ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খেয়ামাঝির দাপটে জিম্মি কয়েক হাজার চরবাসী

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খেয়ামাঝির দাপটে জিম্মি কয়েক হাজার চরবাসী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ॥ তুলাতলি থেকে মাঝের চরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম খেয়া নৌকার মাঝিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ। খেয়ার মাঝিদের ইচ্ছার ওপর চরে যাতায়াত নির্ভর করে। মাঝি ইচ্ছা করলে খেয়া চলে। ইচ্ছা না করলে চলে না। জরুরী প্রয়োজনেও লোকজন চরে যাতায়াত করতে পারে। অভিযোগ রয়েছে খেয়া যার নামে ইজারা নেয়া হয়েছে সে খেয়া পারাপার না করে ছাত্রদলের কর্মীদের সাব ইজারা দিয়েছে। তারা এক এক দিন এক এক জন পালাক্রমে খেয়া পারাপার করছে। তাই অতিরিক্ত লাভের জন্য যাত্রীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করার ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতলি ঘাট থেকে সরকারী ইজারা নিয়ে ছগির মাঝি খেয়া নৌকা চালায়। দুটি ট্রলার যাতায়াত করে। যাত্রী প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা আদায় করা হয়। ওই ট্রলারে যাত্রীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মালামাল এমন কি গরু-ছাগলও আনা নেয়া করে। অনেক সময় বেশি মালামাল নিয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দেয়। কোন কোন সময় যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে কেবলমাত্র মালামাল আনানেয়া করা হয়। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়। শুধু তাই নয় খেয়া মাঝির দৌরাত্ম্যের কারণে কেউ ইচ্ছা করলে অন্য কোন ট্রলার নিয়ে চরে যাতায়াত করতে পারে না। এতে করে জরুরী প্রয়োজনে যাত্রীরা ঘাটে আটকা পড়ে। খেয়াঘাটে আটকে পড়া চরফ্যাশনগামী যাত্রী ছাদেক এবং আব্দুল মালেক দফাদার অভিযোগ করেন, খেয়া মাঝি ও তার লোকজনের কাছে চরের কয়েক হাজার মানুষ জিম্মি। এদের ইচ্ছামতো খেয়া চলে। ভাড়া আদায়েও কোন নিয়ম নীতি মানা হচ্ছে না। মাত্র ১০ মিনিটের খেয়া পারাপারে ১৫ থেকে ২০ টাকা আদায় করে। বিষয়টি কেউ দেখছে না। হামলা মামলার ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করতে পারে না। এ কারণে অনেক সময় গুরুতর অসুস্থ কাউকে চর থেকে মূল ভূখ-ে আনতে বিলম্ব হয়। আবার অতিরিক্ত টাকাও খরচ হয়। তাছাড়া খেয়া চলাচলের কোন নিয়ম নীতি না থাকায় এবং কর্তৃপক্ষ কোন তদারকি না করায় ইচ্ছামতো ভাড়া আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। বুধবার অর্ধশত যাত্রী তুলাতলি আসার জন্য মাঝের চরের খেয়াঘাটে অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়। কারণ ওই সময় চর থেকে বস্তা বস্তা সবজি আনা হচ্ছিল। তখন যাত্রীরা অন্য ট্রলার নিয়ে আসতে চাইলে পারেনি। কারণ খেয়া মাঝির লোকজনের ভয়ে অন্যান্য ট্রলারের মাঝি যাত্রী পারাপার করতে পারে না। এছাড়া সবজি মালিকরা অন্য ট্রলার ভাড়া করে মালামাল আনতে চাইলে খেয়ার মাঝিকে ট্রলার প্রতি চার থেকে ৬শ’ টাকা করে দিতে বাধ্য করে। বিষয়টি চরম অমানবিক এবং দ্রুত এর সমাধানের দাবি জানিয়েছেন চরবাসী।
×