ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা;###;সুধীর বরণ মাঝি

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষক, হাইমচর কলেজ, হাইমচর-চাঁদপুর। মোবাইল : ০১৭৯৪৭৭৭৫৩৫ দ্বিতীয় অধ্যায় (সৃজনশীল প্রশ্ন) ২। বিদ্যালয়ে সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলার প্রতিযোগিতা হয়। এতে যারা যারা ভালো করেছে তাদের নিয়ে একটি চৌকস ব্যাডমিন্টন দল গঠন করা হয়। এই দল পরবর্তীতে আন্তঃস্কুল ও মাদরাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন কবের। ক) শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে ডি.কে.ম্যাথিউস এর সংজ্ঞাটি লিখ। খ) এ্যাথলেটিক হার্ট বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর। গ) সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলাটি শারীরিক শিক্ষায় কোন ধরনের কর্মসূচি ব্যাখ্যা কর। ঘ) উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা ও আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতার ইভেন্ট ও কর্মসূচিএক তুমি কি বক্তব্যের সাথে একমত? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও। উত্তর ঃ ক) শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে ডি. কে.ম্যাথিউস বলেন,”শারীরিক কার্যকলাপের দ্বারা অর্জিত শিক্ষাই শারীরিক শিক্ষা।” উত্তর ঃ খ) খেলাধুলা ও ব্যায়ামের ফলে হৃৎপিন্ড বড়, নিরোগ ও শক্তিশালী হয় এরূপ হার্টকে বলা হয় অ্যাথলোটিক হার্ট। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলার করার মধ্য দিয়ে অ্যাথলোটিক হার্ট গঠন করতে হয়। অ্যাথলোটিক হার্টের ফলে হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়,অধিক কার্যকরী হয় এবং শারীরিক সক্ষমতা বজায় থাকে। বিশ্বে অ্যাথলোটিক হার্ট মানুষের হাতেগোনা কয়েকজন।এদের মধ্যে ফুটবল স¤্রাট পেলে অন্যতম একজন। উত্তর ঃ গ) সাহিত্য ক্লাব ও বিজ্ঞান ক্লাবের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলাটি শারীরিক শিক্ষার অন্তঃক্রীড়াসূচীর অন্তর্গত। অন্তঃক্রীড়াসূচীর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস। ইহা একটি ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ হলো প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয়। যেমন,বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,এক শ্রেণির সাথে অন্য শ্রেণির ,যদি হাইজ থাকে তবে এক হাউজের সাথে অন্য হাউজের বা বিদ্যালয়ের এক ক্লাবের সাথে অন্য ক্লাবের প্রতিযোগিতা অন্তঃক্রীড়াসূচী বা ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টসএর অন্তর্গত। অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে যে খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা হয় তাকে অন্তঃক্রীড়াসূচী বা ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস বলে। অন্তঃক্রীড়াসূচীর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে থেকে সেরা খেলোয়াড় বাছাই করা সম্ভব হয়। উত্তর ঃ ঘ) উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা,আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতার ইভেন্ট ও কর্মসূচি এক আমি এই বক্তব্যের সাথে একমত নই। আমার বক্ত্যবের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলো। উদ্দীপকের সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা হলো অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি।এই ক্রীড়াসূচি বিদ্যালয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয় তা হলো অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি এবং প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের বাহিরে বা অন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলধুলা হয় তা হলো আন্তঃক্রীড়াকর্মসূচি। আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতা হলো আন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি । উদ্দীপকে সাহিত্য ও বিজ্ঞান ক্লাবের প্রতিযোগিতা হলো বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন ক্রীড়াকর্মসূচি বা অন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি আর আন্তঃস্কুল ও মাদরাসার ব্যাডমিন্টন খেলা প্রতিযোগিতা হলো আন্তঃক্রীড়া কর্মসূচি। ইভেন্ট হলো ক্রীড়াসূচীর দফা বা ক্রীড়াসূচীর ধাপ আর কর্মসূচি হলো ক্রীড়াসূচীর সমস্ত ইভেন্ট সমুহের সার্বিক কার্যক্রম। ইভেন্ট হলো কর্মসূচির একটি অংশ। ইভেন্টসমূহ সফল হলেই কর্মসূচির সফল সমাপ্তি হয়। কর্মসূচিকে সফল করতে হলে ইভেন্টের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হয়। কর্মসূচি হলো বৃহত্তম আর ইভেন্ট হলো ক্ষুদ্রতম। ৩। ক) অনুচক্রিকার কাজ কী ? খ) শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে ব্যায়ামের প্রভাব ব্যাখ্যা কর। গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত ’গ’কোন খেলার শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে বেশি দরকার ব্যাখ্যা কর। ঘ) উদ্দীপকে উল্লেখিত ’ক ও খ ’ খেলায় খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা বৈসাদৃশ্যের ধরণ বিশ্লেষণ কর । ক) উত্তর ঃ অনুচক্রিকার কাজ হলো দেহের কোথাও ক্ষত হলে সেখানে ৩মিনিটের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে বা রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করা। খ) উত্তর ঃ শারীরিক সক্ষমতা হলো শারীরিক কাজ-কর্ম করার সামর্থ্য, শারীরিক সক্ষমতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। ব্যায়াম না করলে কখনো শারীরিক সক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয়, যা শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সক্ষমতা অর্জনের জন্য সব বয়সের লোকদের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। শারীরিক সক্ষমতার প্রধান শর্ত হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমান ব্যায়াম করা। ব্যায়াম ছাড়া শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা অর্জন করা যায় না। গ) উত্তর ঃ উদ্দীপকের উল্লেখিত খেলাটির নাম হলো দূরপাল্লার দৌড়। এই খেলার জন্য শারীরিক সক্ষমতা বেশি দরকার।এই খেলার জন্য বেশি প্রয়োজন হয় দম ও পায়ের শক্তি। তলপেট,হাত ও বাহুর শক্তির প্রয়োজন হয় মধ্যম মানের। ক্ষিপ্রতা কম হলেও চলে। শারীরিক সক্ষমতা থাকলে দূরপাল্লার দৌড় চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া যায়।এই খেলার জন্য দম ও পায়ের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম বেশি করে করতে হবে। সংশ্লিষ্ট খেলার সাথে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করা হলে ঐ খেলায় ভালো ফল আশা করা যায়। যেমন, দূরপাল্লার দৌড়ের জন্য আস্তে আস্তে দৌড়,তবে বেশি সময় ধরে দৌড়াতে হবে,উঁচু-নিচু জায়গায় দৌড়,বালুর উপর দৌড়ানো ইত্যাদি নিয়মিতভাবে অনুশীলন করতে হবে। ফলে শারীরিক দূরপাল্লার দৌড়ের প্রয়োজনীয় শারীরিক সক্ষমতা ীর্জিত হবে। ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকে খেলা দুটি যথাক্রমে ফুটবল ও হ্যান্ডবল। এই খেলা দু’টির খেলোয়াড়দের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলেও বৈসাদৃশ্য কিছু রয়েছে এবং বৈসাদৃশ্যের ধরণ বিশ্লেষণ করা হলো। ফুটবল খেলায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় শক্তি( পা,হাত ও বাহু),দম ও ক্ষিপ্রতা। আর হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের বেশি প্রয়োজন হয় পা,হাত ও বাহুর শক্তি ও ক্ষিপ্রতা। বয়সের দিক থেকেও এই দুই খেলোয়াড়দের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। ফুটবল খেলোয়াড়রা ৩৫বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারে এবং হ্যান্ডবল খেলোয়াড়রা সব বয়সেই খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। বয়সের কোন বিধি নিষেধ নেই। ফুটবল ও হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের মধ্যে কৌশলগত কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে। যা নির্ভর করে শারীরিক সক্ষমতার উপর।এই দুই খেলোয়াড়দের মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা দুই ধরণের।যেমন ফুটবল খেলোয়াড়দের দমের বেশি প্রয়োজন আবার হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের দম প্রয়োজন মধ্যম মানের। এই দুই খেলোয়াড়দের সক্ষমতার মূল বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত দম ও বয়সের পার্থক্যের ক্ষেত্রে। শারীরিক সক্ষমতার বৈসাদৃশ্য থাকলেও যার শারীরিক সক্ষমতার বেশি খেলাধুলায় তার কাছ থেকে ভালো ফল আশা করা যায়। ৪। অর্পিতা কোন কাজ করলে তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছেন অর্পিতার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কম। ঠিকমত খাওয়া দাওয়া ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে অর্পিতার কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ক) আর্চিং কী ? খ) মানব দেহে শ্বেত রক্ত কণিকার বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর। গ) সক্ষমতা অর্জন করলে অর্পিতা কী কী কাজ করতে সক্ষম হবে-বর্ণনা কর। ঘ) ব্যায়ামের প্রভাবে অর্পিতার শরীরের ভিতর কী কী পরিবর্তন হয় আলোচনা কর। ক) উত্তরঃ চিত হয়ে শুয়ে দুই কানের কাছে দুই হাত রেখে হাঁটু ভাঁজ করে শরীর উপরের দিকে তোলা ও নামানোকে আর্চিং বলে। খ) উত্তরঃ মানব দেহে শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা অনেক কম।এক মিলিলিটার রক্তে ছয় থেকে আট হাজার রক্ত কণিকা থাকে। এরা বর্ণহীন ও নিউিক্লিয়াসযুক্ত। এরা সাধারণত ১২-১৩ দিন বাঁচে। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে এরা সংখ্যায় বেড়ে যায় এবং বেশি দিন বেঁচে থাকে। শ্বেত কণিকা রক্তে প্রবেশকারী জীবাণকে ঘিরে ধরে জীবাণুকে বিনিষ্ট করে দেহকে রক্ষা করে। শ্বেত কণিকাকে দেহের অতন্ত্র প্রহরী বলা হয়। গ) উত্তরঃ শারীরিক সক্ষমতা বলতে সামগ্রিক সক্ষমতাকে বুঝানো হয়েছে । শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে অর্পিতা সুস্থ ও সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে সক্ষম হবে। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে অর্পিতা যে যে কাজ করতে সক্ষম হবে তার একটি বর্ণনা দেওয়া হলো- ১। দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং বিপদকালীন অবস্থায় প্রয়োজনীয় শক্তি,দম,সমন্বয় ক্ষমতা এবং কৌশল অর্জন করতে পারবে। ২। প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় কাজকর্মের প্রতি যথাযথ মনোযোগ ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাবে। ৩। লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারবে। ৪। আবেগিক ভারসাম্য এবং আধুনিক জীবনযাত্রার জটিলতা থেকে চাপমুক্ত হয়ে জীবনযাপন করতে পারবে। ৫। সকলের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং সমাজ জীবনের প্রয়োজনীয় সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে । ৬। চলার পথে উদ্ভুত সমস্যাবলির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন এবং বিশ্লেষণ করতে পারবে। ৭। দায়িত্বশীল নাগরিকের মতো কর্তব্য পালন করতে পারবে। ঘ) উত্তরঃ ব্যায়ামের প্রভাবে অর্পিতার শরীরের ভিতরে কী কী পরিবর্তন আসে তা আলোচনা করা হলো। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয় যা শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ব্যায়ামের প্রভাবে অর্পিতার শরীরের ভিতরে যে যে পরিবর্তন হয, ১। ব্যায়াম করার ফলে অর্পিতার শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ফলে হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী ও নিরোগ হয়। ২। ব্যায়াম করার ফলে অর্পিতার হৃৎপিন্ডের সঞ্চালন করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে হৃৎপিন্ড সবল ও কর্মক্ষম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ৩। নিয়মিত ব্যায়াম করার কারণে অর্পিতার পাল্সরেট বেশি বাড়ে না এবং দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে তার ক্লান্তি তাড়াতাড়ি দূর হয়। ৪। সাধারণ লোকের চেয়ে অর্পিতার শরীরের মাংসপেশি,হৃৎপিন্ড ইত্যাদির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও মজবুত হয়। ৫। যে কোন শারীরিক কার্যক্রম অনায়াসে করতে পারে। ৬। ব্যায়ামের ফলে অর্পিতার শরীরে অক্সিজেন গ্রহণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। ৭। অর্পিতার শরীরের রক্তে লোহিত কণিকা ও শ্বেত কণিকার সংখ্যা বেড়ে যায় এবং শ্বেত কণিকা বেশি দিন বেঁচে থাকে। ৮। ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাসের ফলে বুকের প্রসারতা বৃদ্ধি পায়। ফলে শারীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ৯। ব্যায়ামের ফলে মাংশপেশি আকৃতিতে বড় হয়,টিস্যুগুলো মোটা ও শক্তিশালী হয়। তৃতীয় অধ্যায় (সৃজনশীল প্রশ্ন) ১। বাবর আকস্মিক মৃত্যুরপর নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ঋতুর উপর একমাত্র ভাইয়ের পড়ালেখার ও মায়ের চিকিৎসাসহ সংসারের সকল খরচ পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে। ফলে সকাল বিকালে টিউশনি করে এবং বাসায় থেকে রাত জেগে দর্জির দোকানের কাপড় সেলাই করে সে অর্থ উপার্জন করে। বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হলে তার মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। এতে সে পড়ালেখা ছেড়ে দেওয়ার সিদান্ত নেয়। তার মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ তাকে উৎসাহিত করায় সে আবার পড়ালেখায় ফিরে আসে। ক) প্রেষণা কী ? খ) শিশুমনে অস্বাভাবিকতার কারণ কী ? গ) রিতুর ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা কর। ঘ) রিতুর মানসিক অবস্থা দূরীকরণে কোন বিষয়টি কাজ করছে বলে তুমি মনে কর? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ক) উত্তর ঃ প্রয়োজন বা অভাববোধ থেকে প্রেষণার উদ্ভব।প্রেষণা বলতে আমরা এমন কিছু বুঝি যা কাজ করতে উদ্দীপ্ত করে বা উৎসাহিত করে বা শক্তিদান করে। প্রেষণা কাজের প্রতি উৎসাহ জোগায়। খ) উত্তরঃ মানসিক অসুস্থতার কারণে শিশুমনে মানসিক বিকৃতির সূত্রপাত হয়। জয়-পরজয়ের স্বাভাবিক ঘটনাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারলে শিশুমনে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় এবং তার কর্মকান্ডে নানারকম অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয় যা শিশুমনে অস্বাভাবিকতার কারণ। সংসারে মা বাবার কলহ শিশুমনে অস্বাভাবিকতার একটি কারণ। অপ্রত্যাশিত কোন কিছু ঘটলে শিশুমনে অস্বাভাবিকতার জন্ম নেয়। শিশুরা সদা চঞ্চল ,ণির্মল এবং প্রফুল্ল। তারা আনন্দ উৎসবের বাহিরে কলোহ, বিশাদ,অপ্রত্যাশিত যে কোন কিছুকে সে জীবনের বিপরিত চিত্র হিসেবে দেখে। তাই শিশুরা তার ভাবনার জগতের বাহিরে কোন কিছু ঘটলে শিশুমনে অস্বাভাবিকতার জন্ম নেয়। গ) উত্তরঃ উদ্দীপকের আলোকে বলা যায় রিতুর ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হলো বাবর আকস্মিক মৃত্যু। মৃত্যুর পর একমাত্র ভাইয়ের পড়ালেখার ও মায়ের চিকিৎসাসহ সংসারের সকল খরচ পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে। ফলে সকাল বিকাল টিউশনি করে এবং বাসায় থেকে রাত জেগে দর্জিরদোকানের কাপড় সেলাই করে সে অর্থ উপার্জন করে। বাবার মৃত্যু এবং সংসারের খরচ পরিচালনার দায়িত্ব ,নিজের প্রতি হতাশা ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। ভালো ফলাফলের জন্য নিয়মিত পড়ালেখায় করতে না পারা। নবম শ্রেণির বয়সটা জীবনের প্রস্তুতির বয়স।এ সময় বাবার মৃত্যুতে ঋতু জীবনের লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়ে।বাবার মৃত্যু, পরিবারের ভরণপোষণ সবকিছুকে তার পক্ষে সহজভাবে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই নিজের প্রতি এক ধরণের অবহেলা, আত্মবিশ্বাসের অভাব যা তাকে নিয়মিত পড়ালেখা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।ফলে রিতুর পরিক্ষার ফলাফল বিপর্যয়। ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকের আলোকে বলতে পারি রিতুর মানসিক অবস্থা দূরীকরণে যে বিষয়টি কাজ করছে তা যুক্তিসহ উপস্থাপন করা হলো রিতুর মানসিক অবস্থা দূরীকরণে তার মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উৎসাহ। যা রিতুর মানসিক অবস্থা দূরীকরণে প্রেষণা হিসেবে কাজ করে। প্রয়োজন বা অভাববোধ থেকেই প্রেষণার উদ্ভব, প্রেষণা এমন এক শক্তি যা মানুষের ভিতরকার শক্তিকে জাগিয়ে তোলে,কাজ করতেউদ্বুদ্ধ করে, প্রেরণা হিসেবে কাজ করে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে। কাজ করতে করতে বা পরাজয়ের কারণে বা অন্য কোন কারণে যখন মানসিক অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এই অবসাদ দূরীকরণের উপায় হলো সঠিক প্রেষণা। যা সে পেয়েছিল তার মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে।পিতার মৃত্যু, সংসারের খরচ পরিচালনার দায়িত্ব, ফলাফল বিপর্যয় ইত্যাদি কারণে রিতুর মানসিক অশান্তি ও অস্তিরতা দেখা। এতে তার মনোবল ভেঙ্গে পড়ে এবং পড়ালেখা ছেড়ে দেওয়ার সিদান্ত নেয়। তার মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করে তাকে লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ ও প্রেরণা জোগায়। যা তার কাছে প্রেষণা হিসেবে কাজ করে এবং সে আবার লেখাপড়ায় ফিরে আসে।
×