ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গুলশান হামলায় নিহত অবিন্তা কবির স্মরণে আর্ট ক্যাম্প

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গুলশান হামলায় নিহত অবিন্তা কবির স্মরণে আর্ট ক্যাম্প

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাণচঞ্চল ও সদা হাস্যময় এক তরুণীর নাম অবিন্তা কবির। তবে অশুভ শক্তির কালো থাবায় সময়ের আগেই থেমে যায় তার পথচলা। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গি হামলায় নিভে যায় এই তরুণীর প্রাণস্পন্দন। বর্বর ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে সেও ছিল একজন। স্মৃতির খাতায় নাম লেখানো এই তরুণীকে স্মরণ করে অনুষ্ঠিত হলো আর্ট ক্যাম্প। অবিন্তা কবিরকে নিবেদিত দুই দিনের এ চিত্রকর্ম সৃজনের আয়োজন করে প্রগতি সরণির এ্যাথেনা গ্যালারি অব ফাইন আর্টস। অর্ধশতাধিক চিত্রশিল্পীর অংশগ্রহণে শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার শেষ হলো ছবি আঁকার আয়োজনটি। নবীন-প্রবীণ ও খ্যাতিমান শিল্পীরা অবিন্তাকে নিবেদন করে ক্যানভাসে মেলে ধরলেন নানা বিষয়। আর সে ছবিগুলো নিয়ে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। শনিবার ক্যাম্পের শেষ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে রংতুলির আঁচড়। অবিন্তার প্রতি আবেগ আর ভালবাসায় ভর করে বর্ণময় হয়ে ওঠে চিত্রকরদের চিত্রপটগুলো। আর্ট ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী কয়েজন শিল্পী হলেনÑ সৈয়দ জাহাঙ্গীর, রফিকুন নবী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, মনিরুল ইসলাম, ফরিদা জামান, হামিদুজ্জামান খান, কালিদাস কর্মকার, আবদুস শাকুর শাহ, নিসার হোসেন, শহিদ কবির, বীরেন সোম, জামাল আহমেদ, নাসরিন বেগম, রোকেয়া সুলতানা, কনকচাপা চাকমা, ফারেহা জেবা, তৈয়বা বেগম লিপি, ঢালি আল মামুন, গুলশান হোসেন, দিলারা বেগম জলি, শামীম সুব্রানা, বিপাশা হায়াত ও মাকসুদা ইকবাল নীপা। পারফর্মেন্স আর্ট ফেস্টিভ্যালের সমাপ্তি ॥ দর্শকের সঙ্গে শিল্পীর সংযোগের মাধ্যমে শেষ হলো ন্যাশনাল পারফর্মেন্স আর্ট। দুই দিনের এ আয়োজনে শিল্পীর সঙ্গে দর্শকরা যেন মিলে গেলেন এক কাতারে। নানা প্রতিক্রিয়া মেলে ধরা শিল্পীর শরীরী অঙ্গভঙ্গিমায় উঠে এলো বহুমাত্রিক বিষয়। সেটাই দর্শকরা অবলোকন করলেন সরাসরি শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে। শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার শেষ হওয়া এ উৎসবের আয়োজন করে পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন (পিটিএ)। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শনিবার উৎসবের সমাপনী দিনে পরিবেশিত হয় সাতটি পরিবেশনা। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের লবিতে প্রথম পরিবেশনা উপস্থাপন করেন নাজিয়া আন্দালিব প্রিমা। পোশাকের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটিয়ে উপস্থাপন করেন সত্তা নামের পরিবেশনা। ভাষার মাসে আত্মপরিচয়ের সঙ্কট উঠে আসে তার পরিবশেনায়। ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার চাপে হারিয়ে যাওয়া বাঙালী সত্তার পরিচয়ের সঙ্কটকে মেলে ধরেন শিল্পী। একই স্থানে ছিল জুয়েল এ রবের পরিবেশনা। এরপর একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার নিচের উন্মুক্ত আঙ্গিনায় পরিবেশনা উপস্থাপন করেন সুমনা আক্তার। এরপর চিত্রশালার বিভিন্ন চারু প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন স্থানে ‘এবং দ্রোপদী’ ও ‘উপস্থিত-অনুপস্থিত’ শীর্ষক নানা পরিবেশনা উপস্থাপন করেন অমল আকাশ, ইয়াসমীন জাহান নূপুর ও ঋতু সাত্তার। রবীন্দ্র সরোবরে একুশের অনুষ্ঠানমালা ॥ ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’ সেøাগানে চলছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা। দুই সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শনিবার স্থানান্তরিত হয় ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরে। এদিন বিকেলে একাদশতম দিনের আয়োজনে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা ও নন্দন। একক কণ্ঠে গান শোনান সরদার রহমত উল্লাহ, মাহবুব রিয়াজ, তানজিলা তমা ও শিউলী আহমেদ। পথনাটক পরিবেশন করে ইউনিভার্সেল থিয়েটার ও থিয়েটার আর্ট ইউনিট। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে স্রোত, শ্রুতিঘর ও স্বরব্যঞ্জন। একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন শাহাদাৎ হোসেন নিপু, ইকবাল খোরশেদ, ফকরুল ইসলাম তারা ও সুপ্রভা সেবতি। দলীয় নৃত্য উপস্থাপন করে নাটরাজ। শিশু-কিশোর পরিবেশনায় অংশ নেয় অন্তরঙ্গ শিশু-কিশোর সংগঠন। আজ রবিবার দ্বাদশ দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটায়। এদিন বিভিন্ন সংগঠন পরিবেশন করবে দলীয় আবৃত্তি, একক আবৃত্তি, দলীয় সঙ্গীত, একক সঙ্গীত, দলীয় নৃত্য, শিশু-কিশোর পরিবেশনা ও পথনাটক। দেবদাসী কমলা নৃত্যনাটকের মঞ্চায়ন ॥ শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত নৃত্যনাট্য ‘দেবদাসী কমলা’। বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য, গৌড়ীয় নৃত্য ও বাংলার লোকনৃত্য আশ্রিত নৃত্যনাট্য অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এ নৃত্যনাটক। নৃত্যনাট্যটির নাট্যরূপ, নৃত্যনির্মাণ ও নির্দেশনা দিয়েছেন অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। সহকারী নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছেন র‌্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস। সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি কণ্ঠ দিয়েছেন অমিতাভ মুখোপাধ্যায়।
×