের সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করেন সংস্থার পরিচালক কুনজাং এন তসেরিন। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কারণে বিমসটেকের কার্যক্রম পরিচালনা কিছুটা জটিল মন্তব্য করেন তিনি বলেন, আমরা অনেক কিছু করি, যেটা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সঙ্গে খাপ-খাইয়ে চলতে হয়। আমরা বাণিজ্য, যোগাযোগ ও জ্বালানি নিয়ে কথা বলি, আমরা বলি আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা নিয়ে, মানুষ ও মাদক পাচার নিয়ে। আবার এসব ক্ষেত্রে দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও পাওয়া যায়। তবুও বিমসটেকের পক্ষ থেকে নানা ধরনের কাজের সুযোগ খুঁজে বের করার চেষ্টা হয় বলে মন্তব্য করেন তসেরিন। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে কানেক্টিভিটি বিমসটেকের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার জানিয়ে সংস্থাটির বাংলাদেশ পরিচালক তসেরিন বলেন, সেটা করার জন্য সদস্যগুলোতে নানা ধরনের সম্মেলন ও সেমিনার আলোচনার আয়োজন আমাদের রয়েছে। সমন্বয়ের জন্য আশিয়ান ও সার্কের সঙ্গেও কাজ রয়েছে আমাদের।
×