ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মনপুরায় ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

প্রকাশিত: ০১:৩৫, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মনপুরায় ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলার হাজির হাট বাজারে বুধবার সকালে রাস্তার উপর ফলের দোকান সরানো ও ব্যবসায়ীদের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ,সাংবাদিক,ব্যবসায়ী,শিশু,পথচারিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়। এদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন পুলিশের সটগানের গুলিতে আহত হয়। গুরুতর ৩৮ জনকে মনপুরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশী গ্রেফতার আতংকে আহত রোগীরা ভয়ে পালিয়ে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবেএখনো মনপুরা উপজেলার বাজারের সকল দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। এ ধরনের ঘটনার জন্য সৃষ্ট ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরন এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবী জানান। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকালে মনপুরা থানার ওসি শাহীন খান উপজেলার প্রধান বাজার হাজির হাটে রাস্তার উপর ফলের ব্যবসায়ী হারুন, আবদুর রহমান ও হাসানের দোকান উচ্ছেদ করতে যায়। এ সময় কথাকাটাকাটির এক পযার্য়ে পুলিশ ব্যবসায়ীদের মারধর। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাৎক্ষনিক দোকানপাট বন্ধ রেখে পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিল বের করে। এক পর্যায়ে পুলিশও ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যবসায়ীদের দাওয়া করে লাঠিচার্জ করে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়লে ব্যবসায়ীরা পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সকাল প্রায় ৯ টা থেকে ঘন্টা ব্যাপী দফায় দফায় সংর্ঘষ চলতে থাকে। এতে করে পুলিশের গুলিতে স্থানীয় সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী আহত হয় এবং ব্যবসায়ীদের ইট-পাটকেলে ৫ পুলিশ আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতরা মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্র এ চিকিৎসা নিয়েছে। আহতদের মধ্যে ব্যবসায়ী ও পথচারিদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হচ্ছে, দৈনিক ভোরের পাতার স্থানীয় প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম মামুন, খোরশেদ আলম কুট্রি(৫০), শোয়েব(৩০), ইব্রাহীম(২৮), নাহিদ(১৫), কবির(২৪), হারুন(৩৫), আরিফ(৩০), তরিকুল(৪০), নুরুদ্দিন(২৪), শরিফ(২৪), আবু তাহের(৩৫), ইব্রাহীম(২৮), আঃ রহমান(৩৫), হারুন(২৪), রাকিব(১৮), হোসেন(২৫), মিজান(৩৫), জামাল(৩০), হেলাল(১৬), মালেক(৩০), মোসলেহ উদ্দিন(২০), লিটন ফরাজী(৩৫), নুরুল ইসলাম(৩০), নুরু(৩৬) এবং যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল মাতাব্বর। এছড়া আহত পুলিশের মধ্যে রয়েছে, মনপুরার থানা ওসি শাহীন খাঁন, এ এস আই প্রদীপ, কনস্টেবল জুনায়েদ, আরিফ বিল্লাহ, জসিম, আঃ হালিম এবং নাঈম। মনপুরা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, সংর্ঘষের ঘটনায় হাসাপাতে ৩৮ চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর কয়েক জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদরে ও ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বিনা নোটিশে পুলিশ তিন ব্যবসায়ীর ফলের দোকান উচ্ছেদ করার সময় মারধরের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে মিছিল করে। পরে পুলিশ বিনা উসকানিতে ব্যবসায়ীদের উপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে। ওসি’র অতিরঞ্জিত দুর্ব্যবহারের কারনে এহেন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা আতংকে আছেন। ওসির এ ধরনের ঘটনার জন্য সৃষ্ট ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরন এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবী জানান। মনপুরা থানার ওসি শাহীন খান জানান, রাস্তার উপর অবৈধ ভাবে ব্যবসায়ীরা ফলের দোকান রাখায় যানবাহন চলাচলের জন্য সমস্যা হওয়ায় তিনি তাদের সরে যেতে বলেন। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনতে এ সময় ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় কোন আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। এ ব্যাপারে ভোলা পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন জানান,বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে। এদিকে লালমোহন সার্কেল এসপি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনা স্থলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। তিনি সরেজমিনে ঘটনা যেনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
×