ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাংকের অবদান সামান্য

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

দেশের অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাংকের অবদান সামান্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্বধীনতার পর থেকেই দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের অংশীদার প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক। যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ প্রকল্পকে যেমন সর্বাধিক সফল প্রকল্প হিসেবে দেখায় বিশ্বব্যাংক, তেমনি পদ্মা সেতু প্রশ্নে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। মাঝে বিভিন্ন সরকারের সময়কালে ঋণের সঙ্গে বিভিন্ন শর্তের বেড়াজাল বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের পারদে ঘটিয়েছে ওঠা-নামা। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত পটভূমি থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত সংস্থাটি থেকে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না বিশ্বব্যাংকের। তবে জিয়া ও এরশাদ আমলে সরকারী প্রতিষ্ঠানের বেসরকারীকরণসহ নানা শর্তে বিশ্বব্যাংকের ঋণের জালে জড়ায় বাংলাদেশ। তখন থেকেই ‘সফট লোন’ এর নামে স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ‘অপমানজনক’ নীতি কাঠামো সংস্কারের নানা প্রেসক্রিপশন দিয়েছে পশ্চিমা ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি। সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিভিন্ন সময় নানা মাত্রায় থাকলেও দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাংকের অবদান ‘সামান্যই’। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে আমি বলব যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা, কারিগরি সহযোগিতা এবং গবেষণার দিক থেকে সহযোগিতা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে কিছুটা অবদান রেখেছে। ৯০ এর দশকে পোশাক খাতের বিপুল অগ্রযাত্রা ও রেমিটেন্সের শক্ত ভিত্তি পেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দেশের অর্থনীতি। সেই সঙ্গে শুরু হয় এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন। সামগ্রিক দিক বিবেচনায় অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাংকের ভূমিকাকে নেতিবাচক বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ। অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম. এ. মান্নানের মতে, নানা সময়ে বিশ্বব্যাংক তাদের শর্তের জালে বাংলাদেশকে আবদ্ধ করতে চেয়েছে ঠিকই। তবে এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। ২শ’ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতির এ দেশে বর্তমানে বৈদেশিক ঋণ ২৪ বিলিয়ন ডলার। তাই সাম্রাজ্যবাদী প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত ঋণের শর্ত হজম করার দরকার খুব একটা নেই বলেও মন্তব্য তার।
×