ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মিসরীয় জঙ্গিদের দীক্ষাগুরু ‘অন্ধ শেখ’ এর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মিসরীয় জঙ্গিদের দীক্ষাগুরু ‘অন্ধ শেখ’ এর মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক ॥ ‘অন্ধ শেখ’ হিসেবে পরিচিত মিসরীয় জঙ্গিদের একসময়কার দীক্ষাগুরু শেখ ওমর আব্দেল রাহমান যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে মারা গেছেন। ১৯৯৩ সালে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে হামলায় উৎসাহ দিয়েছিলেন এই অন্ধ শেখ। ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরসহ নিউইয়র্কের বেশ কয়েকটি স্থাপনা বোমা হামলা করে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। এসব অভিযোগে আমেরিকার আদালতের রায়ে ওমর আমৃত্যু কারাবাসের দণ্ড ভোগ করছিলেন। ৭৮ বছর বয়সে নর্থ ক্যারোলাইনার অন্যতম সুরক্ষিত কারাগারে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার ভোররাতে ওমরের মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিক, হৃদরোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ফেডারেল কারেকশন সেন্টারের মুখপাত্র কেনেথ মেকওয়ের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অন্ধ শেখের মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করেছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার আগে ওমর যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে আলোচিত ‘জঙ্গি ধর্মগুরু’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ওসামা বিন লাদেনের নাম প্রকাশ্যে আসার আগে আমেরিকায় জঙ্গিবাদবিরোধী আলোচনায় ওমরের নামই ঘুরে-ফিরে আসত। ইসরায়েল ও মিসরের তৎকালীন সরকারকে আমেরিকার সমর্থনের কারণে ওমর ও তাঁর অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হন বলে মনে করা হয়। ওমর তাঁর অনুসারীদের আমেরিকার বিরুদ্ধে হামলার উসকানি দিতেন বলে অভিযোগ আছে। মিসরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত গামা ইসলামিয়া নামের সংগঠনের দীক্ষাগুরু ছিলেন ওমর। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠীর ভাবগুরু ছিলেন। ওসামার আগে তিনিই মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছেন বলে মনে করা হয়। ১৯৯০ সালে মিসর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে আশ্রয় নেন ওমর। তিনি নিউজার্সির একটি মসজিদে ইমামতি করতে থাকেন। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা অনুসারীদের জঙ্গি তৎপরতায় অনুপ্রাণিত করছেন মর্মে মার্কিন গোয়েন্দাদের নজরে পড়েন ওমর। ১৯৯৩ সালে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে ট্রাকবোমা হামলায় ছয় ব্যক্তি নিহত হন। এই হামলার জন্য আমেরিকার আদালতে ওমরের কয়েকজন অনুসারীর কারাদণ্ড হয়। ১৯৯৩ সালেই ওমর গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ সদর দপ্তরসহ একাধিক টানেল ও সেতু বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগ ওঠে। আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে আমৃত্যু কারাভোগের দণ্ড দেওয়া হয়। ওমরের মৃত্যু হলেও তাঁর অনুসারীরা এখনো নানা নামে সক্রিয় বলে ধারণা করা হয়।
×