ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে ভূঞাপুর সড়ক ॥ বালুবাহী ট্রাকের দখলেম

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে ভূঞাপুর সড়ক ॥ বালুবাহী ট্রাকের দখলেম

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৮ ফেব্রুয়ারি ॥ বঙ্গবন্ধু সেতু-ভূঞাপুর সড়ক এখন বালুবাহী ট্রাকের দখলে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু নিয়ে চলাচল করছে ওই সড়কে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ঘটছে নানা রকম ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ট্রাক চলাচলে সৃষ্ট তীব্র ধুলার কারণে সড়কের দু’পাশে আশ্রয় নেয়া যমুনা নদীভাঙনের অসহায় মানুষ বিভিন্ন রোগের শিকার হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আগে সপ্তাহে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাট গোবিন্দাসীর হাটবার রবিবার ও বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত গরুর ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিক্সা-অটোভ্যান যাতায়াতের কারণে সড়কে যানজট লেগে থাকত। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুধু হাটের দিন নয়, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই দেদার চলছে বালুভর্তি ট্রাক। শিক্ষার্থীরা বালুভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে নিয়মিত স্কুলে পৌঁছাতে পারে না। ভিন্ন রাস্তায় ঘুরে স্কুলে যেতে হয়। বালুবাহী অতিরিক্ত ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে ধুলাবালি। যানবাহনের বাতাসের সঙ্গে সেই ধুলায় প্রতিনিয়ত অসুস্থ হচ্ছে শিশু থেকে সব বয়সের মানুষ। স্থানীয়রা আরও জানায়, অতিরিক্ত ট্রাক চলাচলের কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর গোল চত্বর ও রেলস্টেশন থেকে ভূঞাপুর যাওয়ার গোবিন্দাসী টি-রোড পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। বালু উত্তোলনের পয়েন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে- গোবিন্দাসীতে ২টি, কষ্টাপড়ায় ৩টি, জিগাতলায় ১টি, চিতুলিয়া পাড়ায় ৯টি, মাটিকাটায় ৪টি, সিরাজকান্দিতে ৫টি, নেংরা বাজার এলাকায় ২টি এবং পাথাইলকান্দি ও সারপলাশিয়া এলাকায় ৩টি। এই পয়েন্টগুলো থেকে শত শত ট্রাকে বালু লোড দেয়ার সময় দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় সড়কের বাম পাশে। আবার লোড করে যাওয়ার পথে ডান পাশে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এর সঙ্গে যাত্রীবাহী সিএনজি ও অটোরিক্সা-অটোভ্যান রয়েছেই। এতে চরম জনদুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। বালুবাহী ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের কারণে যাত্রীরা সঠিক সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে পারে না। মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলে যাওয়ার জন্য সড়কে পা দিলেই বালুবাহী ট্রাকের আসা-যাওয়ায় ধুলাবালিতে চোখ বন্ধ করে পথ চলতে হয়। আবার কখনো ট্রাকের দীর্ঘ লাইন থাকায় ঠিকমতো রাস্তাও পার হওয়া যায় না। মাঝেমাঝে স্কুলেও নিয়মিত উপস্থিত হতে পারে না অনেকে। গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া যমুনা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর যমুনা থেকে বিশেষ করে গোবিন্দাসী পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি যানজটের কবলে পড়তে হয়। বাইসাইকেল ও সিএনজি অথবা অটোরিক্সা-অটোভ্যানে যাতায়াত করতে যে সময় লাগতো অতিরিক্ত বালুবাহী ট্রাকের কারণে এখন তার চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগে স্কুলে পৌঁছাতে। সিএনজিচালিত অটোরিক্সা শ্রমিকরা জানান, বালুবাহী অতিরিক্ত ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের কারণে এ সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, সে জন্য বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। শুধু শিক্ষার্থী, যাত্রী, যাত্রী পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগই শেষ নয়। অভিযোগ রয়েছে পথচারীর, রাস্তার দু’পাশে থাকা নদীভাঙা মানুষদের এবং এলাকাবাসীর। তারা উপজেলা প্রশাসন, গোবিন্দাসী এবং নিকরাইল ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাননি।
×