ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Taslima Afroy

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান

Blessed with SHAH MD.IDRIS ALI & HAMIDA ALI C/O Md. Sofiul Haq Khandakar (Shohag) M.Sc. (First Class 1st), B.Sc. Hons. (First Class 9th) Achieved: Best Teacher Award, Lecturer in Zoology, Arambagh High School & College, Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000. Mob: 01717-293619 e-mail: [email protected] (দ্বিতীয় অধ্যায়: জীবকোষ ও টিস্যু) ইতোপূর্বে তোমরা উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষের প্রধান অঙ্গানুসমূহের মধ্যে কোষপ্রাচীর, কোষঝিল্লি, এবং সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুসমূহের মধ্যে- মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড, সেন্ট্রোসোম, রাইবোসোম, গলজিবস্তু, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, কোষ গহবর ও লাইসোসোম সম্পর্কে জেনেছো। আজকের আলোচনা: সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুসমূহের মধ্যে- নিউক্লিয়াস এর বর্ণনা ও কাজ, মানবদেহের স্নায়ু, পেশি, রক্ত, ত্বক এবং অস্থি’র কাজ পরিচালনায় বিভিন্ন প্রকার কোষের ভূমিকা সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুসমূহের বর্ণনা ও কাজ: ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায় এমন কিছু সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুর মধ্যে নিউক্লিয়াসের সাথে এবার আমরা পরিচিত হব ৯. নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকা (ঘঁপষবঁং) : জীবকোষের সাইটোপ্লাজমে নির্দিষ্ট পর্দাঘেরা ক্রোমোসোম বহনকারী সুস্পষ্ট যে বস্তু‘টি দেখা যায় সেটিই নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকা। অবস্থ’ান: উদ্ভিদকোষ ও প্রাণিকোষে এদের দেখা যায় তবে সিভকোষ ও লোহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিযাস থাকে না । গঠন: এর আকৃতি গোলাকার, ডিম্বাকার বা নলাকার। সুগঠিত কেন্দ্রিকায নিচের অংশগুলো দেখা যায: ক) নিউক্লিয়ার ঝিল্লি (ঞধংষরসধ অভৎড়ু) খ) নিউক্লিওপ্লাজম (ঘঁপষবড়ঢ়ষধংস) গ) নিউক্লিওলাস (ঘঁপষবড়ষঁং) ঘ) ক্রোমাটিন জালিকা (ঈযৎড়সধঃরহ ৎবঃরপঁষঁস) ক) নিউক্লিয়ার ঝিল্লি (ঘঁপষবধৎ সবসনৎধহব) : নিউক্লিযাসকে ঘিরে রাখে যে ঝিল্লি তাকে নিউক্লিয়ার ঝিল্লি বা কেন্দ্রিক ঝিল্লি বলে। গঠন: এটি দ্বিস্তর বিশিষ্ট ঝিল্লি । এ ঝিল্লি লিপিড ও প্রোটিন সমন্বযে গঠিত। এ ঝিল্লিতে মাঝে মাঝে কিছু ছিদ্র থাকে একে নিউক্লিযার রন্ধ্র বলে । কাজ: এই ছিদ্রের মাধ্যমে কেন্দ্রিকা ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যে কিছু বস্তু চলাচল করে । এই ঝিল্লী সাইটোপ্লাজম থেকে কেন্দ্রিকার অন্যান্য বস্তুকে পৃথক করে ও বিভিন্ন বস্তুর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে । খ) নিউক্লিওপ্লাজম (ঘঁপষবড়ঢ়ষধংস): কেন্দ্রিকা ঝিল্লির অভ্যন্তরে জেলির ন্যায় বস্তু বা রসকে কেন্দ্রিকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে। কেন্দ্রিকারসে নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন, উৎসেচক ও কতিপয় খনিজ লবণ থাকে। গ) নিউক্লিওলাস (ঘঁপষবড়ষঁং): কেন্দ্রিকারসের মধ্যে ক্রোমোজোমের সাথে লাগানো গোলাকার বস্তুকে নিউক্লিওলাস বা কেন্দ্রিকানু বলে। অবস্থান: ক্রোমোজোমের রঙআগ্রাহী অংশের সাথে এরা লেগে থাকে। গঠন: এরা জঘঅ ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত। এরা নিউক্লিক এসিড মজুদ করে ও প্রোটিন সংশ্লেষ করে। কাজ: একটি ক্রোমোজোম। ঘ) ক্রোমাটিন জালিকা (ঈযৎড়সধঃরহ ৎবঃরপঁষঁস): কোষের বিশ্রামকালে কেন্দ্রিকায় কুন্ডলী পাকানো সূক্ষ্ম সুতর ন্যায় অংশই ক্রোমাটিন জালিকা। কোষ বিভাজনের সময় এরা মোটা ও খাট হয় তাই তখন তাদের আলাদা আলাদা ক্রোমোজোম হিসেবে দেখা যায়। চিত্র: ক্রোমোসোম কাজ: ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনগুলো বংশগতির গুণাবলী বহন করে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে নিয়ে যায়। কোনো একটি জীবের ক্রোমোজোম সংখ্যা ঐ জীবের জন্য নির্দিষ্ট। এসব ক্রোমোজোমে বংশধারা বহনকারী জিন (এবহব) অবস্থান করে। পুরুষানুক্রমে বংশের বৈশিষ্ট্য বহন করা ক্রোমোজোমের কাজ। নিউক্লিয়াসের কাজ: ক্স কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে নিউক্লিয়াস ক্স নিউক্লিয়াসে বংশগতির বৈশিষ্ট্য নিহিত ক্স এটি কোষে সংঘটিত বিপাকীয় কার্যাবলীসহ সব ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে মানবদেহের ¯œায়ু, পেশি, রক্ত, ত্বক এবং অস্থির কাজ পরিচালনায় বিভিন্ন প্রকার কোষের ভূমিকা: কোষ জীবদেহের (উদ্ভিদ ও প্রাণী) গঠনের একক। এককোষী ও বহুকোষী প্রাণীদের কোষে কাজ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরিচালিত হয়। পৃথিবীর আদি সব ধরনের ক্রিয়াকলাপ যেমন খাদ্যগ্রহণ, দেহের বৃদ্ধি ও প্রজনন ঐ এক কোষের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। বহুকোষী প্রাণীদের দেহকোষের মাঝে ভিন্নতা আছে, আছে বৈচিত্র্যতা। মানবদেহে নানাধরনের কোষ আছে যারা ভিন্ন ভিন্ন কাজে নিয়োজিত। মানবদেহের ¯œায়ুকোষ জালের মতো ছডিয়ে থাকে। দেহের যে কোনো অংশের উদ্দীপনা গ্রহণ করে মস্তিষ্কে প্রেরণ করা, আবার মস্তিষ্কের কোনো বার্তা শরীরের নির্দিষ্ট অংশে পৌছে দেওয়াই এদের কাজ। চোখের স্নায়ুকোষগুলো দেখতে এবং কানের স্নায়ুকোষগুলো শুনতে সাহায্য করে। মানব চোখের মতো বিভিন্ন ধরনের স্নায়ুকোষ না থাকায় বেশিরভাগ প্রাণীই পৃথিবীর দৃশ্যমান বস্তু‘গুলো রঙিন দেখতে সক্ষম হয় না। অনেক প্রাণী শুধু দিনে অথবা রাতে দেখতে পায়। আমাদের কাজেকর্মে, হাটাচলায় এবং নড়াচড়ায় পেশিকোষ ব্যবহৃত হয়। তিন ধরনের রক্তকোষ (লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকা) মানবদেহের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। লোহিত রক্তকণিকা কোষগুলো ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণ করে হৃদযন্ত্রের সাহায্যে ধমণির মাধ্যমে কৈশিক নালি হয়ে দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে । শ্বেত রক্তকণিকা দেহের রোগ প্রতিরোধ করে । রক্তের অনুচক্রিক কোষগুলো শরীরের কেটে যাওয়া অংশ থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে শরীরের ত্বকীয় কোষগুলো দেহের আবরণ দেওয়া ছাড়াও শরীরের অবস্থানভেদে বিভিন্ন কাজ করে থাকে । যেমন- মাথার ত্বকীয় কোষ থেকে চুল গজিয়ে থাকে । শরীরের ত্বকীয় কোষগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ঘাম নির্গমন কোষ থেকে ঘাম নির্গত করে। অস্থিকোষ দেহে অস্থি অথবা কোমলাস্থি তৈরি করে দেহের দৃঢতা দিয়ে থাকে। দেহের আকার, গঠন, অস্থির বৃদ্ধি ইত্যাদিতে অস্থিকোষের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
×