ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৫ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে ঢাকায় বসছে এ্যাপারেল সামিট

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে ঢাকায় বসছে এ্যাপারেল সামিট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে সরকারী-বেসরকারী খাত, দাতা সংস্থা, ব্র্যান্ড, শ্রমিক সংগঠনসহ এ খাতের সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে ‘ঢাকা এ্যাপারেল সামিট ২০১৭’। রবিবার রাজধানীতে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। তৈরি পোশাক শিল্পের বড় এই সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এবারের সামিটের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘টুগেদার ফর এ বেটার টুমোরো’। শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এই সামিটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিজিএমইএ সভাপতি জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ফিল্ড অপারেশন এ্যান্ড পার্টনারশিপ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গিলবার্ট ফুসান হাংবো, বাংলাদেশের শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৩ সেশনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখবেন। সেশনগুলো হলোÑ বিজনেস পলিসি এ্যান্ড ইনভারমেন্ট টুওয়ার্ড এ বেটার বাংলাদেশ, কোলাবোরেটিভ এ্যান্ড রেসপনসিবল সার্সিং ফর সাসটেইন্যাবল গ্রোথ এবং বাংলাদেশ এ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি ট্রান্সফরমেশন এ্যান্ড দ্য রোড এ্যাহেড। সেশনগুলোতে যেসব বিষয় অগ্রাধিকার পাবে তা হলো-শিল্পমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য কনডাকটিভ বিজনেস, পরিবেশ ও নীতি, তৈরি পোশাকের সাপ্লাই চেইন টেকসই করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিত উদ্যোগ ও টেকসই অর্থনীতির গুরুত্ব কতখানি, শিল্পের আধুনিকীকরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ, পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয়। সিদ্দিকুর রহমান জানান, এসব সেমিনারে বক্তব্য দেবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি মার্গারাথা কুয়েলিনারি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল প্রমুখ। এছাড়া এই সম্মেলনে উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক ছাড়াও পশ্চিমা বিশ্বের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকার পোশাক শিল্পের জন্য অনেক কিছু করেছে। সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছে। তবে পোশাক শিল্পের জন্য ঢাকা এবং চট্টগ্রামে অগ্রাধিকার ভিক্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দেয়া হোক। সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। সরকার ২০২১ সাল নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ৮ শতাংশ। যদি দেশে রফতানি সক্ষমতা বাড়াতে পারে তাহলে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে চীন, জাপান, কোরিয়ার মতো অসংখ্য দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে সিদ্দিকুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বে পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয় হলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের অংশ মাত্র ৬ শতাংশ। আর বাকিটাই চীনের। আমরা যদি এই বাজরের কিছুটাও পাই তাতেও অনেক সামনে এগিয়ে যেতে পারব। তাই সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক শিল্পকে সরবরাহকৃত বিদ্যুত লাইনে পুরনো কেবলের কারণে সংযোগে সমস্যা হয়। এর ফলে আমাদের মেশিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পোশাক শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের দাবি জানান তিনি। পোশাক শিল্প নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে সঠিক সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ জানান তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কে কী বলল, সেটা বিষয় নয়। সরেজমিনে কি হচ্ছে সেটা তুলে ধরুন। ‘সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বিদেশীরা নানা প্রশ্ন তুলছেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যারা বিষয়টি বলছে আমি তাদের বলব আপনারা সরাসরি আসুন। যাচাই-বাছাই করুন। তার পরে যদি মনে হয় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অন্যায় কিছু হচ্ছে; তাহলে আমাদের বলুন। নিরীহ শ্রমিক ভাই-বোনদের কোনরকম ক্ষতি হোক এটা আমরা চাই না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, মঈনুদ্দিন আহমেদ, এসএম মান্নান, মোহাম্মদ নাছির ও মাহমুদ হাসান খান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান এমএ সবুর, বাংলাদেশ এ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
×