ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ অনিয়মে যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। জেলাজুড়ে অবৈধভাবে একের পর এক করাতকল গড়ে উঠলেও দেখার যেন কেউ নেই। অবৈধভাবে করাতকল গড়ে উঠায় এ জেলায় রাতের আঁধারে সড়কের ধারে এবং বন বিভাগের শতশত গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, জেলার ছয় উপজেলায় ২০৬টি করাতকল দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চলছে। বন বিভাগ বলছে, নিয়ম অনুযায়ী এ করাত কলগুলোর অধিকাংশের কোন অনুমোদন পাওয়ার যোগ্য নয়। আবার যেগুলোর যোগ্যতা আছে সেগুলোও লাইসেন্স করছে না বছরের পর বছর ধরে। ফলে লাইসেন্স বা অনুমোদন না থাকায় সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যত্রতত্র করাতকল স্থাপন করে তা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্যালো মেশিন লাগিয়ে তা চালানো হচ্ছে। এতে বিদ্যুত সংযোগে ঝুকছে না মালিকরা। জেলা শহরের কৃষি ফার্মের সামনে অবস্থিত ভাই ভাই করাতকল। এটির মালিক বাবলু ইসলাম বলেন, তিনি ২০০২ সালে লাইসেন্স করেছেন। শুরুতে কয়েকবার নবায়ন করা হলেও এখন আর লাইসেন্স নবায়ন করেন না। সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালির মোড় এলাকায় পাশাপাশি তিনটি করাতকল চলছে। তার দুটির মালিক রুস্তম আলী বলেন, আমি ২০০৮ সালে একটার লাইসেন্স করেছি, আর নবায়ন করিনি। জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামনগর, পলাশবাড়ি ইটাখোলা ইউনিয়নেরও চলছে অবৈধ করাতকল। জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ, সৈয়দপুর উপজেলার একই অবস্থা। প্রতিটি উপজেলা শহরের উপরেই করাতকল বসিয়ে ব্যবসা চলছে। অবৈধভাবে করাতকলের ব্যবসার পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুইশত মিটারের মধ্যে করাতকল থাকতে পারবে না। কিন্তু এই আইনের কোন প্রতিফলন নেই। জেলা শহরের কৃষি ফার্মের সামনে রয়েছে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে চলছে করাতকল। আবার জেলা শহরের নীলফামারী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে। সেখানেও স্থাপিত হয়েছে করাতকল। সৈয়দপুরে শহীদ জিয়া স্কুলের পাশে, সৈয়দপুর কলেজের পাশে, চামড়া গুদাম ক্যাম্পের পাশে, কামারপুকুর কলেজের সামনে এভাবে জেলার অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি করাতকল গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধভাবে। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ কিলোমিটার এবং বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু এখানে তা উপেক্ষিত হচ্ছে। চিলাহাটি ও ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তের দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে এবং ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় বনভূমির কাছাকাছি স্থানে অসংখ্য করাতকল স্থাপন করা হয়েছে।
×