ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৮ কোটি বছর আগের ব্যাঙ

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

৮ কোটি বছর আগের ব্যাঙ

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র আকৃতির ব্যাঙের খোঁজ মিলেছে ভারতে। দেশটির কেরল ও তামিলনাডুর দুর্গম বনাঞ্চলে দীর্ঘদিন অনুসন্ধানের পর বিশ্বের ক্ষুদ্র আকৃতির চার প্রজাতির ব্যাঙের খোঁজ পায় একদল গবেষক। কেরল ও তামিলনাডুর এসব বনাঞ্চলে আমাজন বনের মতো রহস্যময় প্রাণী বাস করে বলে মনে করা হয়। এসব ব্যাঙ আকারে এতই ছোট যে হাতের বুড়ো আঙ্গুলের ওপর এদের কয়েকটিকে অনায়াসে রাখা যায়। ব্যাঙগুলোর মাথা থেকে পা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১২ থেকে ১৬ মিলিমিটারের মধ্যে। এসব ব্যাঙের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো রাতে পোকার মতো শব্দ করতে পারে। ব্যাঙগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা, শারীরিক গঠন ও ডাকার ধরন পরীক্ষা করে মনে করা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ কোটি বছর আগে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় বনাঞ্চলে এই জাতীয় ব্যাঙের অস্তিত্ব ছিল। এই প্রজাতির ব্যাঙের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো মানুষের বাড়িঘরের আশপাশে মাটির সঙ্গে লেপ্টে থাকে। একই গবেষক দল ওই অঞ্চলে আরও ৭টি রাতে চলাচলকারী ব্যাঙের খোঁজ পেয়েছে। এই গবেষক দলটি কয়েক বছর ধরে ভারতের কেরল ও তামিলনাডু অঞ্চলে গবেষণা চালায়। মনে করা হয় আমাজন বনের মতো ভারতেরই এই অঞ্চলে কয়েক শ’ বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বাস করে। গবেষণা দলের সহকারী দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী গার্গ বলেন, ব্যাঙগুলোকে আমরা প্রথমে দেখে বিষ্মিত হয়েছিলাম। কারণ ধরে নেয়া হতো এই ধরনের ছোট ব্যাঙ বিপন্ন হয়ে গেছে। আর এগুলো আকারে এতই ছোট যে এগুলো কোন অনুসন্ধান দলের চোখে পড়ার কথা নয়। পোকার মতো শব্দ করতে পারে বলে প্রথমে এগুলোকে অনেকে ছোট পোকাই বলে মনে করবে। কিন্তু হাতে নিয়ে দেখলে বোঝা যায় এগুলো আসলে ব্যাঙ। আর এগুলো আকারে এতই ছোট যে, হাতের বুড়ো আঙুলের ওপর কয়েকটিকে বসিয়ে রাখা যায়। এই গবেষণা দলের নেতৃত্বে ছিলেন দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এসডি বিজু। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালিয়ে অন্তত ৮০ প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন তিনি। এসডি বিজু বলেন, ভারতের কেরল ও তামিলনাডুর এসব বনে বসবাসরত অন্তত ৩২ শতাংশ ব্যাঙের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর বাকি ব্যাঙগুলো রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। ৭ থেকে ৮ কোটি বছর আগের ব্যাঙ আবিষ্কারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের ফ্রগলাইফ সংগঠনের প্রধান ডক্টর লঁরা জারভিস। তিনি বলেন, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কারের বৈশ্বিক মূল্য রয়েছে। গবেষণাটি প্রখ্যাত পারজে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। -বিবিসি ও সায়েন্স ডেইলি অবলম্বনে
×