ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মতবিনিময় সভায় চীনা প্রতিনিধি দলের প্রধান

এশিয়ায় ব্যবসায়িক পরিবেশে এগিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এশিয়ায় ব্যবসায়িক পরিবেশে এগিয়ে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ অনেক ভাল বলে মনে করেন চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের প্রধান লিউ জিনহুয়া। রবিবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) কার্যালয়ে চীন-বাংলাদেশ বিজনেস মিটিংয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। প্রতিনিধি দলের প্রধান লিউ জিনহুয়া বলেন, এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে অনুকূলে রয়েছে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ। এখানে অবকাঠামো খাতসহ অন্যান্য খাতেও বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। রেলওয়ে, পাওয়ার, ইলেক্ট্রিক, ওয়াটার, লাইটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি, ম্যানুফ্যাকচারিংসহ বেশ কিছু খাতে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। লিউ জিনহুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসায়ী, সরকার ও এখানকার মানুষ সবকিছু মিলিয়ে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার বেশ বিনিয়োগ বান্ধব। আমরা এখানে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফর করছি। আমরা চাই এখানকার জ্বালানি, আবাসন, ইলেকট্রনিক্স, যোগাযোগ, প্রযুক্তি ও কৃষিসহ বৃহৎ সেক্টরে বিনিয়োগ করতে। কারণ, এখানকার বিনিয়োগ পরিবেশ ও সস্তা শ্রম বিনিয়োগের প্রধান আকর্ষণ।’ তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে চীনের ২০টি কোম্পানির ৪০ জন প্রতিনিধি এসেছেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হয়ে দেশে ফিরছেন তারা। এরাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগহী হবেন। অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং বলেন, চীন সরকারের বাংলাদেশ সফরে অনেক চুক্তি সই হয়েছে। যেটা এখন বাস্তবায়নের সময় এসেছে। দুই দেশের ব্যবসায়িক উন্নতিতে কাজ করছে চীন। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগী হতে চায় চীন। এ দুই দেশের মধ্যে কোন ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব নেই। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ অনুকূল হওয়ায় এখানে ব্যবসা বাড়াচ্ছে চীন সরকার। এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং বলেন, ‘বাংলাদেশে চীন সরকার প্রধানের সফরকালে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবায়নের সময় এসেছে। দুই দেশের ব্যবসায়িক উন্নতিতে কাজ করছে চীন। আমরা চাই বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে। বর্তমানে চীনের জন্য বরাদ্দ অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগের জন্য আমাদের কর্মকা- চলছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। যেখানে চীনের বড় বড় বিনিয়োগ আসবে।’ চীনের ভিসা জটিলতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য ভিসা পাওয়া জটিল নয়। আরও সহজ করা হবে।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এমন কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ সফর করছে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এ বিষয়ে যোগাযোগ হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পে তারা বিনিয়োগ করতে পারে।’ বিনিয়োগ পরিবেশে কোন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ পরিবেশে কিছু কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ সফরের সময় ৩৮০০ কোটি ডলারের ২৮টি চুক্তি করেছিল চীন সরকারের। সেসব চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য এ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। এ দলে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা রয়েছেন; এরাই পরবর্তীতে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশের অবকাঠামো, বিদ্যুত, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি, লাইটিং, পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে চীনের। ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় এখাবে ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী তারা। এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, সরকার দেশে আরও অধিক বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস এ্যাক্ট করতে যাচ্ছে। যা সংসদ থেকে আইন আকারে পাস করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিআইডিএ শক্তিশালী হবে।’ ‘চীন-বাংলাদেশ বিজনেস মিটিং’ শীর্ষক এই সভা চীনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করে এফবিসিসিআই। এতে চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা যোগ দেন।
×