ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি ॥ গয়েশ্বর

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি ॥ গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে অথবা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনেই যদি বিএনপি নির্বাচনে যেত, তাহলে ২০১৪ সালেই যেত। তাহলে ৫ বছর পরে যাবে কেন? শনিবার দুপুরে বিএনপির অঙ্গসংগঠন তাঁতি দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। গয়েশ্বর রায় বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলেও নিবন্ধন বাতিলের কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিটি মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একই অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাগুলো প্রত্যাহার হলেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো সচল রাখা হয়। সরকারি দল ও বিরোধী দলের ক্ষেত্রে আইনের দুই রকম প্রয়োগ হচ্ছে। দলীয়করণের কারণে আদালতে দলীয় বিবেচনায় বিচার হয়। তাই আদালত খালেদা জিয়ার সাজা দেবে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এ বক্তব্য ধোপে টিকবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর প্রচারিত হয়েছে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে এখনও বৈঠক হয়নি। দলের মধ্যে নানা মতের মানুষ আছেন। তাই পত্রিকার খবর নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। খালেদা জিয়ার জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর রায় বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাননি। আগামী নির্বাচনও ৫ জানুয়ারির মতো হলে সে নির্বাচনেও ভোটাররা যাবেন না। এ ধরনের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইলে থাকুক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে তাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য। বিএনপি দলের নেতাদের এসব মামলা আদালতের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও মোকাবেলা করবে। এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, তাঁতি দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম খান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে খালেদার বিচার প্রভাবিত হতে পারে, ফারুক ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে বিচার প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন নামক একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি যে সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন তাতে চার্জ ছিল না বলে মন্তব্য করে জয়নুল আবেদিন বলেন, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে আরেকটি রকিব মার্কা নির্বাচন কমিশন জাতিকে উপহার দিয়েছেন। যাকে প্রধান করা হয়েছে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা। এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে দিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব নয়। ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন খালেদা জিয়া নাকি এতিমদের টাকা চুরি করে খেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী যদি বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করেন, তাহলে তো খালেদা জিয়াকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আদালতের রায়ের আগেই দলীয় ফোরামে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার সম্পর্কে যে বক্তব্য দেন, সেটা কী সঠিক হলো। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন ও বিচারক নিরপেক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই খালেদা জিয়া আইনজীবীর মাধ্যমে যেসব বক্তব্য তুলে ধরেছেন, সেই বক্তব্যে প্রমাণিত হবে, অর্থ লুটের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। সরকারকে উদ্দেশ করে ফারুক বলেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করুন। ‘বিএনপির মেরুদ- ভেঙ্গে গেছে তাদের দিয়ে আন্দোলন সম্ভব নয়’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিন তারপরে দেখুন রাজপথ কাদের দখল থাকে।
×