ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার এ্যাপারেল সামিটে যোগ দিচ্ছে না ৫ ব্র্যান্ড

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঢাকার এ্যাপারেল সামিটে যোগ দিচ্ছে না ৫ ব্র্যান্ড

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তথাকথিত শ্রমিক ছাঁটাই এবং শ্রমিক নেতাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনে এমন পাঁচটি বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ঢাকায় আসন্ন এ্যাপারেল সামিট বর্জন করছে। মূলত শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠনের উসকানিতে এসব ব্র্যান্ড ঢাকার এই তৈরি পোশাকের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। এই পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় পোশাক ব্র্যান্ড হলো এইচএ্যান্ডএম, জারা, সিএ্যান্ডএ, নেক্সট এবং টিচিবো। আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার সংগঠন ক্লিন ক্লোদস ক্যাম্পেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে এই ব্র্যান্ডগুলো অংশ নিচ্ছে না। তাদের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে সম্প্রতি আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনের পর অন্তত ১৫০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। এছাড়াও কমপক্ষে ৩৪ জন শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতাকেও আটক করা হয়। তবে বাংলাদেশে শ্রমিক ছাঁটাই এবং শ্রমিক নেতাদের হয়রানি বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকার এবং বিক্রেতাদের ওপর চাপ দেয়ার জন্য পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে এখনও দেন-দরবার করছে ক্লিন ক্লোদস। কিন্তু শুধু কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড একটি অনুষ্ঠান বর্জন করলে কতটা চাপ তৈরি হবে? বিবিসির এ প্রশ্নের জবাবে নেদারল্যান্ডসে ক্লিন ক্লোদস ক্যাম্পেনের মুখপাত্র মিরিয়াম ভ্যান হিউটেন বলেন, এই বয়কটের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি কঠোর বার্তা যাবে। এর ফলে বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি পরিষ্কার সংকেত যাবে যে যদি না গ্রেফতারকৃত শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতাদের মুক্ত করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগ বাতিল করা হয়, হয়রানি বন্ধ না করা হয় তাহলে এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া সম্ভব নয়। ক্লিন ক্লোদসের ওই মুখপাত্র আরও যোগ করেন, ‘শুধু অনুষ্ঠান বয়কটই যথেষ্ট নয়, আমরা ব্র্যান্ডগুলোকে বলছি তোমরা স্পষ্টভাবে সবাইকে জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে বলো ইউনিয়ন নেতাদের সাজানো মামলা তুলে নিতে হবে এবং আইনসঙ্গতভাব সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মিরিয়াম ভ্যান হিউটেন আরও দাবি করেন ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে চুক্তিতে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং বিরোধ নিষ্পত্তির সঠিক কাঠামো থাকতে হবে। বাংলাদেশের সরকার এবং সে দেশের পোশাক খাতের মালিকপক্ষ অবশ্য শ্রমিক নির্যাতনের এসব অভিযোগ আগাগোড়াই অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে এসব অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। যদি এসব আহ্বানকে বা বয়কটকে বাংলাদেশের সরকার বা পোশাক খাত অগ্রাহ্য করে, তাহলে তাদের সামনে কী করার থাকবে? বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে ক্লিন ক্লোদসের মিরিয়াম ভ্যান হিউটেন জানান, শ্রমিকের অধিকার খর্ব করার বিষয়টি তদন্ত করতে তারা ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইবিএ চুক্তিতে এই অধিকার নিশ্চিত করার শর্ত আছে। গ্লোবাল ইউনিয়ন ফেডারেশনের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা ইইউর কাছে এই দাবি করেছি। ক্লিন ক্লোদস ক্যাম্পেন বলেন, যদি তদন্তে চুক্তির বরখেলাপ প্রমাণিত হয় তাহলে বাংলাদেশকে দেয়া বিশেষ বাণিজ্য সুবিধাও স্থগিত করতে হবে।
×