ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কোন ফর্মুলায় কাজ হবে না, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কোন ফর্মুলায় কাজ হবে না, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন কীভাবে হবে, তা নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন ফর্মুলা দিচ্ছেন। এসব ফর্মুলা দিয়ে কোন কাজ হবে না। বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। এর কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ^রী জাতীয় মন্দিরে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্মরণে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি আরও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। আর কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন নেই। এসব ফর্মুলা অনুযায়ী আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, হবেও না। এখন বিশ্বব্যাংককে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে স্মরণ করে তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক সময় ছোট দলের নেতা ছিলেন। ছোট দলের নেতা হয়েও তার যে পরিচিতি ছিল তা বিশ^াস করতে কষ্ট হয়। ছয় বার এমপি হয়েও আমি তার ধারেকাছেও যেতে পারিনি। তিনি অনেক রসালো ভাষায় বিরোধী দলকে আক্রমণ করতেন। আর জবাব দিতেন অনেক চোখা ভাষায়। একজন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অভাব পূরণ হওয়ার নয়। তার মতো নেতা পেতে দেশকে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে। তিনি চক্রান্তেরও শিকার হয়েছিলেন। তার পরিবারের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরও আমরা তার পরিবারকে দেখে রাখব। সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদমুক্ত করার লড়াইয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অক্ষয় হয়ে থাকবেন। পঞ্চানন বিশ^াস এমপি বলেন, তিনি ছিলেন আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক ব্যক্তি। তিনি সব সময় বঞ্চিত মানুষের পক্ষে ছিলেন। এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কোন দলের বলে বিবেচনা করা যায় না। উনি ছিলেন সর্বদলীয় নেতা। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একজন সদস্য হিসেবে তার কথায় সংবিধানে অনেক সংশোধনী হয়েছে। তারপরও প্রণীত সংবিধানে তিনি স্বাক্ষর করেননি দলের প্রতি আনুগত্য মেনে। কারণ, তখন ন্যাপ যেভাবে সংবিধান চেয়েছিল পুরোটা সেভাবে হয়নি। যে কারণে দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বাহাত্তরের সংবিধানে তিনি স্বাক্ষর করেননি। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। পঙ্কজ দেবনাথ এমপি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের একটাই কথা ছিল। আর সেটা ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়া। প্রথম থেকেই তিনি জোরালোভাবে সেটাই বলতেন। কারণ, গণতন্ত্রে নির্বাচনই হলো আসল কথা। অধ্যাপক ডাঃ সামন্তলাল সেন বলেন, কোন বঞ্চিত ব্যক্তি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কাছে গেলে তিনি চেষ্টা করেছেন তার জন্য কিছু করার। তার পাশে দাঁড়ানোর। তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমি নিজে। তার সহযোগিতা না পেলে হয়ত বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেয়াই আমার হতো না। প্রয়াত পিতার স্মৃতিচারণ করে সুরঞ্জিত তনয় সৌমেন সেনগুপ্ত বলেন, তার পিতা সব সময় মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করতেন। মানুষকে ভালবাসতেন। অতি সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারতেন। তার পিতার মতো তিনিও যেন মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন সে প্রার্থনাই সবার প্রতি সৌমেনের। মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে আয়োজিত এই স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডি এন চ্যাটার্জি। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, পরিষদের সাবেক নেতা কাজল দেবনাথ, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অলোক কান্তি দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বীরেন অধিকারী ও প্রয়াত অজয় রায়ের সহধর্মিণী জয়ন্তী রায়। অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জীবনী পাঠ করেন নিমাই ম-ল। ওষুধ শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে ॥ এদিকে ঢাকা ক্লাবে স্যামসন এইচ চৌধুরী স্মৃতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ওষুধ শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। যখনই বাংলাদেশের কোন অর্জন হয় তখনই একটি মহল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে ওষুধ শিল্প মালিকদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে। শেষ অধিবেশনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির। আজ সারাদিনে সমাপনী অধিবেশন ছাড়াও তিনটি অধিবেশন হয়। এতে ওষুধের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, এ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার এবং ওষুধ শিল্পের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা হয়।
×