ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজও সন্ধান মেলেনি বিশ্বের রহস্যময় বইটির!

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আজও সন্ধান মেলেনি বিশ্বের রহস্যময় বইটির!

অনলাইন ডেস্ক॥ বিশ্বের রহস্যময় বইটি ঠিক কোথায় রয়েছে, বলতে পারেন না কেউই। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, বইটি ঠিক কোথায় না কোথায় রয়েছেই। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে খ্যাতনামা মার্কিন লেখক এইচ পি লাভক্র্যাফ্ট এই বইটিকে নিয়ে সরব হন। তার অসংখ্য গল্পে তিনি এই গ্রন্থের কথা লিখতে শুরু করেন। গ্রন্থটির নাম ‘নেক্রোনমিকন’। যতদূর জানা যায়, এই গ্রন্থটি আসলে আরবি ভাষায় লিখিত। পরে এর গ্রিক অনুবাদ ইউরোপের রহস্যবাদী কাল্টগুলোর হাতে পৌঁছায়। মনে করা হয়, ‘নেক্রোনমিকন’-এর লেখক আবু আলি আল-হাসান নামে জনৈক আরব। তাঁকে দামাস্কাসে ‘আরব আবদুল’ বলে ডাকা হতো। ইউরোপে তিনি ‘দ্য ম্যাড অ্যারাব’ নামেই পরিচিত ছিলেন। তাঁর আসল পরিচয় আজও জানা যায়নি। তবে এটুকু অনুমান করা হয় যে, ৮২৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ আরব আবদুল জীবিত ছিলেন। ‘ইরাম’ নামে কোনও এক গুপ্ত শহরে ১০ বছর থেকে তিনি বিস্তর গুপ্তবিদ্যা শিক্ষা করেন। তার পরে ‘আজিফ’ ছদ্মনামে এই বইটি লেখেন। তবে কী রয়েছে এই বইতে, তা কারো কাছেই স্পষ্ট নয়। লাভক্র্যাফ্ট-সহ অসংখ্য সাহিত্যিক মনে করেন, এই বই কালোজাদুর এক খনি। এতে পিশাচ-জাগরণের পদ্ধতি থেকে শুরু করে মৃতকে জীবিত করার উপায় পর্যন্ত বর্ণিত রয়েছে। যে ব্যক্তি এই বইটি পড়ে ফেলতে পারবেন, মহাজগতের সব রহস্য তাঁর হাতের মুঠোয়। মধ্যযুগে ইউরোপে যখন ডাকিনীবিদ্যার চর্চা তুঙ্গে, তখন ‘নেক্রোনমিকন’ নিয়ে পাগলামি বিপুল ভাবে দেখা দেয়। অসংখ্য মানুষ সন্ধান করতে থাকেন বইটির। তাল বুঝে বেশ কিছু নকলনবিশ ‘নেক্রোনমিকন’ নাম দিয়ে কল্পিত বই বাজারে ছাড়তে শুরু করে। অসংখ্য নকল ‘নেক্রোনমিকন’-এ ভরে যায় ইউরোপের গুপ্ত বইয়ের বাজার। ১৯২৭ সালে লাভক্র্যাফ্ট ‘নেক্রোনমিকন’-কে নিয়ে একটি কল্প-ইতিহাস লেখেন। ১৯৩৮-এ তা প্রকাশিত হলে তুমল হই চই পড়ে যায় পাশ্চাত্যে। এর পর থেকে মাঝে মাঝেই এই বইয়ের তথাকথিত খণ্ডাংশ, কল্পিত টীকাভাষ্য ইত্যাদি প্রকাশিত হতে শুরু করে। গুজব ছড়ায়, জারতন্ত্রী রাশিয়ার কুখ্যাত জাদুকর রাসপুটিন, নাৎসি নেতা হিমলার, এমনকী স্বয়ং হিটলারও একটি করে কপি হস্তগত করেছিলেন। তবে লাভক্র্যাফ্টের মতে, কোনও দিনই পুরো বইটাকে কেউ চাক্ষুষ করেননি। আজও অসংখ্য মানুষ বিশ্বাস করেন, কোথাও না কোথাও ‘নেক্রোনমিকন’ রয়েছে। কোন পুরনো লাইব্রেরির ধুলোভরা তাকে, কোন গির্জার ভূগর্ভস্থ ক্রিপ্ট-এ, কোন ব্যক্তিগত সংগ্রাহকের গোপন ভল্টে নিঃশ্বাস নিচ্ছে এই মহাগ্রন্থ। যিনি একে পড়ে ফেলতে পারবেন, তাঁর হাতে আসবে অগাধ ক্ষমতা। তিনি পৃথিবী শাসনের স্পর্ধা দেখাতে পারবেন। সূত্র: এবেলা।
×