ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মানসিক সুস্থতার সহায়ক ব্রেইন গেম

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মানসিক সুস্থতার সহায়ক ব্রেইন গেম

৭০ এবং তার বেশি বয়সের মানুষদের মধ্যে যারা খেলায় অংশগ্রহণ করেন তাদের এমন স্মৃতিশক্তি জনিত মানসিক বৈকল্যের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা ২২ শতাংশ কমে। কারুশিল্পের কাজ করলে হালকা স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্য হওয়ার ঝুঁকি ২৮ শতাংশ কমে। কম্পিউটার ব্যবহার করলে ৩০ শতাংশ এবং সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকলে ২৩ শতাংশ ঝুঁকি কমে বলে জানা গেছে গবেষণায়। এ্যারিজোনার স্কটসড্যালের মায়ো ক্লিনিকের স্নায়ুবিদ্যার গবেষক এবং গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক ড. ইয়োনাস ই. জেডা বলেন, মানসিক উদ্দীপনা দিতে পারে এমন কাজের সঙ্গে সুস্থ জীবনধারা যেমনÑ ব্যায়ামের সমন্বয় করা গেলে সম্ভাব্য স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্য হওয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাওয়া যায়। এ ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে যে ভিন্ন ভিন্ন কাজগুলো প্রভাব বিস্তার করে তা দেখার জন্য গবেষকেরা ৭০ এবং তার বেশি বয়সের কোন জ্ঞানীয় সমস্যা ছিল না এমন ১,৯২৯ মানুষের একটি উপাত্ত পরীক্ষা করে দেখেন বিজ্ঞানীরা। তারা প্রতি ১৫ মাস পরপর অংশগ্রহণকারীদের মূল্যায়ন করেন। তাদের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক ৪ বছর ধরে ছিলেন গবেষণায়। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা কত ঘন ঘন বিভিন্ন কাজে যুক্ত হন তা দেখা হয়। তারপর গবেষকেরা সপ্তাহে অন্তত ১/২ বার অথবা মাসে ২/৩ বার সক্রিয়তার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন কিনা তার উপর ভিত্তি করে তুলনা করে দেখেন স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্যের সূত্রপাত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়টি। জামা নিউরোলজির রিপোর্ট অনুযায়ী, গবেষণার শেষের দিকে ৪৬৫ মানুষের মধ্যে স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্যের সূত্রপাত হতে দেখা যায়। গবেষকেরা যাদের জ্ঞানীয় দক্ষতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি ছিল এমন ৫১২ জনকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করে দেখেন। কারণ তাদের মধ্যে এ্যাপোলিপোপ্রোটিন ই (অচঙঊ) নামক জিন ছিল। যা স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্যের এবং আলঝেইমার্স ও ডিমেনশিয়া হওয়ার একটি রিস্ক ফ্যাক্টর। যাদের অচঙঊ জিন থাকে তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কম্পিউটার ব্যবহার করা এবং সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকলে স্মৃতিশক্তিজনিত মানসিক বৈকল্যে হওয়ার ঝুঁকি কমে। ডালাসের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের দীর্ঘায়ু গবেষক ড. ডেনিস পার্ক বলেন, গেম খেলা বা সামাজিক সক্রিয়তা মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দিতে পারে না এ ধরনের ক্ষয় হওয়া থেকে। কিন্তু একান্তভাবে সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টা থেকে মাসে কয়েক বার নতুন কোন কাজ শিখলে মস্তিষ্কের কাজের উন্নতি ঘটে। পার্ক বলেন, ‘আমাদের গবেষকেরা পরামর্শ দেন যে, মানসিক চাহিদাপূর্ণ কাজ যেমনÑ ফটোগ্রাফি শেখার কাজ করাটা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হতে পারে’। এছাড়াও কম্পিউটার ও বিভিন্ন এ্যাপস ব্যবহার করাও সাহায্য করতে পারে। বয়স্ক মানুষদের প্রতি তার পরামর্শ হচ্ছে, ‘যারা মনকে তীক্ষè রাখতে চান তাদের এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন যাতে আনন্দ পান এবং সেই কাজে সময় অতিবাহিত করতে পছন্দ করেন।’
×