ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তুচ্ছ ঘটনায় বগুড়ায় ইন্টার্ন ডাক্তারদের তুলকালাম কা-

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

তুচ্ছ ঘটনায় বগুড়ায় ইন্টার্ন ডাক্তারদের তুলকালাম কা-

স্টাফ রিপোর্টার,বগুড়া অফিস ॥ রবিবার দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের সঙ্গে এক রোগীর আত্মীয়ের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। রোগীর আত্মীয় আব্দুর রউফ সরকারকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেদম মারপিট করে। এমনকি তাকে কান ধরে উঠবস করানো হয়। ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ তাদের স্বজনদের কয়েক ঘন্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা জরুরী বিভাগ ও হাসপাতালে ঢোকার গেট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করে। অপরদিকে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা নিরাপত্তাসহ সাতদফা দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট আহবান করেছে। তবে অন্য চিকিৎসকরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেবেন বলে জানিয়েছে। অপর দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে প্রহৃত রোগীর এ্যাটেন্টডেন্টকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের হাতে সোর্পদ করেছে। জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার আলাউদ্দিন সরকার মস্তিকে রক্ষক্ষরণ জনিত কারণে শনিবার রাতে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি হন। সঙ্গে ছিলেন রোগীর ছেলে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আব্দুর রউফ। রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রোগীর ঠান্ডা অনুভুত হওয়ায় রউফ সেখানকার সিলিং ফ্যান বন্ধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি সিলিং ফ্যানের সুইচ খুঁজে না পেয়ে মেডিসিন বিভাগের নারী চিকিৎকের (ইন্টার্ন) কাছে জানতে চান সুইচটি কোথায়। আর এখান থেকেই বাধে বিরোধ। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, নারী চিকিৎসকের সঙ্গে রউফ ভালভাবে কথা বলেননি। এর জের ধরে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক ও তার সঙ্গী অপর ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রউফের বাকবিতন্ডা বাধে। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। রোগীর এ্যাটেনডেন্টের দাবি হঠাৎ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তার ওপর চড়াও হয়ে মারপিট শুরু করে। আর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছে, রউফ ইন্টার্ন চিকিৎসকের কলার চেপে ধরে ধাক্কা দেন। এর পরেই শুরু হয় তুলকালাম কান্ড। রোগীর এ্যাটেন্টডেন্টকে বেধড়ক মারপিট করে এক কক্ষে আটকে রাখা হয়।এর সঙ্গে শুরু হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর ছেলে রউফকে মাফ চাইতে বললে তিনি রাজী হন। কিন্তু এরপরই সে অবস্থান থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সরে এসে একশ’ বার কান ধরে উঠবস করতে বলে। এতে তিনি কান ধরে উঠবস করেন। রউফ তাঁকে কানধরে ওঠবস করার অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালকসহ বিএমএ নেতৃবৃন্দ জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা একের পর এক দাবি করায় তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। তারা জানান, কান ধরার বিষয়টি ঘটে থাকলে তাদের সামনে ঘটেনি। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর আত্মীয়কে কান ধরে উঠবস করানোর কথা স্বীকার করেননি। পরে আহত রউফকে সেখান থেকে পরিচালকের কক্ষে নিয়ে আসার পথে দফায় দফায় তার ওপর মারপিট চলে বলে রউফ জানিয়েছেন। এক পর্যায়ে ইর্ন্টান চিকিৎসকরা জরুরী বিভাগ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এদিকে রোগীর ছেলে রউফকে পরিচালকের কক্ষে দীর্ঘ সময় রাখা হয়। এক পর্যায়ে বিকাল ৪ টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে তাঁর বোন বীনাসহ দুই আত্মীয় তাঁকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য পরিচালকের কক্ষে এলে তাদের উপস্থিতিতেই ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আরও এক দফা মারপিট করে। এদিকে দুপুরে ওই ঘটনার প্রথম পর্যায়ে রউফের বাবা আলাউদ্দিন সরকারের অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
×