ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুস্তাফিজ ও রুবেল ইন, শফিউল আউট

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মুস্তাফিজ ও রুবেল ইন, শফিউল আউট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। আগে দুই টেস্টের সিরিজ হবে। তাই টেস্ট সিরিজের জন্যই আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে। মুশফিকুর রহীমকেই অধিনায়ক রাখা হয়েছে। টেস্ট দলে আবারও যুক্ত হয়েছেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান ও অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন। বাদ পড়েছেন পেসার শফিউল ইসলাম। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানও দলে জায়গা করে নিয়েছেন। পুরোপুরি ফিট না থাকায় ইমরুল কায়েসকে নেয়া হয়নি। ভারতের বিপক্ষে হায়দরাবাদ টেস্টে যে দল ছিল, সেখান থেকে শুধু শফিউলই বাদ পড়েছেন। হায়দরাবাদ টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দল ছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য একজন বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে। মুস্তাফিজ ‘অটোমেটিক চয়েজ’। শফিউলের স্থানে যুক্ত হয়েছেন রুবেল। আর দলে বাড়তি যুক্ত হয়েছেন সোহান। দলে যা কাটাছেঁড়া করা হলো শুধু পেস আক্রমণেই। ৫ পেসার নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে ফিট না থাকায় শফিউলের কপাল পুড়ল। শফিউলকে কেন বাদ দেয়া হলো? মঙ্গলবার দল ঘোষণার সময় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বিসিবি’র প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, ‘শফিউল হায়দরাবাদে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর স্টমাক মাসলে একটু সমস্যা হয়েছে। আমাদের কাছে রিপোর্ট এসেছিল এটা হার্নিয়ার সমস্যাও হতে পারে। ওখানে ওর টেস্ট করা হয়েছে। আমরা ওর ফিটনেস নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। সেই হিসেবে বিসিএলের ম্যাচের জন্য ওকে আমরা কনসিডার করছি এখন।’ শফিউলকে না নিলেও নিউজিল্যান্ড সফরের পর হায়দরাবাদ টেস্টের জন্য বিবেচনা না করা রুবেলকে আবার ফেরান হয়েছে। সেটি কেন? সেই ব্যাখ্যাও দিলেন নান্নু, ‘রুবেল বিসিএলে পরপর তিনটি ম্যাচ খেলেছে। সেখানে ভাল বোলিং করেছে। বিশেষ করে এই (চতুর্থ) রাউন্ডের আগের রাউন্ডটায় অসাধারণ বোলিং (প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার) করেছে। আমার মনে হয় ওর এখন এ্যাবিলিটি আছে টেস্ট ক্রিকেটকে কিছু দেয়ার।’ মুস্তাফিজকে এখন ফিট সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি কি শ্রীলঙ্কায় সবকটি ম্যাচ খেলতে সত্যিই সক্ষম? নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্টে খেলেননি। দেড়বছর ধরে টেস্ট খেলছেন না। তবে সর্বশেষ বিসিএলের দুটি রাউন্ড খেলেছেন। উইকেট শিকারের সংখ্যা প্রতি ম্যাচে ২টি করে হলেও দুই রাউন্ডে ৪৮ ওভার বল করেছেন। দীর্ঘ পরিসরে বল করার যে ভীতি ছিল, তা দূর হয়ে গেছে। দীর্ঘ পরিসরে বল করার যে অস্বস্তি ভাব ছিল, তাও দূর হয়ে গেছে। তাহলে তো মুস্তাফিজ সব ফরমেটেই খেলবেন? প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ম্যাচের (বিসিএল) দ্বিতীয়দিন থেকে তার উন্নতি ছিল যথেষ্ট ভাল। বোলিংও অনেক ভাল করেছে। আমার মনে হয়েছে তিন ফরমেটে খেলতে মুস্তাফিজের কোন অসুবিধা হবে না।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আগের চেয়ে এখন যথেষ্ট উন্নতি করেছে। যে কারণে আমরা বিসিএলে ওকে পরপর দুটি ম্যাচ খেলিয়েছি। দুটি ম্যাচে আটদিন খেলার পর ওর অবস্থা কি হয় সেটা দেখাই ছিল উদ্দেশ্য।’ ঘোষিত দল বৃহস্পতিবার থেকে অনুশীলন শুরু করবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে উড়াল দেবে। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে শুরুতে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। মরাতুয়ায় ২ মার্চ শুরু হবে ম্যাচটি। এরপর গলে ৭ মার্চ প্রথম টেস্ট শুরু হবে। ১৫ মার্চ কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। যেটি বাংলাদেশের শততম টেস্ট ম্যাচ। টেস্ট সিরিজ শেষে ২২ মার্চ কলম্বোয় একটি একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ডাম্বুলায় ২৫ মার্চ প্রথম ওয়ানডে খেলা দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। এরপর ডাম্বুলাতেই ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ও ১ এপ্রিল কলম্বোয় তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর কলম্বোতে সফরের শেষ দুটি টি২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ৪ ও ৬ এপ্রিল ম্যাচ দুটি হবে। শুরুতে টেস্ট সিরিজ হবে বিধায় টেস্ট দলই ঘোষণা করা হয়েছে। টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই ঘোষণা করা হবে নির্ধারিত ওভারের সিরিজের দল। ইমরুল পুরোপুরি ফিট নন। তাই টেস্ট দলে রাখা হয়নি। তবে বিসিএলের চতুর্থ ও পঞ্চম রাউন্ড খেলার পর যদি ফিট হয়ে ওঠেন, তাহলে যে কোন মুহূর্তে দলে ঢুকে যেতে পারেন ইমরুল। হায়দরাবাদ টেস্টের আগে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে উরুর পেশিতে চোট পাওয়া ইমরুল টেস্টে না থাকলেও ওয়ানডে ও টি২০’র জন্য আছেন বিবেচনায়। নান্নুই সেই আভাস দিয়েছেন। বলেছেন, ‘লিটনকে (কুমার দাস) ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে নেয়া হয়েছে। তবে আমার মনে হচ্ছে ইমরুল অবশ্যই ফিটনেস টেস্টে উতরে যাবে। এখন দেখার বিষয় দ্বিতীয় ম্যাচ (বিসিএল) খেলার পর ওর অবস্থাটা কি দাঁড়ায়। মাসল ইনজুরি হওয়ায় আগে থেকে বলা খুব মুশকিল। অনেক সময় মনে হয় সমস্যা নেই। কিন্তু লঙ্গার ভার্সনে সেশনের পর সেশন ফিল্ডিং করতে হয়। আমরা আমাদের ফিজিও এবং ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন ইমরুল যদি ফিটনেসে উতরে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সে দলে ফিরবে।’ সেই ফেরা যে কোন সময় হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিলেন প্রধান নির্বাচক, ‘ইমরুল আমাদের অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়। দুর্ভাগ্যবশত হায়দরাবাদ টেস্টে (টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে) সে ইনজুরিতে পড়ে গিয়েছে। ফিটনেসের জন্য ওকে আমরা দুটি রাউন্ড (বিসিএলে) দেখব। এক তারিখ ওর সেকেন্ড রাউন্ডটা শেষ হবে। দু’দিন বিশ্রাম নেয়ার পর চার তারিখে (৪ মার্চ) ফিটনেস টেস্ট দেবে। ওর অবস্থা যদি ভাল থাকে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য তাকে আমরা দলে অন্তর্ভুক্ত করব।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ইমরুল কায়েস আমাদের ওয়ানডে ও টি২০তেও বিবেচনায় আছে। সুতরাং তাকে আমাদের যোগ করতে কোন অসুবিধা হবে না।’ বাংলাদেশ দল ॥ মুশফিকুর রহীম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান রুম্মন, লিটন কুমার দাস, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন, শুভাশীষ রায় ও রুবেল হোসেন।
×