ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউকে সমর্থন করুন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি মেরকেল ॥ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম উল্লেখ করেননি পেন্স

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি মেরকেল ॥ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম উল্লেখ করেননি পেন্স

জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ ও ন্যাটোর মতো বহুপক্ষীয় সংগঠনগুলোকে সমর্থন ও জোরদার করতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ন্যাটো জোটের প্রতি আমেরিকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। মেরকেল মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পেন্স ও অন্যান্য বিশ্বনেতা, কূটনীতিক ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে বলেন, একযোগে কাজ করা হলে সবারই শক্তি বৃদ্ধি পায়। আন্তর্জাতিক বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ এবং যুক্তরাষ্ট্র বহুপক্ষীয় কাজ করতে শীঘ্রই তেমন উৎসাহ আর নাও দেখাতে পারে- এমন আশঙ্কার মধ্যে মেরকেল ওই আহ্বান জানালেন। মেরকেল প্রশ্ন করেন, আমরা কি একযোগে ভালভাবে কাজ করে যেতে সমর্থ হব, না আমরা আবার ব্যক্তিগত ভূমিকায় ফিরে যাব? তিনি বলেন, আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাই আর আমরা এ বিষয়ে এক অভিন্ন অবস্থান খুঁজে পাব বলে আমি আশা করছি। আসুন আমরা একসঙ্গে বিশ্বকে আরও ভালভাবে গড়ে তুলি এবং এরপর আমাদের প্রত্যেকের জন্যই অবস্থা আরও ভাল হবে। ন্যাটো ‘সেকেলে’ হয়ে গেছে কিনা- এ প্রশ্ন তুলে প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেন, পেন্স অনতিবিলম্বে তা দূর করার চেষ্টা করেন। পেন্স নেতৃবৃন্দকে বলেন, আমি আপনাদের জন্য এ আশ্বাস নিয়ে এসেছি : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জোরালোভাবে ন্যাটোকে সমর্থন করে এবং ট্রান্সআটলান্টিক জোটের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার অবিচল থাকবে। পেন্স বলেন, আপনাদের লড়াই আমাদের লড়াই। আপনাদের সাফল্য আমাদের সাফল্য। আর শেষ পর্যন্ত আমরা একসঙ্গেই ভবিষ্যতের পথে যাত্রা করছি। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল পেন্সের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইউরোপের যে অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন, তাতে তিনি একমত। কিন্তু তিনি ট্রাম্পের প্রতি পরোক্ষ ইঙ্গিত করে বলেন, উভয় দেশকেই তাদের স্বার্থ কী তা পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করতে হবে এবং আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আদর্শবাদের দ্বারা চালিত হওয়া উচিত নয়। গ্যাব্রিয়েল বলেন, আদর্শবাদ পরস্পরবিরোধী ধারণার জন্ম দেয় এবং এগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নাও হতে পারে। ইউরোপীয়রা ব্রিটেনের ২৮ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের সিদ্ধান্তকে ট্রাম্পের স্বাগত জানানো নিয়েও উদ্বিগ্ন। পেন্স ইইউর নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু তিনি অবশ্যই বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং এক শক্তিশালী উত্তর আটলান্টিক জোট গড়ার পক্ষে রয়েছে। ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেননার্স সমাবেশে বলেন, ন্যাটো ও ইইউর প্রতিরক্ষা উদ্যোগ একে অপরের পরিপূরক। তিনি বলেন, এক শক্তিশালী ইউরোপ বলতে একা ইউরোপ বোঝায় না, ঠিক যেমন ‘আমেরিকা প্রথম’ বলতে একা আমেরিকা বোঝায় বলে আমি মনে করি না। মেরকেল স্বীকার করেন যে, ইউরোপীয়রা ইসলামী চরমপন্থী সন্ত্রাসবাদের মতো বিশ্বের ইস্যুগুলোর একা প্রতিরোধ করতে পারবে না। তিনি তাদের ভাষণের পর পেন্সের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় মিলিত হন। মেরকেল বলেন, আমাদের মার্কিন সামরিক শক্তির প্রয়োজন রয়েছে। তিনি শান্তিপূর্ণ ইসলাম এবং ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদের মধ্যকার পার্থক্য নিয়ে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে ইসলামী ধর্মীয় কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি পুনরাহ্বান জানান। মেরকেল রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেন। কিন্তু তিনি ২০১৫ সালে তার মধ্যস্থতায় বেলারুশের মিনস্কে সই করা চুক্তির প্রতি অবিচল থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পূর্ব ইউক্রেনে সরকারী বাহিনী ও রুশপন্থী বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের অবসান ঘটানোই এ চুক্তির লক্ষ্য।
×