ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দল ॥ সংসদ উত্তপ্ত, তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিএনপি সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দল ॥ সংসদ উত্তপ্ত, তোলপাড়

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দল তা আজ প্রমাণ হয়েছে। কানাডার ফেডারেল কোর্ট এক রায়ে বলেছে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দল। এরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ভোটে জিততে পারবে না এটা বুঝতে পেরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আঘাত হানার নানা চক্রান্ত করছে। গোটা দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে অগ্নিসন্ত্রাসী বিএনপি নেত্রীর সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে রক্ষা করতে হবে। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রথমে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়া এবং পরে প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক বিমানমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, সরকারী দলের মনোরঞ্জন শীল গোপাল, নূরজাহান বেগম, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক বিমানমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, সারাবিশ্বে শেখ হাসিনার উন্নয়ন এখন রোল মডেল। দেশের সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বিশ্ব নেতারাও অবাক বিস্ময়ে দেখছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কানাডার ফেডারেল কোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী-সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিএনপি নেত্রীর দুই পুত্রই সারাবিশ্বে মহা দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষকে পেছনে ফেলা, পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার রাজনীতি। বিএনপি এখনও জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্বার গতিতে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অপশক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধীকার। তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে রক্ষার করতে আমরা জাতিকে কি প্রস্তুত করতে পেরেছি, নাকি বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা না করার মতো গ্লানিই আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে। জাতি স্বার্থবিরোধী অপশক্তি খালেদা জিয়া গংরা বুঝতে পেরেছে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করা যাবে না। তাই বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে সরিয়ে দিতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য সব এমপিকে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য বৃহৎ ব্যুহ রচনা করি। বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি একটি ব্যর্থ সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দল। এটা শুধু জাতীয়ভাবেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত হয়েছে। আমরা অনেক আগেই সেটা বলেছি। এখন কানাডার আদালতের রায়ে সেটা প্রমাণিত হলো। এই দল ও দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে জনগণ আর কখনই গ্রহণ করবে না। তিনি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান বানিয়ে ছিল। এই দলটি এখনও দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। পদ্মা সেতুতে কথিত দুর্নীতির অভিযোগের সময় খালেদা জিয়া যোগাযোগমন্ত্রীর বিচার দাবি করেছিলেন। এখন আদালতের রায় হওয়ার পর তিনি কী বলবেন? তার বিচার এখন কে করবে? নির্বিচারে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং ষড়যন্ত্রের জন্য অবশ্যই বিএনপির নেত্রীর বিচার হওয়া উচিত। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বলেন, মাত্র আট বছরেই দেশের সামগ্রিক চিত্রই পাল্টে দিয়েছেন। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সবদিক থেকে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষ সুখে-শাান্তিতে রয়েছে, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবরা ষড়যন্ত্র করেও সফল হননি। আন্তর্জাতিক আদালতেই প্রমাণ হয়েছে পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি হয়নি। সব ষড়যন্ত্রকারীদের সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেই শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করছেন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কানাডার আদালতের রায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারাবিশ্বে উন্নত হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের মুখে যে চপেটাঘাত দিয়েছেন, এতে ভবিষ্যতে তারা অসত্য দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে সাহস দেখাবে না। সারাদেশকে অন্ধকারাচ্ছন্ন রেখে এবং দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করে ক্ষমতায় থেকে বিদায় নিয়েছিল। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। নূরজাহান বেগম বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা জঙ্গী তৎপরতার মাধ্যমে দেশকে জঙ্গী-সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। আর পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির গুজব ছড়িয়ে দেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে চেয়েছে। কিন্তু সেই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত হয়েছে। ওই সব ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
×