ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জার্মান আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে খালেদার শাস্তি হবেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে খালেদার শাস্তি হবেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিডিনিউজ ॥ খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে পারবে না বলে বিএনপির হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হবেই। মিউনিখে ম্যারিয়ট হোটেলে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে জার্মান আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় তিনি বলেন, ‘যদি সত্যি কোর্টের কাছে এভিডেন্স থাকে চুরি করেছে, তাহলে শাস্তি হবে। সেজন্য তারা ইলেকশনই হতে দেবে না। একটা চোর এতিমের টাকা যে চুরি করে খায় তাকে রক্ষার জন্য ইলেকশন হতে দেবে না। কতো আবদারের কথা, কতো আহ্লাদের কথা! এতো আহ্লাদ যখন, তখন গরিব মানুষের টাকা কয়টা দিয়ে দিলেই হতো। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির দুই মামলা এখন বিচারের শেষ পর্যায়ে। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের টাকা আত্মাসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলা দুটি চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার কিংবা জেলে পাঠানোর কোন ভাবনা সরকারের নেই। আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সে কারাগারে যাবে কিনা, সে মাফ পাবে কিনা সেটা আদালত বলতে পারবে। সময় ও স্রোত যেমন কারো জন্য অপেক্ষা করে না, তেমনি বাংলাদেশের সংবিধান ও নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের চেয়ারপার্সনকে বাদ দিয়ে কোন নির্বাচন ‘হতে পারবে না’। ‘সংবিধানের দোহাই দিয়ে একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করার কোন অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘চুরি করে তো শত শত কোটি টাকা বানিয়েছে। ‘চুরির ওই অর্থ’ তার ছেলে তারেক রহমান ও মোসাদ্দেক আলী ফালুর কাছে গচ্ছিত আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইউনূসের জন্য থ্রেট করত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ॥ পদ্মা সেতু ‘ষড়যন্ত্রে’ মুহাম্মদ ইউনূস নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধের হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাঁর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কেও ‘ভয় দেখানো’ হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ ছাড়াও ‘অসুবিধা হবে’। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকার এ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে সব সময় থ্রেট করত- ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ হয়ে যাবে। ‘এ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি রবাট ব্লেক এলে ওই একই কথা। হিলারি ক্লিনটন আমাকে ফোন করল। সেখানেও একই কথা। এমনকি আমার ছেলে জয়কে তিনবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে নিয়ে গেল। ওকে বলল, তোমাদের অসুবিধা হবে। হিলারি এটা সহজভাবে নেবেন না। তোমার মাকে বোঝাও।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা লোক নোবেল প্রাইজ পেল। এতো সম্মান পাবার পরও একটা ব্যাংকের এমডি থাকার জন্য এত লালায়িত কেন?’ ব্যাংক আইনে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে না রাখার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উনার (ইউনূস) বয়স ৭০। এমডির পদও ছাড়বেন না। এজন্য লবিংও করে বেড়াত। সঙ্গে এক সম্পাদক জুটল।’ সরকার ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ‘একেবারে সরাতে চায়নি’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা উপদেষ্টার পদ দিতে চেয়েছিলাম। ড. কামাল তাকে বুদ্ধি দিল মামলা করতে। এই মামলায় হেরে যত রাগ পড়ল আমার ওপর, আর পদ্মা সেতুর ওপর। কানাডার আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে হাজার শোকর যে মানুষগুলোর ওপর দিয়ে জুলুম গেছে, তারা তো আর ফিরে পাবে না। সে মানুষগুলোর যন্ত্রণা আমরা তো জানি। আমার ছেলে-মেয়েরা, আমার বোন ভোগ করেছে। আমাদের মন্ত্রী, আমাদের উপদেষ্টা মশিউর রহমান সাহেব, সচিবকে তো খামোখা জেলে রাখল।
×