ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঢেঁকি সেচকল

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঢেঁকি সেচকল

সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম ॥ কালের বিবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকিকলের মাধ্যমে আবাদি জমিতে সেচ প্রদান। আধুনিক প্রযুক্তি যন্ত্রের মাধ্যমে সেচ প্রদানে আজ বিলুপ্তির পথে ঢেঁকিকল। আগে কৃষকরা ঢেঁকিকল দ্বারা আবাদি জমিতে সেচ প্রদান করতেন। কালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়ার পথে ঢেঁকি সেচকল। তবে আমাদের দেশের গ্রামীণ জনপদের এই মীরসরাই উপজেলার তেপান্তরে এখনও দেখা যাচ্ছে বিরল এই ঢেঁকি সেচকল। উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামে সদ্য রোপণ করা ইরি ধানের ক্ষেতে ঢেঁকিকল দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছিল কৃষক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ১৮ গ-া জমিতে চাষ করেছি। এখানে ছরার পানি জমে রয়েছে একটি ছোট্ট লেকে। লেকের পাড়ে খেজুর গাছের খোল দিয়ে তৈরি করা বাঁশের খুঁটি, হাতল ও পারাপারের সাঁকোসহ সহজতর এই ঢেঁকিকলে তিনি বেশ অনায়াসেই সেচ দিচ্ছেন। শুধু কৃষক তাজুল নয় আশপাশের কৃষক সাহাব উদ্দিন, বিজন পালসহ কয়েকজন কৃষক প্রায় ৭ একর জমিতে সকল কৃষক একই লেক থেকে একই সেচকল দিয়েই চাষ করছে ইরি ধান। এছাড়া সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হিঙ্গুলী, দুর্গাপুর, ওয়াহেদপুর, আমবাড়িয়া, করেরহাট, খৈয়াছরা এলাকায় এমন ঢেঁকিকল দ্বারা সেচে সফলতা সম্ভব। কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, অনেক গ্রামেই দুজন মিলে ছরা থেকে সেচ দিয়ে পানি তুলছি সবজি ইরি ক্ষেতে। কেউ বা পাম্প বসিয়েও সেচ দিচ্ছে। কিন্তু ঢেঁকিকল একটি প্রাকৃতিক নির্ঝঞ্ঝাট সেচ যন্ত্র। গ্রামীণ এই সেচকল গ্রামবাংলার আবহমান ঐতিহ্য। এর প্রচলন ধরে রাখলে নানাভাবে উপকৃত হওয়া সম্ভব কৃষকদের। মীরসরাই উপজেলার কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, আমরাও কৃষকদের এখন নতুনভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি এসব প্রাকৃতিক যন্ত্র ব্যবহারে। এতে করে ডিজেল ক্রয় করে সেচ বর্জন হলে প্রাকৃতিক কোমলতা ও বিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে।
×