ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘অ্যাশ বাংলাদেশ’ তামাক কোম্পানির নতুন কূটকৌশল!

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘অ্যাশ বাংলাদেশ’ তামাক কোম্পানির নতুন কূটকৌশল!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘অ্যাকশন অন স্মোকিং এন্ড হেলথ বাংলাদেশ’ (অ্যাশ বাংলাদেশ) নামের একটি সংগঠন গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে হঠাৎ করেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তামাকবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। প্রতিষ্ঠানটি জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারসহ আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নের দাবি জানায়। আপাতদৃষ্টিতে তামাকবিরোধী মনে হলেও, পুরো কার্যক্রমটি তামাক কোম্পানিগুলোর যোগসাজশে হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি হাইকোর্টে এই সংগঠনটির এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তামাকপণ্যের মোড়কের উপরিভাগে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের উদ্যোগ আবারো বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সুচতুরভাবে নামসর্বস্ব এই প্রতিষ্ঠানটিকে কাজে লাগিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ০৮ সেপ্টম্বর উবিনীগ, প্রজ্ঞা এবং প্রত্যাশা’র সম্মিলিত রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল কর্তৃক ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ তারিখে প্রকাশিত সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্যাকেটের নিচের অংশে মুদ্রণ সংক্রান্ত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে হাইকোর্টেও একটি বেঞ্চ রুল জারী করে। মামলাটির পরবর্তী আদেশ প্রদানের জন্য ২০১৬ সালের ০২ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পরবর্তীসময়ে একই বিষয়ে ‘অ্যাকশন অন স্মোকিং এন্ড হেলথ বাংলাদেশ’ কর্তৃক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট পূর্বের সকল কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করে এবং পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ অনুযায়ী সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বহাল রাখার আদেশ প্রদান করে। সংগঠনটি তাদের রিট আবেদনে দাবি করে, যেহেতু আইন মন্ত্রণালয় তামাকপণ্যের প্যাকেটের নিচের অংশে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের অনুমতি দিয়েছে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ব্যান্ডরোল সংক্রান্ত এসআরও এর সাথে সাংঘর্ষিক তাই বর্তমান প্রচলিত নিয়মেই সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হোক। তামাকবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরা বলছেন, মূলধারার তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টতাবিহীন সংগঠনটির এইসকল কার্যক্রম অত্যন্ত সন্দেহজনক এবং তামাক কোম্পানির এতে মদদ রয়েছে তা সুস্পষ্ট। ছদ্মবেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে তামাক কোম্পানির অংশগ্রহণ নতুন কিছু নয়। পূর্বেও এ ধরনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংগঠনটি তামাকবিরোধী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন তথ্য হাইকোর্টে উপস্থাপনের পূর্বেই নিজেদের তামাকবিরোধী সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করতে তারা উক্ত কর্মসূচি আয়োজন করে। এধরনের পরিস্থিতি সম্মিলিতভাবে মোকবিলার জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
×