অনলাইন ডেস্ক ॥ আইপিএলের দশম সংস্করণের হৈ হৈ করে শেষ হল নিলাম পর্ব। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ক্রিকেটার কিনল ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। কেউ ছুটল বড় নামের পিছনে, তো কেউ বাজি রাখল উঠতি প্রতিভাদের উপর। আইপিএলে কিন্তু এরকম একাধিক নজির রয়েছে, যেখানে প্রচুর টাকা দিয়ে কেনা নামেরা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে পরের মরসুমেই তাঁদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিপুল অঙ্কে নিলাম থেকে কেনা তেমনই কিছু ফ্লপ তারকাকে।
অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ: আরসিবি থেকে সেই ২০০৯ সালে প্রায় ১৬ লক্ষ ডলারে চেন্নাই সুপার কিঙ্গসে এসেছিলেন ইংল্যান্ডের এই বিখ্যাত অলরাউন্ডার। চেন্নাইয়ের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র তিনটে ম্যাচ। অবদান ছিল ৬২ রান এবং তিন উইকেট। এর পরেই চোটের জন্য ছিটকে যান ফ্লিন্টফ।
রবিন উথাপ্পা: ২০১১ সালে কর্নাটকের এই ব্যাটসম্যানকে ২১ লক্ষ ডলারে কিনে সবাইকে চমকে দেয় পুণে ওয়ারিয়র্স। ১৫ ম্যাচে মাত্র ১৭৫ রান করেন উথাপ্পা।
ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ান: অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের হয়ে হাতে গোনা কিছু ম্যাচ খেলা এই অলরাউন্ডারকে ন’লক্ষ ডলারে কেনে ডেকান চার্জার্স। দু’বছর ডেকানে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান। ২১ ম্যাচে ১৯ উইকেট এবং ৩৩৫ রান করেছিলেন। সাদামাটা পারফরম্যান্সে হতাশ হয়েছিল ডেকান সমর্থকরা।
সৌরভ তিওয়ারি: ২০১০ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে অসাধারণ খেলা এই ঝাড়খণ্ডিকে ১৬ লক্ষ ডলারে দলে নিতে দ্বিতীয় বার ভাবেনি বেঙ্গালুরু। কিন্তু তাঁকে নেওয়া যে কত বড় ক্ষতি, তা মরসুমের শেষে বুঝেছিল আরসিবি। দল ফাইনালে উঠলেও ১৬ ম্যাচে মাত্র ১৮৭ রান করেন সৌরভ। খাতায় ছিল না একটি হাফ সেঞ্চুরিও।
অভিষেক নায়ার: আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফ্লপ মুম্বইয়ের এই অলরাউন্ডার। প্রায় ৭ লক্ষ ডলারে কেনা এই অলরাউন্ডার পুণের হয়ে ন’ইনিংসে ৬৬ রান করেন, নেন দু’উইকেট।
দিনেশ কার্তিক: ২০১৪ সালের নিলামে দিনেশ কার্তিককে প্রায় সাড়ে বারো কোটি টাকায় কেনে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ১৪ ম্যাচে মাত্র ৩২৫ রান করেন কার্তিক। লিগের শেষ দল হিসাবে টুর্নামেন্ট শেষ করে দিল্লি।
ইরফান পাঠান: ২০১১ সালে ১১ কোটি টাকা দিয়ে এই অলরাউন্ডারকে কেনে দিল্লি। তিন বছর দিল্লির হয়ে খেলে ৪৭ ম্যাচে মাত্র ৪৬৮ করেন ইরফান, নেন ২৯ উইকেট। হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর তাঁকে ছেড়ে দেয় দিল্লি।
রবীন্দ্র জাদেজা: এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে ২০১২ সালে প্রায় সাড়ে বারো কোটি টাকায় কেনে চেন্নাই। মরসুমে মাত্র ১৯১ রান করেন জাডেজা, নেন ১২ উইকেট।
মুরলি বিজয়: চেন্নাইয়ের হয়ে ২০১৩ সালে দুর্দান্ত খেলা এই ওপেনারকে ৫ কোটি টাকায় কেনে দিল্লি। ১১ ম্যাচে মাত্র ২০৭ রান করেন বিজয়।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ: পুণের আর এক ফ্লপ তারকা শ্রীলঙ্কার এই অলরাউন্ডার। ৬ কোটির অলরাউন্ডার ২০ ম্যাচে ২৯৯ রান করেন, নেন ১২ উইকেট।
পবন নেগি: আইপিএল ৯-এ সবাইকে চমকে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা দিয়ে চেন্নাইয়ের প্রাক্তন এই অলরাউন্ডারকে কেনে দিল্লি। ৮ ম্যাচে মাত্র ৫৭ রান করেন নেগি, নেন এক উইকেট।
মুরুগান অশ্বিন: এই অনামি স্পিনারকে সাড়ে ৪ কোটি টাকায় কেনে রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস। মরসুমে ওভার প্রতি প্রায় ৯ গড়ে মাত্র ৭ উইকেট নেন অশ্বিন।
দীপক হুড়া: রাজস্থানের হয়ে আইপিএলে দুর্দান্ত খেলা হুড়াকে সাড়ে ৪ কোটি দিয়ে কেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। মরসুমে ১৭ ম্যাচে মাত্র ১৪৪ রান করেন হুড়া।
স্টুয়ার্ট বিনি: ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএলে পরিচিত নাম স্টুয়ার্ট বিনি। ২০১৬ সালে নিলামে ২ কোটি টাকা দিয়ে স্টুয়ার্ট বিনিকে ঘরে তোলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার। কিন্তু ডাহা ফেল করেন এই অলরাউন্ডার। ১৪টি ম্যাচে তাঁর সংগৃহীত রান ছিল মাত্র ৬৩। একটি মাত্র উইকেট পেয়েছিলেন।
কাইল অ্যাবট: দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার কাইল অ্যাবট গত বছর বিক্রি হয়েছিল ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকায়। ৩০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসের এই ক্রিকেটারকে কোটি টাকা দাম দিয়ে কেনে প্রীতি জিন্টার দল। কিন্তু গোটা টুর্নামেন্টে বেশির ভাগ ম্যাচই রিজার্ভ বেঞ্চে কাটিয়েছেন। মাত্র ৫টি ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৬-র আইপিএলে। সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি অ্যাবট। মোট রান ছিল মাত্র ১৩ এবং উইকেট নেন ২টি।
যুবরাজ সিংহ: বাইশ গজে যুবরাজের ব্যাট কথা বললে বাকিরা নিশ্চুপ থাকেন। ওয়ানডে বা টি২০ যে কোনও ফর্ম্যাটেই। ২০১৫ সালে যুবরাজকে ১৬ কোটি টাকায় রেকর্ড দামে কেনে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। কিন্তু প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে পারেননি তিনি। সেই বছর ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ১৯.০৭। গত বছর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন্স হলেও যুবরাজ সিংহের ব্যাট পারফরম্যান্স ছিল গড়পরতা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা